আরিফা আক্তার

২৮ এপ্রিল, ২০২৩ ১২:১৯

সুখ আর সৌন্দর্যের মেলবন্ধন

পৃথিবীর চোখে প্রিন্সেস ডায়ানার রূপ-গুণ ছিলো অতুলনীয়, ক্যামিলা পার্কার তার ধারেকাছেও যেতে পারেননি। অথচ চার্লসের কাছে ক্যামিলা ছিলেন ভালোবাসার আধার। নিজের জীবনতো বটেই গোটা বিশ্ব তোলপাড় হবে জেনেও চার্লস ডায়ানাকে ত্যাগ করে ক্যামিলাকে জীবনে এনেছিলেন।

সৌন্দর্য এমনই এক বিষয়, সবার কাছে যা ভালো লাগবে নিজের কাছে তা কুৎসিত লাগতেই পারে। সৌন্দর্যের সাথে সুখ জড়িয়ে থাকে। যা কিছু আমাদের সুখানুভূতি দেয় তাই সুন্দর। অথচ আমরা সুন্দর আর সুখের যোগসূত্র খুব সহজে আবিষ্কার করতে পারি না। হয়তো একটা গোটা জীবন ব্যয় হয়ে যায় এই সূত্র আবিষ্কারে। একসময় বুঝতে পারি বাহ্যিক বা অন্তর্নিহিত সৌন্দর্য বলে যা আলোচনায় রাখি তা আসলে আমাদের সুখানুভূতির অপর নাম। আমাদের মস্তিষ্কে যে আচরণ বা যে ভিজুয়াল চিত্র আনন্দ সৃষ্টি করে তাকেই আমরা সুন্দর বলি।

একবার যদি এই সুন্দর বা সৌন্দর্যের দেখা কেউ পেয়ে যায় তবে সে একই সাথে অমৃতের সন্ধান এবং চির বিষাদের দেখাও পেয়ে যায়। যে হয়ে যায় নিঃসঙ্গ। কেবল সুখ বা সৌন্দর্য নির্ভেজাল ভাবে মেলে না। দক্ষ শিকারি যেমন সপ্তপর্ণে নিজের শিকার ধরে, নইলে যেভাবে চারপাশের কোলাহল মনোযোগ ভঙ্গ করে শিকারকে দূরে সরায়, ঠিক তেমন করে সৌন্দর্য পিয়াসীকেও সাধনা করতে হয়। এপথে হৈহল্লা করা পথচারীরা পরিবেশ দূষণ ঘটায়, বিঘ্নিত করে একাগ্রতা। ফলে প্রায়শই সুখ বা সৌন্দর্য অধরাই থেকে যায়।

সৌন্দর্য কেবল মানব শরীর-মনে বিরাজমান, এমন নয়। জ্ঞান, শিক্ষা, কর্ম, খাদ্য, প্রেম সবেতে বিদ্যমান। এর প্রতিটি কাজে যারা সৌন্দর্য আর সুখের সমুন্নয় ঘটাতে পেরেছে তারাই জগদ্বিখ্যাত। আইনস্টাইন যদি জ্ঞান চর্চায় আনন্দ খুঁজে না পেতেন তবে হয়তো পৃথিবীতে বিজ্ঞানের ইতিহাস অন্যরকম হতো, হিটলার যদি হিংস্রতায় আনন্দ না পেতো তবেও পৃথিবীর ইতিহাস ভিন্ন হতো। লালন শাহ বা আব্দুল করিম গানে পেয়েছিলেন সৌন্দর্য, তাই আমরা আজও আমাদের ইতিহাস সংস্কৃতিতে তাদের নাম লিখে যাই।

রবীন্দ্রনাথ ব্যারিস্টারি পড়ায় আনন্দের দেখা পাননি, নজরুল ঘর পালানোতে পেয়েছিলেন সুখের পরশ। জগদ্বিখ্যাত সকল কাজই আনন্দের ফসল। সৌন্দর্য, সুখ আর আনন্দের সংযোগে জগতে যাকিছু সংঘটিত হয়েছে তার সবটাই মানব জীবনের গতিপথ বদলে দিয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত