সিলেটটুডে ডেস্ক

২৪ অক্টোবর, ২০১৫ ২৩:৫৬

রাতারগুল ও জাফলং হবে ‘রেস্ট্রিকটেড ট্যুরিজম’

দেশীয় পর্যটকদের অতিরিক্ত চাপে পরিবেশ রক্ষায় সিলেটের রাতারগুল-জাফলং এবং কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ও সেন্টমার্টিনসহ কয়েকটি প্রাকৃতিক পর্যটন কেন্দ্রে ‘রেস্ট্রিকটেড ট্যুরিজম’ শুরু করার কথা বলেছেন পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।

শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘ভিজিট বাংলাদেশ-২০১৬’ প্রচারণা নিয়ে সাংবাদিক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “কোনো কোনো পর্যটন কেন্দ্রে রেস্ট্রিকটেড ট্যুরিজম শুরু করতে হবে, না হলে পরিবেশ ক্ষুণ্ন হয়ে এসব পর্যটন কেন্দ্র হারিয়ে যাবে।”

পর্যটকদের আনাগোনায় পরিবেশের ক্ষতি থেকে বিভিন্ন প্রাকৃতিক এলাকা রক্ষায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পর্যটন এলাকায় ‘রেস্ট্রিকটেড ট্যুরিজম’ ব্যবস্থা চালু রয়েছে।

‘রেস্ট্রিকটেড ট্যুরিজম’ ব্যবস্থায় জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি এড়াতে সাধারণত পর্যটন এলাকার সব স্থানে পর্যটকদের যেতে না দিয়ে নির্দিষ্ট পথ ঠিক করে দেওয়া হয়। ওই পর্যটন এলাকায় একসঙ্গে জনসমাগম ও যানবাহন চলাচলের সংখ্যায়ও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়।

পর্যটন সাংবাদিকদের সংগঠন এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরাম (এটিজেএফবি) ও পর্যটনের ক্রাউডসোর্স ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম অফরোড বাংলাদেশ যৌথভাবে ওই কর্মশালার আয়োজন করে।

বাংলাদেশে প্রাকৃতিক সম্পদের অভাব না থাকলেও সেগুলোকে ঠিক মতো তুলে ধরতে না পারার কারণেই এদেশে পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন থেমে রয়েছে বলে কর্মশালার উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন পর্যটনমন্ত্রী মেনন।

তিনি বলেন, “আমাদের দেশের ঐতিহ্যগুলো আমরা সঠিক ভাবে তুলে ধরতে পারিনি। আমাদের কক্সবাজার, সুন্দরবন, প্রাচীন সভ্যতা কোনো কিছুকেই সেভাবে তুলে ধরতে পারিনি।”

এখনও বাংলাদেশকে পর্যটকদের কাছে ‘সিঙ্গেল ডেস্টিনেশন’ হিসেবে উপস্থাপন করা যায়নি মন্তব্য করে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, “এতদিন যা করতে পারিনি, এখন তাই করার চেষ্টা হবে। সাহস করে হাত দিয়েছি, হাত পুড়বে কি না জানি না।”

আগামী অক্টোবরে ঢাকায় হতে যাওয়া ‘আন্তর্জাতিক বুড্ডিস্ট সম্মেলনে’ দেশের পর্যটন এলাকাগুলো আন্তর্জাতিক মহলে তুলে ধরা হবে বলে জানান মন্ত্রী।

২০১৬ সালের পর্যটন বর্ষকে সামনে রেখে আগামী ২৭ ও ২৮ অক্টোবর দেশে প্রথমবারের মতো বুড্ডিস্ট সার্কিট কনফারেন্স আয়োজন করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। জাতিসংঘের বিশ্ব পর্যটন সংস্থার (ইউএনডব্লিউটিও) সহায়তায় আয়োজিত এই সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের পর্যটনমন্ত্রী ও একাডেমিকদের আসার কথা রয়েছে।

সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বুড্ডিস্ট হেরিটেজগুলো রক্ষণাবেক্ষণ এবং দেশের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলের হেরিটেজগুলোকে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরার কথা আগেই জানিয়েছিলেন পর্যটনমন্ত্রী।

মন্ত্রী মেনন জানান, পর্যটন বর্ষকে সামনে রেখে বান্দরবানে অ্যাডভেঞ্জার ট্যুরিজম এবং নদী ও সাগরে রিভার ট্যুরিজমের বিষয়েও সরকার চেষ্টা করছে।

ভারতের সঙ্গে আন্তঃদেশীয় নদী যোগাযোগ বিষয়ে একটি প্রটোকল সই হওয়ার কথা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এটি হলে নদী ছাড়াও সাগরে চলাচলকারী জাহাজ দিয়ে আন্তঃদেশীয় পর্যটন বিকাশের সম্ভাবনা তৈরি হবে।”

পর্যটন বিকাশে সীমাবদ্ধতার কথাও তুলে ধরেন বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টির নেতা মেনন।

পর্যটন এলাকার প্রচারে তহবিল সংকটের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “অর্থমন্ত্রী বা পরিকল্পনামন্ত্রীর সঙ্গে পেরে উঠছি না। যখন প্রোমোশনের (প্রচারণা) কথা ওঠে, তখন তারা বলে ওঠেন-ক্যাম্পেইনিংয়েই এত টাকা খরচ করবেন!”

কর্মশালায় বেঙ্গল ট্যুরসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন এবং অফরোড বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী ফেরদৌস মুত্তাকিন প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

উদ্ধোধনীতে পর্যটন সচিব খোরশেদ আলম চৌধুরী, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী আকতারুজ্জামান খান কবীর, টোয়াব পরিচালক তৌফিক আহমেদ, এটিজেএফবি সভাপতি নাদিরা কিরণ ও সাধারন সম্পাদক তানজিম আনোয়ারসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত