সিলেটটুডে ডেস্ক

০৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১৩:০৩

মাঙ্কিপক্স নির্ণয়ের পরীক্ষার অনুমোদন দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

মাঙ্কিপক্স সনাক্তের জন্য প্রথম পরীক্ষার অনুমোদন করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এতে এখন থেকে ফলাফল বেশ দ্রুত জানা যাবে। খবর বিবিসির।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, মারাত্মক এই ভাইরাস বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করতে দ্রুত সনাক্তকরণের পরীক্ষা সহায়তা করবে। নতুন এই পিসিআর পরীক্ষা ত্বকের ক্ষত স্থান থেকে সোয়াব নিয়ে এমপক্স ডিএনএ সনাক্ত করতে সক্ষম।

প্রথমে নমুনা নিয়ে পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগারে পাঠাতে হবে। এরপর ফলাফলে জন্য রোগী ও চিকিৎসকদের অপেক্ষা করতে হবে।

সীমিত পরীক্ষার কিট বা সরঞ্জাম এবং মাঙ্কিপক্ষে আক্রান্ত কি-না তা নিশ্চিত করতে বিলম্ব হওয়ায় আফ্রিকার জন্য ভাইরাসটি একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমপক্সের বা মাঙ্কিপক্ষ এর বিস্তার বিশ্বব্যাপী আরও বেড়ে চলছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, চলতি বছর আফ্রিকায় ৩০ হাজারের বেশি সন্দেহভাজন ঘটনার মধ্যে ৪০ শতাংশের মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহকারী মহাপরিচালক ইউকিকো নাকাতানি নতুন এই ডায়াগনস্টিক পরীক্ষাকে 'একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক' হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

তিনি বলেছেন, "গুণমান-নিশ্চিত করে এই চিকিৎসা পণ্যগুলোর সরবরাহ করে ভাইরাসের বিস্তার রোধ এবং জনগণকে, বিশেষ করে সুবিধাবঞ্চিত দেশগুলোকে সহায়তা করাই আমাদের লক্ষ্য।"

গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোতে সর্বাধিক সংখ্যক মাঙ্কিপক্ষে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। দেশটিতে মাঙ্কিপক্স টিকাদান কর্মসূচি শুরু করা হয়েছে ও সামান্য সাফল্য আসাও শুরু করেছে।

এমপক্স অত্যন্ত সংক্রামক একটি রোগ। চলতি বছরে দেশেটিতে এ রোগে কমপক্ষে ৬৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

ডিআর কঙ্গোতে ক্রমবর্ধমান মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের ঘটনা এবং প্রতিবেশী দেশ বুরুন্ডি, উগান্ডা ও রুয়ান্ডায় তা ছড়িয়ে পড়লে গত আগস্টে ডব্লিউএইচও বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল। যা দুই বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বার ছিল।

কিছু পশ্চিমা দেশ আফ্রিকায় এই রোগের প্রাদুর্ভাবের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য এমপক্স ভ্যাকসিনের ডোজ দেওয়া শুরু করে। তবে বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরো জরুরিভাবে টিকা দেওয়া প্রয়োজন।

আফ্রিকা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (আফ্রিকা সিডিসি) অনুসারে, রুয়ান্ডায় গত মাসে প্রথম এমপক্স ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করেছে। নাইজেরিয়ায় টিকাদান অভিযান আগামী মঙ্গলবার চালু করা হবে বলে আফ্রিকা সিডিসি জানিয়েছে।

এমপক্সের দুটি প্রধান ধরন রয়েছে; যথা: ক্লেড-১ এবং ক্লেড-২। ক্লেড ১ আবার দুটি ধরনের; ক্লেড ১-এ এবং ক্লেড ১-বি।

ক্লেড ১-বি ভেরিয়েন্ট কঙ্গোতে পাওয়া গেছে এবং এটি কেনিয়া, রুয়ান্ডা ও উগান্ডায়ও দেখা গেছে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই নতুন ভ্যারিয়েন্টটি সংক্রমণ বাড়াচ্ছে।

ক্লেড ১ আগে সাধারণত সংক্রমিত বুশমিট খেয়ে ছড়াতো। কিন্তু ক্লেড ১-বি এখন মানুষ থেকে মানুষে ছড়াচ্ছে, বিশেষ করে যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে। এছাড়াও শারীরিক স্পর্শ কিংবা বিছানা বা তোয়ালের মাধ্যমেও এটি ছড়াতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এমপক্স প্রধান ড. রোসামুন্ড লুইস বলেছেন, "এটি বেশি সংক্রামক কিনা তা আমরা জানি না, কিন্তু এটি সহজে ছড়াচ্ছে।"

ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গো এবং সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে ক্লেড ১-এ ভেরিয়েন্ট পাওয়া গেছে। এছাড়া, ক্লেড-২ ক্যামেরুন, আইভরি কোস্ট, লাইবেরিয়া, নাইজেরিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকায়ও পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে ডব্লিওএইচও।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত