সিলেটটুডে ডেস্ক

০৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ১৮:৪৭

মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটিতে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস বিরোধী আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটিতে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবিরোধী আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক নাহিদা সুলতানার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি মসজিদের ইমাম মো. ইসমাইল হোসেন। উপ-উপাচার্য অধ্যাপক শিব প্রসাদ সেন এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় শুভেচ্ছা ও স্বাগত বক্তব্য রাখেন যথাক্রমে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ও পরিচালক (অর্থ) মিহির কান্তি চৌধুরী এবং সহকারী রেজিস্ট্রার ও জনসংযোগ কর্মকর্তা লোকমান আহমদ চৌধুরী।

সভাপতি শিব প্রসাদ সেন তাঁর বক্তব্যে বলেন, জঙ্গিবাদ দমন করা শুধু রাষ্ট্রের দায়িত্ব নয়। জঙ্গিবাদ যেহেতু এটি একটি সামাজিক ব্যাধি, তাই সমাজের সব নাগরিক ও শ্রেণি-পেশার মানুষকে এই ভয়াবহ ব্যাধির বিরুদ্ধে লড়তে হবে। বাংলাদেশ একটা শান্তি ও সম্প্রীতির  দেশ। আমাদের জাতীয়তাবাদ সুসংহত। আমাদের সংবিধানে সকলের মৌলিক অধিকার স্বীকৃত। গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, অসাম্প্রদায়িকতা ও সহজাত সম্প্রীতি আমাদের রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ও সাংবিধানিক মূল চালিকাশক্তি। একে বিনষ্ট করার যে কোনো চক্রান্ত জাতিকে কঠোরভাবে মোকাবেলা করতে হবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ইমেরিটাস অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল আজিজ বলেন, মানব সভ্যতাকে টিকিয়ে রাখতে হলে মনের সুকুমারবৃত্তির পরিচর্যা দরকার। হিংসা দিয়ে যে জীবন তৈরি হয়, তাতে আর যা-ই হোক কাঙ্ক্ষিত মানবসভ্যতাকে লালন করা সম্ভব নয়। এখন তাই প্রয়োজন যেকোনো জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সচেতন প্রয়াস। জঙ্গিবাদের ভয়ংকর পরিণাম সম্পর্কে সর্বস্তরের সামাজিক জাগরণ প্রয়োজন।

তিনি আরো বলেন, নিয়মতান্ত্রিকতা, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা, দেশপ্রেম ও রাজনৈতিক সততাই হবে আমাদের বর্তমান জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আন্দোলনের মূল শক্তি। বিচ্ছিন্নতাবাদী ও পরস্পরবিরোধী মন-মানসিকতা নিয়ে এই সংকট মোকাবেলা অসম্ভব।

অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ-এর সদস্য মুহিতুল বারী রহমান, বিশিষ্ট আইনজীবী ও সিলেট জেলা বার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শাহ আশরাফ উল ইসলাম আশরাফ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বিশিষ্ট লেখক, সাংবাদিক, ইনডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন-এর সিলেট ব্যুরো প্রধান ও ছাত্র অভিভাবক জনাব আল আজাদ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল এবং সিলেট অনলাইন প্রেস ক্লাবের সভাপতি মুহিত চৌধুরী।

বক্তারা বলেন, কোনো দেশে আইনের শাসন না থাকলে সেখানে জঙ্গিবাদের উত্থান হতে পারে। জঙ্গি-সন্ত্রাস দমনে সামাজিক প্রতিরোধের কোন বিকল্প নেই। এ ধরনের কোনো অপশক্তি রুখে দেওয়ার জন্য আইনের শাসন, সমতা ভিত্তিক ও বৈষম্যহীন সমাজ গঠন জরুরি। ইসলাম কখনো বোমাবাজি, হত্যা, গুপ্তহত্যা, আত্মঘাতী হামলাসহ কোন ধরনের অরাজকতা সমর্থন করে না। ধর্ম নিয়ে ব্যবসা বা রাজনীতি করে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করা যাবে না এবং সত্যিকার অর্থে ধার্মিক হতে হবে।

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এম. রবিউল হোসেন, ব্যবসা ও অর্থনীতি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. তাহের বিল্লাল খলিফা, মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সুরেশ রঞ্জন বসাক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. নজরুল হক চৌধুরী, আইন ও বিচার বিভাগের অধ্যাপক ব্যারিস্টার আরশ আলী, কাজীটুলা উচাসড়ক জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা হাফেজ নুরুদ্দিন এবং বিশ্বনাথ জামে মসজিদের সাবেক ইমাম মো. জয়নাল আবেদীন।

উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন মসজিদের ইমাম, আইনজীবী, অভিভাবক, শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত