০৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ১২:১১
মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনের সূর্যসন্তান বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ৪৭তম শাহাদত বার্ষিকী আজ। ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যশোরের গোয়ালহাটি গ্রামে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ সমরে শাহীদ হন তিনি। যশোরের শার্শা উপজেলার কাশিপুর গ্রামে তাকে সমাহিত করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধি দেওয়া হয়।
১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নূর মোহাম্মদ শেখ নড়াইল সদর উপজেলার মহিষখোলা (বর্তমানে নূর-মোহাম্মদ নগর) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। নূর মোহাম্মদ বাল্যকালেই পিতা মোহাম্মদ আমানত শেখ এবং মা জেন্নাতুন্নেছাকে হারান।
১৯৫৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসে (ইপিআর) যোগদান করেন। দীর্ঘদিন দিনাজপুর সীমান্তে চাকরি করে ১৯৭০ সালের ১০ জুলাই যশোর সেক্টরে বদলি হন। তিনি ল্যান্স নায়েক পদে পদোন্নতি পান।
১৯৭১ সালে যশোর অঞ্চল নিয়ে গঠিত ৮নং সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। যুদ্ধ চলাকালীন যশোরের শার্শা থানার কাশীপুর সীমান্তের বয়রা অঞ্চলে ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদার নেতৃত্বে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন। এ সময় এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৮নং সেক্টরে কমান্ডর ছিলেন কর্নেল (অব) আবু ওসমান চৌধুরী এবং সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মেজর এসএ মঞ্জুর।
১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যশোরের গোয়ালহাটি ও ছুটিপুরে পাকিস্তান বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে মৃত্যুবরণ করেন। গুলিতে সহযোদ্ধা নান্নু মিয়া গুরুতর আহত হলে নূর মোহাম্মদ শেখ হাতে এলএমজি এবং কাঁধে আহত সাথীকে নিয়ে শত্রুপক্ষের দিকে গুলি ছোড়েন। হঠাৎ পাকবাহিনীর মর্টারের আঘাতে তার হাঁটু ভেঙে যায়। তবুও তিনি গুলি চালান। এক সময় মৃত্যুকোলে ঢলে পড়েন। যশোরের শার্শা থানার কাশীপুর গ্রামে তাকে সমাহিত করা হয়।
মহান এই বীরশ্রেষ্ঠ’র সম্মানার্থে নড়াইল শহর থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে নূর মোহাম্মদ মাধ্যমিক স্কুল এবং কলেজ প্রাঙ্গণে নূর মোহাম্মদ শেখ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর নির্মিত হয়েছে। যশোরের শার্শা উপজেলার কাশীপুর গ্রামে তাকে সমাহিত করা হয়। স্কুল থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে বাড়িতে নির্মিত হয়েছে স্মৃতিসৌধ।
তার স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেসা, ছেলে গোলাম মোস্তফা কামাল ও তিন মেয়ে আছেন।
আপনার মন্তব্য