শিপন আলী

০৬ মে, ২০১৬ ১১:৩৩

ভাস্কর নভেরা আহমেদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

বাংলাদেশের আধুনিক ভাস্কর্যশিল্পের পথিকৃৎ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের অন্যতম রূপকার ভাস্কর নভেরা আহমেদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।

২০১৫ সালের ৬ মে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে নিজ বাসায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

নভেরা আহমেদের জন্ম ১৯৩৯ সালে। তাঁর পৈতৃক নিবাস চট্টগ্রামে। তাঁর কৈশোর ও যৌবন কেটেছে কলকাতা, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামে।

ভাস্কর্যশিল্পে তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া লন্ডনে। ১৯৫১ সালে তিনি পাড়ি জমান লন্ডনে। যোগ দেন সিটি অ্যান্ড গিল্ড স্টোন কার্ভিং ক্লাসে। পরে ক্যাম্পারওয়েল স্কুলে পাঁচ বছর ন্যাশনাল ডিপ্লোমা ইন ডিজাইনের মডেলিং ও স্কাল্পচার কোর্স করেন। পাঁচ বছরের এই ডিপ্লোমা কোর্স করার পর ১৯৫৫ সালে তিনি ইতালির ফ্লোরেন্স ও ভেনিসে ভাস্কর্য বিষয়ে পড়া শুরু করেন।

১৯৫৭ সালে দেশে ফিরে শিল্পী হামিদুর রহমান আর নভেরা যৌথভাবে শুরু করেন শহীদ মিনারের কাজ। কিন্তু কোনো এক অজ্ঞাত কারণে শহীদ মিনারের নকশাকারী হিসেবে তাঁর নামটি সরকারি কাগজে বাদ পড়ে, যা এখনো আর সংযুক্ত হয়নি।

১৯৫৮ সালে ঢাকায় প্রথম মুক্তাঙ্গন ভাস্কর্য প্রদর্শনী করেন শিল্পী নভেরা। ১৯৬০ সালে এশিয়া ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘ইনার গেজ’ শিরোনামে প্রদর্শনীটি ছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম একক ভাস্কর্য প্রদর্শনী।

যে প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে নভেরার শিল্পভাবনার ধ্রুপদ অভিজ্ঞান। তাঁর ভাস্কর্যরীতিকে ‘অ্যাবস্ট্র্যাক্ট এক্সপ্রেশনিজম’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বলা হয়, আদিম ভারতীয় শিল্পের সরলতার সঙ্গে ইউরোপীয় শিল্পকলার মসৃণতার মিশ্রণ তাঁর ভাস্কর্যরীতির অন্যতম বৈশিষ্ট্য। বিষয় নির্বাচন ও টেকনিকের বিবেচনায় তাঁর শিল্পকর্মে বিংশ শতাব্দীর প্রখ্যাত ব্রিটিশ ভাস্কর হেনরি ম্যুরের প্রভাব লক্ষণীয়। অন্যদিকে তাঁর নির্মাণকলায় এক অদম্য, দুর্বিনীত, নির্ভীক শিল্পীর চেতনাধারা অন্তর্লীন হয়ে আছে।

১৯৭৩ সাল থেকে তিনি স্থায়ীভাবে ফ্রান্সে বসবাস শুরু করেন। বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৭ সালে তাঁকে একুশে পদক প্রদান করে। কিন্তু তিনি পুরস্কার নিতে দেশে ফেরেননি।

২০১৫ সালের ৬ মে ফ্রান্সেই মারা যান বাংলাদেশের আধুনিক ভাস্কর্যশিল্পের পথিকৃৎ ভাস্কর নভেরা আহমেদ।

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত