সিলেটের গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলায় তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন সমশের মবিন চৌধুরীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।

সোমবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে দুটি উপজেলা সদরে পৃথক দুটি বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে নেতা-কর্মীরা এ ঘোষণা দেন। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা সমশের মবিনের কুশপুতুল পোড়ান।

সাবেক কূটনীতিক সমশের মবিন চৌধুরী এক সময় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০১৫ সালের ২৮ অক্টোবর তিনি বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেন। পরে ২০১৮ সালের অক্টোবরে তিনি বিকল্প ধারায় যোগ দেন। সম্প্রতি তৃণমূল বিএনপির প্রথম সম্মেলনে সমশের মবিন চৌধুরী দলটির চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব নেন।

গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলার নিয়ে গঠিত সিলেট-৬ আসন তার নিজের নির্বাচনী এলাকা। এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। গত নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন ফয়সল আহমদ চৌধুরী।

বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সম্প্রতি ৭১ টিভিতে ‘এডিটর গিল্ডস’ নামক গোলটেবিল বৈঠকে সমশের মুবিন চৌধুরী গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারের স্থানীয় বিএনপি এবং দলটির নেতা ফয়সল আহমদ চৌধুরী সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেন। এতে ক্ষুব্ধ বিএনপি দলীয় নেতাকর্মীরা সোমবার গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে পৃথক বিক্ষোভ মিছিল এবং প্রতিবাদ সভা করেন।

গোলাপগঞ্জ বিএনপির সভাপতি নোমান উদ্দিন মুরাদ সমাবেশে বলেন, “আমার জানা মতে, ফয়সল আহমদ চৌধুরীর সঙ্গে ওনার (সমশের মবিন চৌধুরী) কোনো ফোনালাপ হয়নি এবং এর কোনো সুযোগও নেই। কারণ ফয়সল আহমদ বিএনপির একজন নিবেদিতপ্রাণ নেতা এবং তিনি কখনও দলছুট বিশ্বাসঘাতকদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেন না।”

নোমান উদ্দিন মুরাদ আরও বলেন, “পানি ঘোলা করে অশুভ ফায়দা হাসিলের পাশাপাশি ফয়সল আহমদ চৌধুরীর জনপ্রিয়তা নষ্ট করতে সরকারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী সমশের মবিন চৌধুরী এই বিষয়ের অবতারণা করেছেন।”

গোলাপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান উজ্জ্বলের পরিচালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সহসভাপতি আশফাক আহমদ চৌধুরী, মাহবুবুর রহমান ফয়সল ও গোলাম কিবরিয়া, বিএনপি নেতা আব্দুল জলিল, শাহজাহান আহমদ, তানজিম আহমদ, কামাল আহমদ।

অপরদিকে, বিকালে বিয়ানীবাজারে পৌর বিএনপির সভাপতি জসিম উদ্দিন জুয়েলের সভাপতিত্বে ও বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিছবাহ উদ্দিনের পরিচালনায় একই বিষয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছরওয়ার হোসেন তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন সমশের মবিন চৌধুরীকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, “ক্ষমা না চাইলে তাকে সর্বাবস্থায় প্রতিরোধ করা হবে এবং এ থেকে উদ্ভূত যে কোনো পরিস্থিতির জন্য সমশের মবিনকেই দায়ী থাকতে হবে।”

সভায় আরও বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, পৌর বিএনপির সহসভাপতি নজরুল ইসলাম, ফয়েজ আহমদ, সায়েক আহমদ চৌধুরী, নাজিম উদ্দিন, হোসেন আহমদ, ইরাদ চৌধুরী, আব্দুর রাজ্জাক।

বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, একসময়ে বিএনপির রাজনীতিতে থাকা সমশের মবিন চৌধুরী সরকারের দালালি করার জন্য রাজনীতি থেকে অবসর নেন। কিছুদিনের মধ্যেই বিকল্প ধারায় যোগ দেন। সমশের মবিনের বাড়ি গোলাপগঞ্জ উপজেলায়। তাই তিনি সিলেট-৬ আসন থেকে নির্বাচন করতে আগ্রহী। তবে এখানকার মানুষ তাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তার মিথ্যাচারে বিএনপির কোনো ক্ষতি হবে না।