রানা মেহের

১৯ আগস্ট, ২০২০ ০০:৩৭

আমাদের ঢাকামুখীতা আজিজুর রহমানদের রাষ্ট্রীয় হতে দেয় না

আজিজুর রহমান মারা গেছেন। বঙ্গবন্ধুর সহযোগী ছিলেন। ছিলেন একজন অসাম্প্রদায়িক, রাজনীতি এবং মানুষের জন্য জীবন কাটিয়ে দেয়া নেতা। ক্ষমতা ধারণ করলেও গ্রাস করতে পারেনি যাকে।

স্বাধীনতা পদক পেয়েছিলেন এইবার। বহু লোকে অবাক হয়ে ভেবেছিল, কে ইনি? কেউ আবার হাই তুলতে তুলতে ঘোষণা দিয়েছিলেন, নিশ্চই দলীয় আনুগত্যেরই ফসল ঘরে তুলেছে লোকটা। অথবা বড় নেতাদের তোষামদি করে। কারণ আমরা জানি না এই মানুষটা রাজনীতি করবেন বলে সংসারে জড়াননি। জানিনি বীর মুক্তিযোদ্ধাটি কীভাবে দল ও মতের বাইরে দাঁড়িয়ে তার শহরের প্রতিটা মানুষের ভাই কিংবা চাচা হয়ে উঠেছিলেন।

আজিজুর রহমান যদি মৌলভীবাজারের না হয়ে নীলফামারি কিংবা বিরিশিরির নেতা হতেন, আমি নিজেও তার নাম জানতাম কি? সম্ভবত না। নেতাদের ঢাকামুখীতার যতই সমালোচনা করি না কেন, যতবারই বলি না কেন সাংসদ হয়েই নেতারা নিজের এলাকায় থাকতে চান না, ঢাকায় সর্বক্ষণ না থাকলে, প্রচার মাধ্যমকে নিয়মিত চটকদার রসদ না যোগালে আপনি আসলে পুরো দেশের নেতা হয়ে উঠতে পারবেন না।

বিজ্ঞাপন



আজিজুর রহমান করোনায় আক্রান্ত হবার আগ পর্যন্ত নিজের পরোয়া না করে মানুষের পাশে ছিলেন, তার দরজায় প্রহরী ছিল না কোনদিন। আওয়ামী লীগের চরম দুঃসময়েও তিনি ছিলেন দলের পাশে, শেখ হাসিনার সাথে। প্রধানমন্ত্রী নিজেও কৃতজ্ঞতা প্রকাশে কার্পণ্য করেননি কখনো। এর কোন কিছুই স্থানীয় খবরের বাইরে জাতীয় সংবাদ হয়ে উঠতে পারেনি। আমাদের রাজধানী কেন্দ্রিক মানসিকতা এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন প্রচার মাধ্যম কেউই এই মানুষগুলোকে রাষ্ট্রীয় হতে দেয় না।

বিদায় আজিজুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নামে যেই শব্দটিকে আমরা হিন্দি গানের কলি-সদ্য শেখা গালাগালির মতো প্রতিনিয়ত ব্যবহার করি, আপনি সেই আদর্শকে আজীবন পরিধান করা বিরল মানুষদের একজন। একজন সাধারণের ভালোবাসা জানবেন।

রানা মেহের : লেখক।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত