সিলেটটুডে ডেস্ক

১২ জুলাই, ২০২৩ ১৯:১০

এক দফা দাবিতে ১৮ জুলাই সারাদেশে বিএনপি পদযাত্রা

সরকারের পদত্যাগ, সংসদের বিলুপ্তি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা ও খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তির এক দফা দাবিতে আগামী ১৮ জুলাই ঢাকাসহ সারাদেশে পদযাত্রা কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।

বুধবার (১২ জুলাই) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি আয়োজিত ‘যুগপৎ ধারায় বৃহত্তর গণআন্দোলনের ১ দফা যৌথ ঘোষণার সমাবেশ’-এ এই দাবি ও কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এসময় তিনি সরকারের পদত্যাগ চেয়ে বলেন, ‘এখনও সময় আছে এই ঘোষণার পরপরই পদত্যাগ করুন। অন্যথায় পালাবার পথও খুঁজে পাওয়া যাবে না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ১৮ জুলাই ঢাকা এবং সারা দেশের মহানগরী ও জেলা পর্যায়ে পদযাত্রা করা হবে। এ পদযাত্রার মধ্য দিয়েই তাদের পতনকে আরও ত্বরান্বিত করা হবে।

ঢাকা মহানগরীতে পদযাত্রা হবে দুই দিন। ১৮ জুলাই সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত পদযাত্রা করা হবে। ১৯ জুলাই সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত উত্তরার আবদুল্লাহপুর থেকে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক পর্যন্ত পদযাত্রা হবে বলে জানান মির্জা ফখরুল।

এর আগে সমাবেশে বক্তব্যে বিএনপি নেতারা রক্ত দিয়ে হলেও আওয়ামী লীগ সরকারের অধীন নির্বাচন হতে না দেওয়ার ঘোষণা দেন। তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করলেই কেবল নির্বাচন হবে।

আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বুধবার বেলা দুইটায় এ সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, ‘রক্ত দিয়ে হলেও আমরা এবারের নির্বাচন প্রতিহত করব।’ দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে চায় না বলে দাবি করেন বিএনপির এই নেতা। সে কারণে আওয়ামী লীগের আজকের সমাবেশে মানুষ নেই বলে দাবি করেন তিনি।

বিএনপি নেতা আবদুস সালাম বলেন, ‘গত ১৪-১৫ বছরে শেখ হাসিনা কোনো কথা শোনেননি। তাই ওনার এখন কোনো কথা বলারও দরকার নাই।’ তিনি বলেন, সরকারের কিছু কর্মকর্তা এখনো আওয়ামী লীগের ভাষায় কথা বলেন। তিনি তাদের সতর্ক করেছেন।

এ সরকারের অধীন কোনো নির্বাচন হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদিনও। সমাবেশে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলেই নির্বাচন হবে। প্রধানমন্ত্রী আপনাকে যেতেই হবে।’

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা দাবি করেন, তাদের আজকের সমাবেশে নেতা–কর্মীদের উপস্থিতি প্রমাণ করেছে যে আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায়ঘণ্টা বেজে গেছে। বিএনপির চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলন কর্মসূচি শুরুর পর থেকে ১৭ নেতা-কর্মী নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে বরকতউল্লা বলেন, ‘এ জন্য আপনাদের বিচার হবে।’

আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে লুটপাটের রাজত্ব বানিয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তিনি বলেন, ‘এ সরকারকে আর ক্ষমতায় রাখা যায় না।’ প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে শামসুজ্জামান বলেন, ‘আপনি নিজে ঠিক করবেন, নাকি আমরা ঠিক করে দেব; আপনাকে যেতেই হবে। এরশাদ থাকতে পারেননি, আপনিও থাকতে পারবেন না।’

নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচনের দাবি আদায়ের প্রত্যয় জানিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জাহিদ হোসেন বলেন, সব শ্রেণি–পেশার মানুষ আজ রাজপথে নেমে এসেছে।

এর আগে সকাল থেকেই দলের নেতা-কর্মীরা সমাবেশস্থলে জড়ো হতে থাকেন। দুপুর ১২টার মধ্যেই বিএনপির নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণে ভরে যায় সমাবেশস্থল। নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত রাখতে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে তৈরি করা মঞ্চে গান পরিবেশন করা হয়। ফাঁকে ফাঁকে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতারা বক্তব্য দিতে থাকেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত