নিজস্ব প্রতিবেদক

২০ ডিসেম্বর, ২০২০ ২০:৪৭

ঢাকায় গ্রেপ্তার সিসিকের কাউন্সিলর তাজ

বার কাউন্সিলের লিখিত পরীক্ষা চলাকালে অরাজকতার অভিযোগ

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের লিখিত পরীক্ষা চলাকালে অরাজকতার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) কাউন্সিলর তারেক উদ্দিন তাজকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় দায়েরকৃত একটি মামলায় তাজকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।

তারেক উদ্দিন তাজকে গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করে ঢাকা মহানগর পুলিশের নিউ মার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম কাইয়ুম সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোরকে বলেন, পরীক্ষা চলাকালে অরাজকতার দায়ে ঘটনাস্থল থেকেই তাজকে আটক করা হয়। পরে রোববার মামলা দায়েরের পর তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

ওসি বলেন, এই ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ৪০ জনের নাম উল্লেখ করে ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় ৩৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে প্রথমেই রয়েছে তাজের নাম।

তারেক উদ্দিন তাজকে রিমান্ডে নেওয়া হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকে এই মামলায় ৫ জনকে রিমান্ডে নিয়েছি। পর্যায়ক্রমে সব আসামিদের রিমান্ডে নেওয়া হবে।

বিজ্ঞাপন



তারেক উদ্দিন তাজ সিলেট সিটি করপোরেশনের ১০ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। গত নির্বাচনে তিনি প্রথমবারের মতো নির্বাচিত হন। এরপর থেকেই নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন তাজ। গত ১১ ডিসেম্বর সিলেটের জৈন্তাপুরের একটি রেস্টুরেন্টে পাখির মাংস দিয়ে ভূরিভোজ করে সর্বশেষ বিতর্কে জড়ান তিনি। ভূরিভোজের সেই ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

তারেক উদ্দিন তাজ বার কাউন্সিলের পরীক্ষার একজন পরীক্ষার্থী ছিলেন।

সিটি কাউন্সিলর তারেক উদ্দিন তাজ সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির পরিচালক (মিডিয়া, প্রশাসন ও জনসংযোগ) হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই আইন বিষয়ে ডিগ্রি লাভ করেন।

এ বিষয়ে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. শহীদ উল্লাহ তালুকদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোরকে বলেন, তারেক উদ্দিন তাজ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। এখন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত আছে। তবে উনি (তাজ) গ্রেপ্তার হওয়ার বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। এখনই প্রথম এটি শোনলাম। আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবো। তার আগে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।

শনিবার বার কাউন্সিলের পরীক্ষা চলাকালে একটি পরীক্ষা কেন্দ্রে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন কিছু সংখ্যক পরীক্ষার্থী।  প্রশ্নপত্র ‘অস্বাভাবিক’ ও ‘কঠিন’ হয়েছে এমন অজুহাতে শনিবার রাজধানী ঢাকার কয়েকটি কেন্দ্রে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় অনেক পরীক্ষার্থীর খাতা ছিঁড়ে ফেলা হয়। সেইসঙ্গে শিক্ষক ও পরীক্ষা পরিদর্শকদের লাঞ্ছিতের অভিযোগও উঠেছে।

বিজ্ঞাপন



রাজধানীর মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ছিলেন সিলেটের দেবব্রত ঘোষ চৌধুরী। শনিবারের ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা পরীক্ষা দিচ্ছিলাম। হঠাৎ কেন্দ্রের বাইরে হট্টগোল শুনতে পাই। তখন পরীক্ষা পরিদর্শকরা আমাদের আশ্বস্ত করেন। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে হট্টগোলকারীরা কেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করে আমাদের উত্তরপত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

তিনি বলেন, দীর্ঘ প্রস্তুতি নিয়ে করোনার ঝুঁকি নিয়ে ঢাকায় পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু কিছু উশৃঙ্খল যুবকের কারণে আমিসহ অনেকের ভবিষ্যতই এখন হুমকির মুখে পড়েছে।

জানা যায়, মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মোহাম্মদপুর মহিলা কলেজ, মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ ও সূত্রাপুর থানাধীন মহানগর মহিলা কলেজ কেন্দ্রে কিছু পরীক্ষার্থী সকালে পরীক্ষা দিতে অনীহা প্রকাশ করে। পরে তারা পরীক্ষা দিতে আগ্রহী পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে বাধা দেয় এবং কেন্দ্রের বাইরে এসে বিক্ষোভ করে।

উল্লেখ্য, অ্যাডভোকেটশিপ প্রার্থীদের এই লিখিত পরীক্ষা গত ২৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও, করোনা পরিস্থিতির কারণে তা পিছিয়ে শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত লিখিত পরীক্ষার সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছিল।

এ বছর রাজধানীর নয়টা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১৩ হাজার প্রার্থীর জন্য এই লিখিত পরীক্ষার আয়োজন করে বার কাউন্সিল। এরআগে প্রার্থীদের একাংশ লিখিত পরীক্ষা ছাড়াই মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে অ্যাডভোকেটশিপ এনরোলমেন্টের দাবিতে আন্দোলন করছিল।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত