নিজস্ব প্রতিবেদক

০৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১৯:৪৯

একসাথে রাজপথে মুক্তাদির-আরিফ

তাঁরা দুজনই বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা, দুজনই সিলেট-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন, দুজনের নামে সিলেটে বিএনপির আলাদা বলয় গড়ে ওঠেছে- তবে শুক্রবার তাদের দুজনকে দেখা গেলো একসাথে রাজপথে।

ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর উপলক্ষ্যে জেলা ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত কর্মসূচীতে একসাথে অংশ নেন খন্দকার মুক্তাদির আহমদ ও আরিফুল হক চৌধুরী।

দুজনের মধ্যে খন্দকার মুক্তাদিরকে সিলেট-১ আসনে ও আরিফুল হক চৌধুরীকে সিলেট-৪ আসনে মনোনয়ন প্রদান করেছে বিএনপি। প্রত্যাশিত সিলেট-১ আসনে মনোনয়ন না পেয়ে আরিফ কিছুটা মনক্ষুন্ন থাকলে শুক্রবার বিএনপির কর্মসূচীতে মুক্তাদিরের সাথে আলাপকালে হাস্যোজ্জ্বলই ছিলেন সাবেক এই মেয়র। দুজনে হাত ধরাধরি করে নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছাও জানান এসময়।

শুক্রবার জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগে র‌্যালি বের করা হয়।

শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় নগরীর কোর্ট পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে র‌্যালিটি শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। র‌্যালিপূর্ব এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিলেট-১ (সিটি ও সদর) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেছেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও ৭ নভেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই দিনে সিপাহী-জনতার অভূত্থানের মাধ্যমে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা গ্রহণ করেন এবং দেশ গভীর রাজনৈতিক সংকট থেকে মুক্তি করে বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার করেন তিনি। তাঁর শাসনামলে গ্রামীণ উন্নয়ন, কৃষি, ও অন্যান্য খাতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার পথে পরিকল্পনা করে কাজ শুরু হয়। শহীদ জিয়ার নেতৃত্বে এই দেশ সর্বক্ষেত্রে স্বংয়ন সম্পন্নতা অর্জন করে।

তিনি বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দেশকে মুসলিম বিশ্ব, উন্নয়নশীল দেশ ও পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করেন। তাঁর সময়ে বাংলাদেশ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে নির্বাচিত হয় এবং ‘তলাবিহীন ঝুড়ির’ অপবাদ থেকে বেরিয়ে এসে আন্তর্জাতিকভাবে একটি আত্মনির্ভরশীল ও মর্যাদাপূর্ণ দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এদেশের মানুষকে পারি পারবে বলে জাগিয়ে তুলেছিলেন।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের আরেক উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ৭ নভেম্বরের চেতনা আমাদের আহ্বান জানায়, সকল জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, ন্যায়বিচার ও সুশাসনের ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।

র‌্যালি পূর্ব সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, আঙুল বাকা করার ভয় দেখানো হচ্ছে-আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আমরা সেই আঙুল ভেঙে দেব। অতীতেও এমন বহু ভয় দেখানো হয়েছিল, কিন্তু বিএনপি কখনও পিছু হটেনি, ভয় পায়নি। আগামী জাতীয় নির্বাচনে সিলেট জেলার ছয়টি আসনসহ বিভাগের ১৯টি আসনে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে বিজয়ের উপহার দেব, ইনশাআল্লাহ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিলেট-৩ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী এম. এ. মালিক বলেন, ৭ নভেম্বর একদলীয় স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র, জাতীয় ঐক্য ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ভিত্তি রচনা করেছিল। আজও সেই বিপ্লবের চেতনা আমাদের স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ ও জাতীয় ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের প্রেরণা জোগায়।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী বলেন, সিপাহী ও জনতার ঐক্য, দেশপ্রেম এবং শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শই বাংলাদেশের স্বাধীনতা, ঐক্য ও সমৃদ্ধির স্থায়ী ভিত্তি গড়ে দিয়েছে।

সমাবেশে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এডভোকেট আশিক উদ্দিন আশুক ও মহানগর বিএনপির সহসভাপতি ডা. নাজমুল ইসলাম। র‌্যালি ও সমাবেশে জেলা ও মহানগর বিএনপি ছাড়াও অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী অংশগ্রহণ করেন।

দিবসটি উপলক্ষে জেলা ও মহানগর বিএনপির আওতাধীন সকল থানা, ওয়ার্ড, উপজেলা ও পৌর ইউনিটেও পৃথকভাবে র‌্যালি, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। পাশাপাশি দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসমূহ নিজেদের উদ্যোগে নানা কর্মসূচি পালন করে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত