সিলেটটুডে ডেস্ক

০৬ মার্চ, ২০২১ ০১:৩৮

বাংলাদেশ থেকে চলে যাচ্ছে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান

বাংলাদেশে নিজেদের শাখা কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে যাচ্ছে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান (এনবিপি)। ব্যাংকটির কান্ট্রি হেড জানান, ঋণগ্রহীতাদের কাছ থেকে প্রায় ৯৮ শতাংশ ঋণের টাকা উঠাতে না পারায় তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

পাকিস্তানের সরকারি মালিকানাধীন এনবিপি ব্যাংকের সারা বিশ্বের ২১ টি দেশে শাখা ও ২০ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের সম্পদ রয়েছে। বাংলাদেশে এনবিপি ব্যাংক তাদের কার্যক্রম শুরু করে ১৯৯৪ সাল থেকে। দেশের তিনটি শহরে তাদের চারটি শাখা এবং ৮ হাজার গ্রাহক রয়েছে।

বিভিন্ন ঋণগ্রহীতা, বিশেষ করে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প খাতের জন্য নেয়া ঋণগুলো ফেরত না পাওয়ায় সমস্যার পড়েছে দেশে এনবিপি-বিডি নামে পরিচিত এই ব্যাংক। গত বছরের ডিসেম্বরে এনবিপি-বিডির বকেয়া ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৬৪ মিলিয়ন ডলার যা তাদের মোট ঋণের ৯৭ দশমিক ৭ শতাংশ।

ব্যাংকের সিলেট শাখার চীফ এক্সিকিউটিভ মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, "আমরা কিছু অনিবার্য কারণে সিলেট শাখা বন্ধ করে দিতে যাচ্ছি। পাকিস্তানে প্রধান কার্যালয় থেকে এর অনুমোদন দিয়ে দেয়া হয়েছে। ব্যাংক বন্ধের প্রক্রিয়া চলছে এখন।"

গত ছয় বছরে ব্যাংকটি তাদের ২৩ মিলিয়ন ডলারের মত ঋণের টাকা উদ্ধারের জন্য ঋণগ্রহীতাদের বিরুদ্ধে ১৪৩ টি মামলা করেছে। কামরুজ্জামান আরো জানালেন যে বর্তমানে ব্যাংকটি মামলা-মোকদ্দমা ছাড়াই আরো ঋণ উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে এবং গত বছরেই আরো ঋণ দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের মূল লক্ষ্য এখন নন-পারফর্মিং ঋণগুলো উদ্ধার করা। সেই সাথে তারা অলটারনেটিভ ডিসপিউট রিসল্যুশন (এডিআর) প্রক্রিয়ায় যাবেন যেন ক্লায়েন্টদের সাথে বসে আপসে সমস্যা সমাধান করা যায়।

কামরুজ্জামান বলেন, "সুখবর হচ্ছে এই যে আমরা এডিআর প্রক্রিয়ায় কিছু ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। ব্যাংক এক্ষেত্রে তাদের খেলাপি থেকে ছাড় দিবে এবং বিনিময়ে তারা নতুন ব্যাংকিং ক্রেডিট রেকর্ড পাবে। তবে আগের রেকর্ড না ক্লিয়ার করা পর্যন্ত তারা অন্য কোন ব্যাংক থেকে ভবিষ্যতে আর ঋণ নিতে পারবে না।"

ইব্রাহিম কম্পোজিট টেক্সটাইল মিলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মনজুরুল আলম এনবিপি-বিডি থেকে ৮ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়েছিলেন ২০১২-১৩ অর্থবছরে। তিনি জানান ব্যাংকের সাথে তার সমঝোতা চলছে।

আলম বলেন, "আমরা সমঝোতা চলাকালে ব্যাংককে ১৬ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার দিতে চেয়েছি। এই প্রস্তাব আমরা ২০১৯ এর ডিসেম্বরে দিয়েছিলাম যখন করোনার জন্যে কোনো কাজ ছিলনা আমাদের। ব্যাংকের সাথে তিন সপ্তাহ আগে আমার কথা হয়েছে এবং তারা আমাকে নিশ্চয়তা দিয়েছে যে তারা আমাদের সাথে সমঝোতার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করবে।"

আপনার মন্তব্য

আলোচিত