হিমাদ্রি শর্মা

২৩ এপ্রিল, ২০২১ ১৭:২৯

কীভাবে কাটছে করোনাকাল?

বৈশ্বিক থমথমে এই পরিস্থিতিতে কেউ যখন আমাকে জিজ্ঞেস করে- “কিভাবে কাটছে এই করোনাকাল?" প্রথমে মাথায় পাহাড়সম চাপ অনুভব করি এবং নিজে নিজেকেই শুধাই, “একাডেমিক পড়াশোনায় তো অনেকখানি পিছিয়ে পড়ছি। আদৌও কী নির্ধারিত সময়ে গ্রাজুয়েট হয়ে চাকরি-বাকরি করার সুযোগ পাবো?"

এই করোনাকালে শিক্ষার্থীরাই মনে হয় সবচেয়ে বেশি অস্বস্তিতে ভুগছে। প্রতিটি দিন এক ধরণের অনিশ্চয়তায় কাটছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি বিধায় এই অনিশ্চয়তা বুঝি একটুখানি বেশি!

গেলো বছরে স্বাভাবিক নিয়মেই পরীক্ষা পাসের মাধ্যমে তৃতীয় বর্ষে পা রেখেছিলাম। এরপর একই বর্ষে এক বছরেরও বেশি সময় কেটে গিয়েছে। করোনার প্রকোপে পড়ে না একটা ক্লাস করতে পেরেছি, আর না কোনো ক্লাস টেস্ট দিতে পেরেছি! মাঝে অবশ্য অনলাইনে শিক্ষকেরা ক্লাস নিয়েছিলেন গুটিকয়েক। সেটাও অস্বাভাবিক ভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে গেলো ফেব্রুয়ারি কিংবা মার্চ মাসে আমাদের তৃতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো। তেমনটা হলে আমরা এখন চতুর্থ বর্ষের পড়াশোনায় মত্ত থাকতাম। গ্রাজুয়েশনের একদম কাছাকাছি পৌঁছে যেতাম। অথচ চলমান সংকট আমাদেরকে একটা অনাকাঙ্ক্ষিত সময়ের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।

তবে কী জীবন থেকে একটা বছর নাই হয়ে গেলো?

এছাড়া আমরা যারা সেকেন্ড টাইমার ছিলাম তাদের তো দুশ্চিন্তা আরও বেশি। শুরুতে ভর্তি হতে এক বছর নাই, এখন আরও একবছর। না জানি গ্রাজুয়েশন শেষ করতে আর কত বছর শেষ হয়ে যায়। যার ফলে পরে গিয়ে হয়তো চাকরি জগতের প্রতিযোগীতায় নামার জন্যে খুব একটা সময় হাতে থাকবে না আমাদের।

এই অনিশ্চয়তা আমাদেরকে প্রতিদিন নতুন করে নতুনভাবে দুশ্চিন্তায় ফেলছে। উদ্যম হারিয়ে ফেলছি সবাই। তবে কী আমাদের ভিন্ন পথে পা বাড়ানো উচিত? হয়তো ইতিমধ্যেই আমাদেরই অনেকে ভিন্ন জগতে চলেও গিয়েছে!

জীবন নিয়ে হতাশার চরম পর্যায়ে পড়ার আগে কী ক্লাসে ফিরতে পারবো আমরা?

হিমাদ্রি শর্মা: শিক্ষার্থী, অনার্স তৃতীয় বর্ষ, পরিসংখ্যান বিভাগ, এমসি কলেজ, সিলেট।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত