আশীষ দে

১০ জানুয়ারি, ২০২০ ১৪:১৬

শেখ হাসিনা সর্বকালের সেরা প্রধানমন্ত্রী

আব্রাহাম লিংকন আমেরিকানদের কাছে একজন মৃত্যুঞ্জয়ী হিরো। দাসত্ব প্রথার চরম বিরোধী হিসেবে পরিচিত হলেও মূলত আমেরিকার অর্থনৈতিক মুক্তি ও আধুনিক রাষ্ট্রের ভিত্তি রচনায় ১৬তম এই আমেরিকান প্রেসিডেন্টের ভূমিকা ছিলো সীমাহীন। তাই আমেরিকার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাকেই বিবেচনা করা হয়। ২০১৭ সালে বেসরকারি একটি সংস্থার পরিচালিত জরিপেও উঠে আসে এমন তথ্য।

সিঙ্গাপুরের লি কুয়ান ইউ, মালয়েশিয়ার মাহাথির মোহাম্মদ, চীনের মাও সেতুং যেমন স্ব স্ব রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক, আর্থসামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের অগ্রদূত ছিলেন, তেমনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য তনয়া জননেত্রী শেখ হাসিনা "তলা বিহীন ঝুড়ি" হিসেবে এক সময়ে এক আমেরিকানের মন্তব্যের বাংলাদেশকে অতি অল্প সময়ে একটি মডেল রাষ্ট্রে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছেন ও বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে একটি মর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন।

উল্লিখিত রাষ্ট্রনায়কদের তুলনায় শেখ হাসিনার কাজ ছিল কয়েক গুণ বেশি চ্যালেঞ্জিং, পূর্ববর্তী অদক্ষ, অযোগ্য, দুর্নীতিবাজ চারদলীয় সরকারের বিষাক্ত ছোবল থেকে একটি দরিদ্র, রোগাক্রান্ত রাষ্ট্রকে অতি অল্প সময়ে মাঝারি আয়ের রাষ্ট্র হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ ও জাতি গঠনের নিমিত্তে তৎকালীন সময়ে নানান পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও আততায়ীদের হাতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মম ভাবে সপরিবারে নিহত হন ও তার গ্রহণ করা অনেক পদক্ষেপই তখন অবাস্তবায়িত থেকে যায়। বঙ্গবন্ধুর সেই দেখানো পথেই হেঁটে আজ বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশকে একটি শ্রদ্ধার জায়গায় আসীন করতে সক্ষম হয়েছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।

ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, যোগাযোগ ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন, তথ্য প্রযুক্তির প্রসার, স্বাস্থ্য খাতে উন্নয়ন সহ প্রতিটি সেক্টরেই যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছেন শেখ হাসিনা। তাই বিশ্ব আজ বাংলাদেশ হতে চায়। রিলিফের জাহাজের দিকে আর তাকিয়ে থাকতে হয় না এদেশের মানুষের।

নিজস্ব অর্থে পদ্মার ওপর ৬ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণ করার প্রায় শেষ প্রান্তে বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন থেকে সরে যাওয়ার পর বিশাল এ প্রকল্প হাতে নেয়ার ঘটনা অনেক দেশ ও সংস্থার সন্দেহ ও বিস্ময় প্রকাশ করলেও সে স্বপ্ন এখন দৃশ্যমান। এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করছে বাংলাদেশ।

বর্তমান সরকারের শাসন আমলেই কোনো রকম যুদ্ধ-সংঘাত বা বৈরিতা ছাড়াই দুই প্রতিবেশী ভারত ও মিয়ানমারের বিপক্ষে সমুদ্র বিজয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। বঙ্গোপসাগরে এক লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটারের বেশি টেরিটরিয়াল সমুদ্র, ২০০ নটিক্যাল মাইল এলাকায় একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং চট্টগ্রাম উপকূল থেকে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহীসোপান এলাকার প্রাণিজ ও অপ্রাণিজ সম্পদের ওপর সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

পিপলস অ্যান্ড পলিটিকস, বিশ্বের পাঁচজন সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানকে চিহ্নিত করেছেন, যাদের দুর্নীতি স্পর্শ করেনি, বিদেশে কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই, উল্লেখ করার মতো কোনো সম্পদও নেই। বিশ্বের সবচেয়ে সৎ এই পাঁচজন সরকারপ্রধানের তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়াও কাজের অবদানের জন্য তাকে নানা পুরস্কারে ভূষিত করা হয় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে।

একটি অস্থিতিশীল বড় জনসংখ্যার দেশকে বিনিয়োগ বান্ধব, সাম্প্রদায়িকতামুক্ত,উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলে শেখ হাসিনা যে প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা ও দেশপ্রেমের পরিচয় দিয়েছেন তা একক কোন রাষ্ট্রনায়কের পক্ষে পৃথিবীর ইতিহাসে কখনো সম্ভব হয়েছিল কিনা আমার জানা নাই। শেখ হাসিনা আমার দেখা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী।

  • আশীষ দে: সাংবাদিক, কলামিস্ট।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত