বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি

২০ মে, ২০১৬ ১৯:৫৯

বিয়ানীবাজারে ১ম শিশু নাট্যোৎসব অনুষ্ঠিত

‘নাট্যচর্চায় শিশুদের মেধা বিকাশের সুযোগ দেই, সুন্দর দেশ গড়ি’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে ক্ষুদে নবদ্বীপ খ্যাত বিয়ানীবাজারে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে শিশু নাট্যোৎসব ২০১৬।

‘শিশু নাট’র ১ম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার, পৌরশহরের খাসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী এ উৎসবের আয়োজন করা হয়।

সকাল ১১ টায় উৎসবের উদ্বোধন করেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ মাসুম মিয়া। পরে সাড়ে ১১ টায় অনুষ্ঠিত মুক্তমঞ্চে উপজেলার বিভিন্ন স্কুলের শিশু শিক্ষার্থীরা গান, কবিতা-ছড়া, নৃত্য ও কৌতুক পরিবেশন করেন। দুপুর ২টায় উৎসব আহবায়ক সারওয়ার হোসেন এর সভাপতিত্বে উৎসব স্মারকের মোড়ক উন্মোচন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান খান।

প্রধান আলোচকের বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সাবেক পরিচালক ও নাট্যব্যক্তিত্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা ভবতোষ রায় বর্মণ রানা। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজনীতিক ও সাস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সলিমউল্লাহ, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ মাসুম মিয়া, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাছিব মনিয়া, বিয়ানীবাজার সাংস্কৃতিক কমান্ড (বিসাক)’র সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ, ঘুঙ্গাদিয়া বড়দেশ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইসলাম উদ্দিন, নাট্যকার ও নির্দেশক আতিকুল ইসলাম রুকন।

উৎসব উদযাপন পর্ষদের সচিব তন্ময় পাল চৌধুরী ও শিক্ষক পান্না বেগমের যৌথ সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন খাসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিধু ভূষণ বৈদ্য।

প্রধান অতিথি বলেন, নাটক সমাজের হচ্ছে দর্পন। ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বাঙালির বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে নাটক সহায়ক শক্তি হিসেবে প্রেরণা যুগিয়েছে। আলোকিত সমাজ গঠনে শুদ্ধতার বার্তা ছড়িয়ে দিয়ে আমাদের জাতীয় জীবনে নাটক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। তিনি বলেন, শিক্ষা, সাহিত্য, শিল্পের উন্নয়নের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলকে জাগিয়ে তুলতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের নাট্যচর্চা খুবই জরুরি।

‘আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাদের হাত ধরেই রচিত হবে অপার সম্ভাবনাময় সোনার বাংলাদেশ’ উল্লেখ করে প্রধান আলোচক বলেন, আবহমান কালের আশৈশবলালিত জাতীয় ও আঞ্চলিক সংস্কৃতি ক্রমাগত বিলুপ্ত হতে যাচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে খেলা-ধূলা, নাচ-গান আনন্দ উৎসবের উপাদান। ব্যক্তি-পরিবার ও সমাজের মধ্যকার সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ মধুর সম্পর্কে ভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। আত্মকেন্দ্রিকতার ফলে আমাদের সামাজিক নৈতিকতা বারবার হোঁচট খাচ্ছে। সেই অপশক্তির রাহুগ্রাস থেকে বেরিয়ে আসতে এবং সংস্কৃতির লালন ও বিকাশে নাটক অগ্রণীভূমিকা পালন করে। তাই মানবিক, সুস্থ্য-সুন্দর সাংস্কৃতিক আবহ তৈরির পাশাপাশি শ্রেণী-জাত, ধনী- দরিদ্র ও লিঙ্গবৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় নাটকই হোক একমাত্র হাতিয়ার।

তিনি বলেন, শিশুদের সুপ্ত প্রতিভা জাগ্রত করতে সৃজনশীল চিন্তার কোনো বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে শিশুদের মেধা বিকাশনে বিয়ানীবাজারে স্কুল ভিত্তিক নাট্যচর্চা সত্যিই সময়োপযোগী ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এছাড়া অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষা, সামাজিক-সাংস্কৃতিক, রাজনীতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় বিশিষ্টজন উপস্থিত ছিলেন।
বিকেল ৩ টায় অনুষ্ঠিত শিশু নাট্যোৎসবে উপজেলার ৪টি প্রাইমারি স্কুলের শিশু নাট্য সংগঠন অংশগ্রহণ করে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত