ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ

০১ আগস্ট, ২০২১ ০৫:০৬

না পারছি বাঁচতে, না পারছি আহার জোগাতে

ছবি: সংগৃহীত

নীতিনির্ধারকদের কে বুঝাবে- ‘মাথায় ঘোমটা কিন্তু পশ্চাৎদেশ ন্যাঙটা’ মার্কা এমন লকডাউন দিয়ে না হচ্ছে জীবন রক্ষা, না হচ্ছে জীবিকা রক্ষা। চলমান ‘কঠোর’ লকডাউনের মাঝেই রোববার থেকে গার্মেন্টসসহ শিল্পকারখানা খুলে দেওয়ার ঘোষণা এসেছে শনিবার। ফলে আবারো শুরু হয়েছে ঢাকামুখি জনস্রোত!

হঠাতই শিল্পকারখানা খুলে দেওয়া হলো; ফলে শিল্পকারখানার শ্রমিক কর্মীরা গাদাগাদি করে বিস্তর ভোগান্তি মাথায় নিয়ে আবার ঢাকার পথে ছুটলো! এভাবে লকডাউন নিয়ে এমন বিরামহীন তামাশা করে করে এই মুহূর্তে আমরা এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছেছি যেখানে 'জীবন ও জীবিকা' দুটোই একসাথে রক্ষা করা প্রায় অসম্ভব পরাবাস্তবতা! সোনার পাথরবাটির মতো অবস্থা। এখন 'জীবন ও জীবিকা' দুটোরই টার্গেট নিয়ে আমরা আর জয়ী হতে পারবো না এটা প্রায় নিশ্চিত।

এই মুহূর্তে আমাদেরকে যেকোনো একটির টার্গেট নিতে হবে। হয় জীবন, নয়তো জীবিকা। জীবনের টার্গেটটা নিতে যেহেতু আমরা আগ্রহী না সেহেতু আসুন জীবিকার টার্গেট নিই। লকডাউন-লকডাউন নামের এই চোর-পুলিশ খেলা বাদ দিন। সবকিছু খুলে দিন, সবকিছু মানে একেবারে সবকিছু। জীবিকা রক্ষা করতে গিয়ে যারা বাঁচবে শুধু তাদের নিয়েই দেশ চলুক, অর্থনীতি এগিয়ে যাক। আর যারা মরার তারা মরে ঝেটিয়ে যাক।

গতবছর থেকে এ পর্যন্ত প্রতিবারই লকডাউনের আগে হম্বিতম্বি আওয়াজ তুলে একেবারে করোনা ঝেটিয়েই বিদায় করবো এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু প্রতিবারই লকডাউন শুরুর পর আমরা দেখেছি পুরোটাই ভিন্নচিত্র। একেবারে যেন 'বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো!' কাগজেকলমে কঠোর, কঠিনতম, আল্লার কসম লকডাউন কিন্তু বাস্তবে শহরের রাস্তায় রাস্তায় যানজট। ফলে না হয়েছে লকডাউন, না হয়েছে অপেনআপ!

যদি আমরা প্রথম অল্পকিছুদিন শুধু জীবনের টার্গেট নিয়ে নামতাম তাহলে চিত্রটা এমন নাও হতে পারতো, তখন হয়তো জীবন ও জীবিকা দু'কুলই রক্ষা করা যেতো। কিন্তু তা না করে আমরা প্রথম থেকেই বারবার 'জীবন ও জীবিকা' দুটোকেই একসাথে ধরতে চেয়েছি যে কারণে দু'টোই অধরা থেকে গেছে, যে কারণে আজ এমন লেজেগোবরে অবস্থা হয়েছে। এখন আমরা না পারছি জীবন বাঁচাতে, না পারছি আহার জোগাতে, না পারছি অর্থনীতির গতি ধরে রাখতে!

আপনার মন্তব্য

আলোচিত