নিজস্ব প্রতিবেদক

০৪ এপ্রিল, ২০২১ ০১:৪৯

লকডাউনের নির্দেশনা পায়নি সিলেটের প্রশাসন

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সোমবার থেকে দেশে এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করতে যাচ্ছে সরকার। শনিবার দুই মন্ত্রী এমন গণমাধ্যমে এমন তথ্য জানিয়েছেন। তবে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা পায়নি সিলেটের প্রশাসন।

ফলে তাড়াহুড়ো করে লকডাউন বাস্তবায়ন কতোটা সম্ভব হবে এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এছাড়া হঠাৎ এমন ঘোষণা জনভোগান্তি বাড়ারও শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

তবে সিলেটের প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারি নির্দেশনা পেলে লকডাউন কার্যকরে তারা প্রস্তুত রয়েছেন।

শনিবার সন্ধ্যায় সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, লকডাউনের খবর টিভিতে শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা পাইনি। নির্দেশনা পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 
একদিনের প্রস্তুতিতে লকডাউন কার্যকর সম্ভব হবে কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারী নির্দেশনা না পেলে এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারবো না। কারণ লকডাউনে কি কি বন্ধ থাকবে, কি কি খোলা থাকবে এসব ব্যাপারে এখনও কিছু জানি না। সরকারি নির্দেশনা পাওয়ার পর বুঝতে পারবো নির্দেশনাগুলো কিভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।

দেশে কয়েকদিন ধরেই বাড়ছে করোনার সংক্রমন। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। এই অবস্থাকে করোনার দ্বিতীয় ডেউ বলেও আখ্যায়িত করছেন সংশ্লিস্টদের কেউ কেউ। সংক্রমণ বাড়ার ফলে ফের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হবে কী না এনিয়ে কয়েকদিন ধরেই আলোচনা চলছিল। ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন শেষে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তের কথাও জানিয়েছিলেন সংশ্লিস্টরা।

সুবর্ণজয়ন্তীর আয়োজন শেষে গত ২৯ মার্চ জরুরি সেবাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া সব অফিস ও কারখানা অর্ধেক জনবল দ্বারা পরিচালনা, উপাসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানা, জনসমাগম সীমিত করা, গণপরিবহনে ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহনসহ ১৮ দফা নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। মাঠ প্রশাসন যখন এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে ব্যস্ত তখন শনিবার সকালে হঠাৎ করেই লকডাউনের তথ্য জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। নিজ বাসভবন থেকে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, সোমবার থেকে সাতদিনের জন্য লকডাউন ঘোষণা করা হচ্ছে। এরপর দুপুরে জনপ্রশাসন প্রাতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনও একই তথ্য জানান। শনিবার সন্ধ্যার দিকে লকডাউনের প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে বলেও জানান তিনি। তবে রাত পর্যন্ত এই প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গির হোসেন বলেন, সরকারের চাইলে সবই সম্ভব। লকডাউন বাস্তবায়নও অসম্ভব নয়। তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে ১৮ দফা নির্দেশনা জারির পর থেকেই আমরা ব্যবসায়ী, পরিবহন মালিক-শ্রমিকসহ বিভিন্ন গোষ্টির সাথে বসেছি। তারা আমাদের সবধরণের সহায়তার আশ^াস দিয়েছেন। ফলে লকডাউনের প্রাথমিক কাজ কিছুটা আমরা ইতোমধ্যে সেরে রেখেছি। সরকারি নির্দেশনা পেলে দ্রুত সংশ্লিস্ট সবার কাছে তা পৌছে দেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসক বলেন, আমরা সরকারের সব নির্দেশনা মানতে প্রস্তুত রয়েছি। তবে এক্ষেত্রে জনগনকেও সহায়তা করতে হবে। জনগন সহযোগিতা না করলে কোনো কাজেই শতভাগ সফল হওয়া যাবে না।  

এদিকে, লকডাউন হচ্ছে এমন খবর জানার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে বাড়তি তৎপরতা দেখা দিয়েছে। শনিবার দুপুরের পর থেকে সিলেটের বাজারগুলোতে ভিড় দেখা গেছে। লকডাউনের সময়ের জন্য নিত্যপণ্য মজুদ করার প্রবণতা দেখা গেছে বাজারে আসা ক্রেতাদের মধ্যে।

আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা না পেলেও গণমাধ্যমের খবর দেখে বিভাগের বিভিন্ন জেলায় ইতোমধ্যে লকডাউন বাস্তবায়নের প্রস্তুতি শুরু করেছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত