শাহআলম সজীব

১৩ এপ্রিল, ২০২০ ২১:৩৫

তাহলে আমরা যাব কোথায়?

নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের সময়ে সরকারের গৃহীত নানা পদক্ষেপ ও দেশবাসীকে আশ্বস্ত করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সারাদেশের সর্বশেষ পরিস্থিতি জানতে বিভিন্ন সময়ে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলছেন জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগ মূলত দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের জনগোষ্ঠীর খবর জানতে মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনসহ জনপ্রতিনিধিদের মানুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে উদ্ধুব্ধ করার প্রয়াস। এইসব ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তথ্য পেয়ে থাকেন প্রধানমন্ত্রী, এবং সেইসব তথ্যে আলোকে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলো হালনাগাদ, বাস্তবউপযোগী করার প্রয়াস।

ধারাবাহিক এই একদিন ভিডিও কনফারেন্সে একদিন যুক্ত হলেন বরগুনার সিভিল সার্জন। প্রধানমন্ত্রী বললেন প্রত্যন্ত এলাকার জন্য নৌ অ্যাম্বুলেন্স দরকার। উত্তরে সিভিল সার্জন বললেন, সড়কপথ থাকায় নৌ অ্যাম্বুলেন্সের দরকার নেই।

হায়! মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চরাঞ্চল সম্পর্কে জানলেও জেলায় থাকা সিভিল সার্জন তা জানেন না! অথচ স্থানীয়ভাবে তাদের এক এলাকা থেকে আরেক এলাকা ঘুরে বেড়ানোর কথা। এক্কেরে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আবার যখন বললেন এতোগুলো বড় নদী যে জেলায় সেখানে তো নৌ অ্যাম্বুলেন্স দরকার। তখন সিভিল সার্জন বললেন হ্যাঁ, দিলে ভাল হয়। এই হলো অবস্থা?

আরেকবার সংযুক্ত বৃহত্তর সিলেটের একজন মাননীয় সংসদ সদস্য। তিনি বলা শুরু করলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি আমাদের এটা ওটা দিয়েছেন। কৃষি বিদ্যালয়ও দিচ্ছেন। ইতিমধ্যে মেডিকেল কলেজ দিয়েছেন। বিরক্ত হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বললেন এসব বাদ দেন। করোনা নিয়ে বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে উনার তুলে ধরার কথা ছিল করোনা মোকাবেলায় কী কী লাগবে সেগুলো তুলে ধরা। তিনি বলতে পারতেন উনার নিজ জেলায় করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য ল্যাব লাগবে। টেস্টিং কিট লাগবে। আইসিইউ লাগবে। অথবা বলতে পারতেন সিলেটে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের জন্য সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালকে যে বিশেষভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে সেটার কথা এবং ওই হাসপাতালে কিছু ঘাটতি থাকলে তা তুলে ধরা।

এবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হলে নড়াইলের সাংসদ মাশরাফি বিন মুর্তজা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে জানালেন আমার হাসপাতালে আইসিইউ লাগবে, এটা ওটা লাগবে...।

কতটা দূরদর্শী বুঝতে পারছেন। এমনটাই হওয়ার কথা ছিল সবার। নিজ নিজ এলাকায় কী কী অসঙ্গতি আছে, কী কী ঘাটতি আছে, জনগণের সমস্যাদি এগুলো দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরবে স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিরা। এটাই হওয়ার কথা, অথচ সেটা হয়না অনেক জায়গায়?

এমন যদি হয় মাঠ পর্যায়ের প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও সিভিল সার্জনদের অবস্থা তাহলে আমরা যাব কোথায়?

আপনার মন্তব্য

আলোচিত