মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

০৯ এপ্রিল, ২০২১ ২১:০৯

সংক্রমণের শীর্ষে থাকলেও মৌলভীবাজারে নেই করোনা পরীক্ষার ল্যাব

দ্বিতীয় দফায় দেশে করোনা সংক্রমণের উচ্চ হারের জন্য যেসব জেলাকে শনাক্ত করা হয়েছে সেই ২৯টি জেলার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে মৌলভীবাজার। প্রবাসী অধ্যুষিত এ জেলায় করোনা সংক্রমণের হার চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে ৫ শতাংশ থাকলেও বর্তমানে তা ২৫ থেকে ৩০ শতাংশে ওঠানামা করছে।

সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলায় বেড়েছে করোনা পরীক্ষার হার। করোনার সংক্রমণের শীর্ষে থাকলেও জেলায় নেই করোনা পরীক্ষার কোনো ল্যাবরেটরি। বাধ্য হয়ে নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকা, সিলেট পাঠাতে হয়। সেখান থেকে নমুনা পরীক্ষার ফল আসতে সাধারণত পাঁচ থেকে সাত দিন লাগে। দূরে ল্যাবরেটরিতে নমুনা পাঠানোর কারণে এবং জেলায় ল্যাব না থাকায় বিভিন্ন সময় নষ্ট হয়েছে ৬২৫টি নমুনা।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ সূত্রে জানা যায়, করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ১৩ হাজার ৬২৮টি নমুনা পরীক্ষার জন্য ঢাকা এবং সিলেটের ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে পজিটিভ এসেছে ২ হাজার ১১০টি এবং নেগেটিভ এসেছে ১০ হাজার ৬৬৫টি নমুনা পরীক্ষার ফল। ফলোআপ টেস্টেও ১৩০ নমুনার ফল পজিটিভ এসেছে। নষ্ট হয়েছে ৬২৫টি নমুনা। এখনো ৯৮টি নমুনার ফল আসেনি। জেলায় বর্তমানে করোনার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৬০। তার মধ্যে তিনজন হাসপাতালে, বাকিরা নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন। এ পর্যন্ত মারা গেছেন ২৪ জন।

ব্যবসায়ী জাহেদ চৌধুরী জানান, পর্যটনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা হওয়া সত্ত্বেও মৌলভীবাজারে টেস্টের ব্যবস্থা না করায় করোনা পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ১৮ জুন মৌলভীবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পিসিআর ল্যাব স্থাপনের জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী বরাবর ডিও লেটার দিয়েছিলেন মৌলভীবাজার-১ আসনের সাংসদ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাবউদ্দিন। এর আগেই তখনকার সিভিল সার্জন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ল্যাব স্থাপনের জন্য আবেদন করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে নমুনা সংগ্রহের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন বলছেন, নমুনা সংগ্রহ করে সিলেট বা ঢাকা পাঠাতে হয়। ফলে অনেক সময় সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নমুনা রাস্তায়ই নষ্ট হয়ে যায়। আর নমুনা নষ্ট হলে পরীক্ষার ফল ভুল আসার সম্ভাবনা থাকে।

সিভিল সার্জন চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ জানান, আইইডিসিআরের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, (২৭ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল) দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হারের দিক থেকে শীর্ষে আছে মৌলভীবাজার।

তিনি বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে হাসপাতালে যে জিন এক্সপার্ট মেশিন আছে সেটা ব্যবহার করে আমরা এখানে করোনা টেস্টের ব্যবস্থা করব। ইতিমধ্যে এ সংক্রান্ত অফিশিয়াল কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। প্রশিক্ষণের কাজও দ্রুত শেষ হবে। জেলার একমাত্র জুড়ী ছাড়া প্রতিটি উপজেলা হাসপাতালেও এই জিন এক্সপার্ট মেশিন আছে। এটা দিয়ে সাধারণত যক্ষার টেস্ট করা হতো। তবে পিসিআর ল্যাব চালুর কোনো প্রক্রিয়া এখনো শুরু হয়নি। মন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। আমি পিসিআর ল্যাবের দাবি জানিয়েছি।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত