সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক

১৪ জুলাই, ২০১৬ ১২:০৫

‘কিভাবে বুঝবেন আপনার সন্তান জঙ্গিবাদে ঝুঁকছে’

সাম্প্রতিক সময় দেশে জঙ্গিবাদের বিস্তারে হুট করে বদলে যাওয়া তরুণদের সম্পৃক্ততার বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে আসার প্রেক্ষিতে এর পেছনে কিছু কারণ চিহ্নিত করেছেন হাসান মাহমুদ টিপু।

ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে টিপু লিখেন-

কিভাবে বুঝবেন আপনার সন্তান, আপনার ভাই, আপনার বন্ধু একজন জঙ্গিতে পরিণত হচ্ছে!

১। সে যদি নিজের মা বা পরিবারের নারী সদস্য এবং অন্যান্য নারীর দিকে ঠিকমতো তাকিয়ে কথা না বলে;

২। হঠাৎ কোন একদিন বাড়ির নারী সদস্যদের পর্দা করার জন্য চাপ দেয়;

৩। হঠাৎ করে চুপ হয়ে যায় এবং নিজেকে পারিবারিক বা সামাজিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান থেকে অত্যধিক পরিমাণে দূরে রাখে;

৪। বন্ধু সংখ্যা কমিয়ে দেয়, খেলাধুলা এবং আড্ডাবাজি বন্ধ করে দেয়; (অনেক বাবা-মা এটাতে খুশি হতে পারে এই ভেবে যে তার ছেলে সুপথে এসেছে, আসলে কোথায় কি করছে সেই বিষয়ে খোঁজ খবর নিতে হবে)।

৫। একজন বা দুইজন অপরিচিত ছেলের সাথে হঠাৎ করে সখ্যতা তৈরি করে, মাঝেমাঝে তাকে বাসায় নিয়ে আসে, কিন্তু পরিবারের সদস্যদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়না, সেই বন্ধুর সম্পর্কে ভালমতো খোঁজ নিন;

৬। কিশোর (বিশেষ করে ১৬ থেকে ২৫ বছর) বয়সের ছেলে-মেয়েরাই খুব সহজে প্রভাবিত হয়, তাই তারা এক বা একাধিক রাত বাড়ির বাইরে থাকছে কীনা এবং কাদের সাথে থাকছে খোঁজ নিন;

৭। উপরের আচরণের সাথে মিলে গেলে আপনার সন্তানের ঘরে গিয়ে ভালমতো তার জিনিসপত্র খুঁজে দেখুন কোন মৌলবাদী বই খুঁজে পান কীনা।

এসব চিহ্ন দেখতে পেলেই বুঝবেন আপনার সন্তান স্বাভাবিক অবস্থায় নেই। তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা নিন। নিজে না পারলে সেই সন্তানের বন্ধুবান্ধব, এবং আশেপাশের মানুষকে জানান। আপনার সন্তান হঠাৎ নিরুদ্দেশ হয়ে গেলে লোকলজ্জার ভয় না করে দ্রুত পুলিশকে জানান। আপনার সচেতনতাই পারে একজনকে জঙ্গিতে পরিণত না হতে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশে জঙ্গিদের হাতে যত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তার বেশিরভাগ ঘটিয়েছে অল্পবয়সী ব্রেনওয়াশড ছেলেরা এবং তারা বেশিরভাগ সমাজের উঁচুতলার মানুষের সন্তান।

একটিবার চিন্তা করুণ- আপনার নিজের সন্তান আপনাকে এবং পরিবারের অন্যান্যদের গলায় ছুরি/তলোয়ার চালিয়ে হত্যা করছে। আজ যারা ভাবছেন 'আমাকে তো মারবেনা', তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। এরাই পাকিস্তানে, আফগানিস্তানে মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলা করে মানুষ হত্যা করছে। এরাই সিরিয়া, ইরাকে অন্য মুসলমানদের জবাই করে হত্যা করছে। তাহলে কি বলবেন মসজিদে নামাজ পড়া খারাপ কাজ?! রাষ্ট্র বা সরকার কিছুই করতে পারবেনা যদি না আপনি আপনার ঘর সামলান।

স্কুলে পড়াকালীন সময়ে একবার আমারও জিহাদে যাওয়ার শখ হয়েছিলো। কেউ আমাকে বুঝিয়েছিল জিহাদে গিয়ে মৃত্যুবরণ করলে নিশ্চিত বেহেশত। যারা যারা ইসলামের শত্রু তাদের সবাইকে মেরে ফেলার তাগিদ অনুভব করেছিলাম। অবশ্য সেটা বেশিদিন থাকেনি। পড়াশুনা, স্কুল, খেলাধুলা, আড্ডাবাজি, সংস্কৃতি এসব আমাকে সেই পথ থেকে দূরে রেখেছিলো। আমি যদি খুব বেশী পরিমাণে এই বিষয়ে ভাবতাম এবং পরিবার এবং সমাজ থেকে আলাদা হয়ে যেতাম, কে জানে আমিও এরকম মৌলবাদী হয়ে যেতে পারতাম।

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত