আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী

১৭ জানুয়ারি, ২০১৫ ০২:১৭

বিএনপি-জামায়াত জোটের মরণ কামড়

বিএনপি-জামায়াত জোট তাদের মরণ কামড় দিয়েছে। এ ছাড়া তাদের করার কিছুও ছিল না। লন্ডনের সাপ্তাহিক ইকোনমিস্টের ভাষ্যে, 'হাসিনা সরকার সব বিতর্ক ও বিরোধিতা অতিক্রম করে স্থিতিশীলতা অর্জন করেছে।' দেশে বড় রকমের অশান্তি নেই। দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে বহুগুণ। জাতীয় প্রবৃদ্ধি বাড়ছে। অর্থনৈতিক উন্নতি বিশ্বময় প্রশংসিত। বিএনপির জনসমর্থন নেই। জামায়াতের সন্ত্রাসের দাঁত অনেকটাই ভোঁতা। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের একজনের পর একজনকে ফাঁসির আদেশ দিয়ে চলেছেন।

এই অবস্থায় ঘরে বসে থাকলে বিএনপি ও জামায়াতের জোড়া মৃত্যু অনিবার্য। সুতরাং কিছুটা অস্তিত্ব রক্ষার জন্য, কিছুটা পেছনের দেশি ও বিদেশি অভিভাবকদের চাপে এই জোটকে সন্ত্রাসে নামতে হয়েছে। আন্দোলন করার শক্তি তাদের নেই। কারণ, তাদের পেছনে জনসমর্থন নেই। আন্দোলন করার শক্তি ও সাহস নেই বলেই বিএনপি-জামায়াতকে সন্ত্রাস তথা চোরাগোপ্তা হামলার কাজে নামতে হয়েছে। আগে তবু হরতাল ডেকে সন্ত্রাসী ক্যাডারদের দ্বারা ভাংচুর, গাড়িতে আগুন, নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মারা হচ্ছিল। এখন হরতালের দিনটি ছাড়াও আগুনে পুড়িয়ে নিরীহ মানুষ মারার এই বর্বরতার অনুষ্ঠান চলছে। পেট্রোল বোমা ছোড়া হচ্ছে। 

এই সন্ত্রাসের একটাই উদ্দেশ্য, জনজীবনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা, আতঙ্ক সৃষ্টি করে জনজীবনে অচলাবস্থা সৃষ্টি করা, দেশে অরাজকতা ডেকে আনা এবং এই অরাজকতা দ্বারা সরকারের পতন ঘটানোর চেষ্টা করা। তাতে তারা নিজেরা ক্ষমতায় আসতে না পারুক, কোনো অশুভ ও অবাঞ্ছিত শক্তি ক্ষমতায় এলেও তাদের আপত্তি নেই। এই অশুভ শক্তি ক্ষমতায় এলে 'গণতন্ত্রের' জন্য মায়াকান্না তাদের কণ্ঠে আর থাকবে না। এমনকি তাদের সমর্থক সুশীল সমাজের কণ্ঠেও থাকবে না। তখন সেনাপ্রিয় ভট্টাচার্য মশাইরা সেই অগণতান্ত্রিক সরকারের কাছ থেকে বড়সড় চাকরি পেয়ে বিদেশে পাড়ি দেবেন।

গণআন্দোলনের দ্বারা সরকারের পতন ঘটানো যায়। কিন্তু সন্ত্রাস দ্বারা পতন ঘটানো যায় না। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচনের আগে বিএনপি-জামায়াত দেশময় সন্ত্রাস সৃষ্টি দ্বারা যে ভয়াবহ যুদ্ধাবস্থার সৃষ্টি করেছিল, তার কোনো তুলনা হয় না। ব্রিটেনে সত্তরের দশকের আইআরএর সন্ত্রাসও তার কাছে তুচ্ছ। সেই আইআরএর সন্ত্রাস যেমন সফল হয়নি, তেমনি বাংলাদেশে বিএনপি ও জামায়াতের গত নির্বাচনপূর্ব সন্ত্রাসও সফল হয়নি। তারা নির্বাচন ঠেকাতে পারেনি। হাসিনা সরকারকে ক্ষমতাচ্যুতও করতে পারেনি। এবারের সন্ত্রাসেও তারা তা পারবে তা নয়। এটা তাদের হতাশাজনিত মরণ কামড়। যদি জনজীবনে আতঙ্ক ও দুর্ভোগ সৃষ্টি করে একটা কিছু করা যায়। পেছনে ইন্ধনদাতারা তো আছেনই। লন্ডনে বসে তারেক রহমান সন্ত্রাসের অর্থ ও পরিকল্পনা সাপ্লাই করছেন। নেপথ্যে মদদ জোগাচ্ছে পাকিস্তানের আইএসআই। এ ছাড়া 'নাচুনে বুড়ি' হিসেবে মার্কিন প্রশাসনের একটা অংশ এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন তো আছেই। আছে তাদের ডুগডুগি বাজানোর জন্য একটি দেশি সুশীল সমাজ।

এই পরিস্থিতি ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ছিল প্রায় ৪০ বছর আগে। টানা দশ বছর মাওবাদী ও নকশালী সন্ত্রাস চলেছে। ট্রামে-বাসে আগুন দেওয়া, পেট্রোল বোমা ছুড়ে নিরীহ মানুষ মারা, শিশু ও নারী পর্যন্ত আগুনে পুড়িয়ে মারা, গরিব কনস্টেবল হত্যা ছিল এই নকশালী সন্ত্রাসীদের নিত্যদিনের কাজ। শ্রেণীসংগ্রামের নামে গ্রামাঞ্চলে পর্যন্ত যেভাবে জোতদার ও সম্পন্ন কৃষক হত্যা শুরু হয়েছিল, তা ছিল এক কথায় অবর্ণনীয়। 

দশ বছর ধরে এই নকশালী তাণ্ডব পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও আসামে বিভীষিকার রাজত্ব সৃষ্টি করেও সফল হতে পারেনি। নকশাল নেতা চারু মজুমদারকে অসুস্থ হয়ে পুলিশের হাতে ধৃত অবস্থায় মারা যেতে হয়েছে। আরেক নেতা কানু সান্যাল আগেই সন্ত্রাসের পথ ছেড়ে দেন। তবু এই নকশালীদের সামনে একটা রাজনৈতিক আদর্শ ছিল। বহু তরুণ এই আদর্শের টানে নকশালপন্থি হয়েছে; আত্মবলি দিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের বিএনপি ও জামায়াত জোটের রাজনৈতিক আদর্শটা কী? গণতন্ত্রের স্লোগানের আড়ালে মধ্যযুগে প্রত্যাবর্তন? ধর্মের নামে নিরীহ মানুষ হত্যা করা? সিরিয়া ও ইরাকে তথাকথিত খেলাফত প্রতিষ্ঠার নামে আইসিস যে বর্বরতার অনুষ্ঠান করে চলেছে, তার সঙ্গে বাংলাদেশে বিএনপি ও জামায়াতের সন্ত্রাসের পার্থক্যটা কী?

এই সন্ত্রাস ও বর্বরতা প্রতিহত করার জন্য গণতান্ত্রিক সরকার সীমিতভাবে তাদের যে প্রশাসনিক শক্তি ব্যবহার করছে, তাও আমাদের তথাকথিত একটি সুশীল সমাজের মতে, গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ। গত শতাব্দীর কুড়ির দশকে ইতালির ফ্যাসিস্ট নেতা মুসোলিনি মাত্র ২১ জন সমর্থক নিয়ে রোম দখলের অভিযান করেছিলেন। রাজা ভিক্টর ইমানুয়েল বিনা বাধায় মুসোলিনির কাছে আত্মসমর্পণ করে ইতালিতে ফ্যাসিস্ট রাজ কায়েমের পথ প্রশস্ত করে দিয়েছিলেন। বর্তমান বাংলাদেশেও আমাদের এই সুশীল সমাজটি কি চায়, কোনো গণআন্দোলনের মুখে নয়, বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসের মুখে কোনো বাধা না দিয়ে হাসিনা সরকার রাজা ইমানুয়েলের মতো আত্মসমর্পণ করলেই দেশে গণতন্ত্র একেবারে পাকাপোক্ত হয়ে যেত? নাকি ইতালির মতো দীর্ঘদিনের জন্য আধা ধর্মীয় ফ্যাসিস্ট রাজ কায়েম হতো?

সম্প্রতি ফরাসি কথাশিল্পী মিসেল ওয়েলবেকের লেখা একটি উপন্যাসের ইংরেজি অনুবাদ আমার হাতে এসেছে। তাতে দেখানো হয়েছে, ২০২২ সালে ফ্রান্সে ক্ষমতা দখল করেছে একটি ইসলামপন্থি দল। তারা নারীদের ঘরের বাইরে বেরোনো নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। বহু বিবাহ আইনসম্মত করা হয়েছে এবং স্কুল, কলেজে দর্শন, বিজ্ঞান সব পড়ানো বন্ধ করে কেবল ধর্মগ্রন্থ পড়ানো হচ্ছে। এই দৃশ্য যদিও কল্পনাপ্রসূত; তবে তা ফ্রান্সের নয়। দৃশ্যটি অতীতের আফগান তালেবান রাষ্ট্রের এবং সিরিয়া ও ইরাকের একাংশে প্রতিষ্ঠিত আইসিসদের রাজত্বের।

সন্দেহ নেই, ভালোমন্দ মিশিয়ে বাংলাদেশে যে গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় রয়েছে, বিএনপি-জামায়াত জোট তাকে উৎখাত করতে পারলে ইরাক ও সিরিয়ার আইসিসের তথাকথিত খেলাফত রাষ্ট্রের সম্প্রসারণ ঘটবে বাংলাদেশেও। আমাদের 'সুশীল সমাজ' নামে পরিচিত এলিট ক্লাসটি কি বাংলাদেশে গণতন্ত্রের নামে সেই মধ্যযুগীয় ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা চায়?

আমাদের এই সুশীল সমাজের শীর্ষস্থানীয় নেতা ড. কামাল হোসেন, ড. ইউনূস, রেহমান সোবহানদের জেনে রাখা উচিত (হয়তো তারা জানেনও), আফগানিস্তানে 'কমিউনিজমের আগ্রাসন থেকে গণতন্ত্র বাঁচানোর' নামে কাবুলের যে ক্ষুদ্র অথচ প্রভাবশালী সুশীল সমাজটি মার্কিন প্ররোচনায় তালেবানের উত্থানে সমর্থন জানিয়েছিল, তালেবান সরকার প্রতিষ্ঠা লাভের পর তাদের অনেকের গলাকাটা গেছে। কেউ কেউ বিদেশে পালিয়েছেন। তালেবান রাজত্বের অবসানের পরও তারা আফগানিস্তানে ফিরতে পারেননি।

গত বছরের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে যত সীমাবদ্ধতা থাকুক, দেশে গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখার বৃহত্তর স্বার্থেই এই নির্বাচন দ্বারা গঠিত সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে হবে। সরকারকে তার মেয়াদ পূর্ণ করতে দিতে হবে। গণআন্দোলন দ্বারা এই সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চাইলে অন্য কথা। কিন্তু জনসমর্থনহীন সন্ত্রাস দ্বারা বলপূর্বক এই সরকারের উৎখাত করতে চাইলে সরকারকে তা সর্বশক্তি প্রয়োগে প্রতিহত করতে হবে। এখানে সামান্যতম নমনীয়তা প্রদর্শনের কোনো অবকাশ নেই। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে, এই গণতন্ত্র তার অতীতের ৪০ বছরের সব দুর্বলতা কাটিয়ে উঠেছে। এখন এই গণতন্ত্রের ভিত্তিমূলে কেউ আঘাত করতে চাইলে প্রত্যাঘাতটিও করতে হবে আরও দ্বিগুণ শক্তিতে। 

কেউ কেউ যুক্তি দেখান, বিএনপি গণতান্ত্রিক পন্থায় তাদের দাবি-দাওয়া উত্থাপনের জন্য সভা-সমাবেশ করতে চায়; সরকার তা অনুষ্ঠানে বাধা দেওয়াতেই বিএনপি সন্ত্রাসের পথে যাচ্ছে। এই যুক্তিটি ধোপে টেকে না। খালেদা জিয়া বা তার জোট শান্তিপূর্ণভাবে কোনো সভা-সমাবেশ করতে চাইলে সরকার তাতে বাধা দিয়েছে, তার কোনো উদাহরণ বিরল। কিন্তু যখনই খালেদা জিয়া সরকারের পতন ঘটানোর জন্য মারমুখী হয়ে সভা-সমাবেশ করতে চেয়েছেন এবং সেই সভা-সমাবেশ থেকে বড় রকমের সন্ত্রাস ঘটানোর ষড়যন্ত্র হয়েছে, সরকার তাতে বাধা দিয়েছে। জননিরাপত্তার স্বার্থে এই বাধা দেওয়াটা একটি গণতান্ত্রিক সরকারের কর্তব্য।

হেফাজতিদের ঢাকা শহর অবরোধের আমন্ত্রণ জানিয়ে সরকারকে ক্ষমতা ত্যাগের আলটিমেটাম দেওয়া এবং শেখ হাসিনাকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশত্যাগের হুমকি দিয়ে দেশময় সন্ত্রাস সৃষ্টির যে পরিকল্পনা বিএনপি করেছিল, তাকে গণতান্ত্রিক আন্দোলন বলে মেনে নিয়ে সেই ভয়াবহ ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করা না হলে আজ বাংলাদেশের অবস্থা কী দাঁড়াত, তা কি চিন্তা করা যায়?

এবারও পবিত্র বিশ্ব ইজতেমাকে সামনে নিয়ে বিরাট চক্রান্ত করা হয়েছিল বলে গোয়েন্দা সূত্রের খবরেই প্রকাশ। যেসব জামায়াতি সন্ত্রাসী পশ্চিমবঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিল, তাদের তাবলিগি সাজিয়ে ইজতেমার সময় বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা এবং তাদের সাহায্যে দেশে বিরাট অরাজকতা সৃষ্টির পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের গোয়েন্দা সূত্রেই খবর ফাঁস করা হয়েছে। এই অরাজকতা সৃষ্টির পরিকল্পনার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে খালেদা জিয়া ঢাকায় মহাসমাবেশ ডেকেছিলেন এবং কৌশলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে অথবা সেক্রেটারিয়েটের একটি গেটে অবস্থান নিয়ে এই 'মহাপরিকল্পনা' বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দেবেন ভেবেছিলেন।

অতীতে হেফাজতি সমাবেশকে কেন্দ্র করে খালেদা জিয়া যে চক্রান্ত করেছিলেন, সরকার সচেতন ও সতর্ক থাকায় ঢাকার তাবলিগ জামাতকে কেন্দ্র করে সে ধরনের চক্রান্ত সফল করার চেষ্টাও সরকার ব্যর্থ করে দিয়েছে। ইতালির রাজা ভিক্টর ইমানুয়েলের মতো বাংলাদেশের শেখ হাসিনা ফ্যাসিবাদের ধ্বংসাত্মক তৎপরতাকে গণতান্ত্রিক আন্দোলন বলে মেনে নেননি এবং তাকে প্রতিহত করতেও দ্বিধা দেখাননি। বাংলাদেশে নব্য ফ্যাসিবাদ তার হিংস্র দাঁত দেখাচ্ছে। গণতন্ত্র এবার তাতে ভীত হয়নি। সেই বিষদাঁত ভেঙে দেওয়ার সাহস ও শক্তি দেখাচ্ছে।

সন্দেহ নেই, সাম্প্রতিক সন্ত্রাস বিএনপি-জামায়াত জোটের মরণ কামড়। তাতে আখেরে কোনো কাজ হবে না। জনজীবন কিছুদিন অসহায়ভাবে নিগ্রহ ভোগ করবে। কিন্তু নিগ্রহকারীরা সফল হবে না। পশ্চিমবঙ্গে নকশালপন্থিরা দশ বছর তাণ্ডব চালিয়ে যদি সফল হতে না পেরে থাকে, তাহলে বাংলাদেশে সাধারণ মানুষের ওপর বিএনপি-জামায়াত গুণ্ডা লেলিয়ে দিয়ে, কাপুরুষোচিত চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে উদ্দেশ্যসাধনে সিদ্ধ হবে_ তা ভাবার কোনো কারণ নেই।

বিএনপি যদি প্রকাশ্যে সন্ত্রাস এবং জামায়াতকে বর্জনের ঘোষণা দিয়ে অবিলম্বে আরেকটি নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠান নয়, যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে আলোচনা করতে চায়, তাহলে সরকার অবশ্যই সেই আলোচনার ডাকে সাড়া দেবে। কিন্তু সরকারের পতন ঘটানোর হুমকি দিয়ে, সন্ত্রাস ও বিভীষিকার রাজত্ব সৃষ্টি করে কেউ বা কোনো দল যদি সরকারকে নতজানু করতে চায়, তাহলে সরকারকে অবশ্যই শক্ত ও কঠোর অবস্থান নিতে হবে।

বাসের ঘুমন্ত কন্ডাক্টর বা সাধারণ যাত্রীদের যারা পুড়িয়ে মারে, তারা কোনো প্রকার মানবিক করুণা বা দয়া লাভের পাত্র হতে পারে না। এ ক্ষেত্রে বিজিবি দেখামাত্র গুলি করার যে চরমপন্থা গ্রহণের কথা বলছে, তাকে সমর্থন না জানিয়ে উপায় নেই। ইউরোপের বহু গণতান্ত্রিক দেশ সন্ত্রাস দমনে এই নীতি গ্রহণ করেছে। তাতে গণতন্ত্র ও মানবতা বিপন্ন হয়েছে বলে কোনো মহল থেকে শোরগোল তোলা হয়নি। 

সরকার কেবল হুমকি না দিয়ে এই সন্ত্রাস দমনে কঠোর হোক। দেশের সব গণতান্ত্রিক শক্তি এই নব্য ফ্যাসিবাদের অভ্যুত্থান দমনে ঐক্যবদ্ধ ও সক্রিয় হোক। গ্রাম পর্যায়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলুক। রবীন্দ্রনাথের ভাষায় বলি, এই সন্ত্রাস ভীরু এবং কাপুরুষ। গণশক্তি জাগ্রত হলেই 'ভীত কুক্কুরের' মতো এরা পথ ছেড়ে পালাবে।


লন্ডন, ১৬ জানুয়ারি ২০১৫, শুক্রবার



আপনার মন্তব্য

আলোচিত