নিজস্ব প্রতিবেদক

১৫ মার্চ, ২০১৬ ০০:৪৪

আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও চালু হয়নি রাগীব আলীর বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা

রাগীব আলীর বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা চালু করতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ নির্দেশ দিলেও এখনও শুরু হয়নি এই মামলার কার্যক্রম। পুলিশ বলছে, আদালতের রায়ের কপি এখনও পায়নি তারা। রায়ের কপি পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও মন্তব্য পুলিশের।

এই মামলায় রাগীব আলী ও তাঁর পুত্রসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিলো।

জানা যায়, তারাপুর চা বাগান প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাগীব আলীর বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা দায়ের করা হয়। তৎকালীন সিলেট সদর ভূমি কমিশনার এসএম আব্দুল হাই কোতোয়ালী থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং-১১৭/০৫।

মামলায় উল্লেখ করা হয় রাগীব আলী তার নিজের স্বার্থে পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের নামে জাল আমমোক্তারনামা তৈরি করেছেন। তিনি তারাপুর চা বাগান আত্মসাৎ করার জন্য জাল অনুমতি পত্র এবং সন্দেহজনক

আমমোক্তারনামার বলে নিজের লোক দিয়ে আব্দুল হাই’র নামে বিক্রি রেজিস্ট্রেশন করে নিয়েছেন।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, বাগানের সেবায়েত পঙ্কজ কুমার গুপ্ত ৪২২.৯৬ একর জমি সাড়ে ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে বিক্রির চুক্তিতে আবদ্ধ হন। অথচ সেবায়েত ঐ দলিলে স্বাক্ষর করেননি। দেওয়ান মোস্তাক মজিদ ৪ জনকে দিয়ে একটি আমমোক্তারনামা তৈরি করেন। তারাপুর চা বাগান আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যেই নিজের লোকদের দিয়েই আমমোক্তারনামার বলে আব্দুল হাই বিক্রি রেজিস্ট্রেশন করিয়ে নেন।

মামলায় রাগীব আলী ছাড়াও তার স্ত্রী প্রয়াত রাবেয়া খাতুন চৌধুরী, পুত্র আব্দুল হাই, কন্যা রেজিনা কাদির, জামাতা আব্দুল কাদির, ঘনিষ্ঠ আত্মীয় দেওয়ান আব্দুল মজিদ ও সেবায়েত পঙ্কজ কুমার গুপ্তকে আসামি করা হয়।

পরবর্তীতে হাইকোর্টের নির্দেশে এই প্রতারণা মামলা স্থগিত করা হয়। তবে গত ১৯ জানুয়ারি আপিল বিভাগের চার বিচারক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিক এর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ প্রদত্ত রায়ে এই প্রতারণা মামলা পুনরায় চালুর নির্দেশ দেন।

এই রায়ে রাগীব আলীর দখল থেকে তারাপুর চা বাগান ৬ মাসের মধ্যে উদ্ধারসহ ১৭ টি নির্দেশনা দেওয়া হয়।

মামলা চালুর নির্দেশনার ব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (গণমাধ্যম) রহমতউল্লাহ বলেন, আদালতের রায়ের কপি এখনও আমরা পাইনি। যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আমাদের কাছে আদালতের নির্দেশনা আসলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে সিলেট সদর উপজেলার বর্তমান সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ সুহেল মাহমুদ সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আমাদের অফিস থেকে মামলা দায়ের করা হয়েছিলো। সেই মামলায় বিবাদিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি হয়েছিলো। এখন আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী এই মামলার কার্যক্রম শুরুর দায়িত্ব পুলিশের।

আর সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদউল্লাহ শহিদুল ইসলাম শাহিন জানিয়েছেন, এই মামলাটি আদালতে প্রমাণ করা সক্ষম হলে রাগীব আলীসহ অন্যান্য আসামীদের ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত