নিজস্ব প্রতিবেদক

০৯ অক্টোবর, ২০২৫ ০০:২৫

বেহাল সিলেট-ঢাকা সড়ক, আন্দোলনের ডাক আরিফের

সিলেটের যোগাযোগ ব্যবস্থা দীর্ঘদিন ধরেই নাজুক অবস্থা। সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের সংস্কার কাজে ধীরগতির কারণে প্রতিদিনই লেগে থাকে দীর্ঘ যানজট। রেলপথের অবস্থাও নাজুক। ফলে এই অঞ্চলের যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ। এই দুর্ভোগ লাঘবে সরকারেরও তেমন উদ্যোগ নেই।

এর প্রতিবাদে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী।

বুধবার রাতে এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,   সিলেটের যগোযোগ ব্যবস্থা খুবই নাজুক। ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দীর্ঘদিন ধরেই চলাচলের অনুপযোগী। এটির সংস্কার কাজেও কোন গতি নেই।

তিনি বলেন, মানুষের কষ্টের একটা সীমা আছে, সময়ের একটা ব্যাপার আছে। বছরের পর বছর ধরে এই দুর্ভোগ চলতে পারে না। সংস্কার কাজ চলমান অবস্থায় বিকল্প কি ব্যবস্থা। ট্রেনের ব্যাপারেও কোন সুখবর নেই। সরকারের পক্ষ থেকে এসব ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেই।

আরিফ বলেন, রাস্তা খারাপ হওয়ায় সিলেটে পণ্য আসতে আসতে দাম অনেক বেড়ে যায়। ফলে এখানকার মানুষদের বাড়তি দামে নিত্যপণ্য কিনতে হচ্ছে। এসব মানা যায় না।

আরিফ বলেন, আমাদের প্রিয় বৃহত্তর  সিলেটের  যোগাযোগ ব্যবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে চলমান দুর্ভোগ, অনিয়ম ও চরম নৈরাজ্য আজ অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। জনগণের মৌলিক অধিকার — সহজ, নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল যাতায়াতের অধিকার — আজ মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এই অব্যবস্থাপনা ও অবিচারের প্রতিবাদে, এবং একটি যথাযথ উন্নয়নমূলক, স্বচ্ছ ও টেকসই যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার দাবিতে আমরা সবাই একত্রিত হবো একটি ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠে।

এই লক্ষ্যে আগামী রোববার (১২ অক্টোবর) সকাল ১১টায় নগরের কোর্ট পয়েন্টে প্রতিবাদ সমাবেশ আহ্বান করেছেন তিনি। এতে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন আরিফ।

এরআগে মঙ্গলবার একটি সমাবেশে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক ও রেলযোগাযোগের দুরবস্থায় ক্ষোভ প্রকাশ করে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আজকে দেখুক্কা সিলেট থাকি ঢাকা যাইতে কত সময় লাগে। সাইফুর রহমানে (সাবেক অর্থমন্ত্রী) করি দিছলা। তিন ঘণ্টা, চার ঘণ্টায় সিলেট থাকি ঢাকা আইছি। ১৭ বছরে এমন উন্নয়ন হইছে, উন্নয়নের মহাসড়কে এখন ঢাকা থাকি সিলেট আইতে ১২ ঘণ্টা লাগে, ১৫ ঘণ্টাও লাগে। এই অবস্থা চলতে দেওয়া যায় না।’

দ্রুত এই অঞ্চলের যোগাযোগব্যবস্থার সংস্কারকাজ শুরু না হলে সিলেটবাসীকে নিয়ে কঠোর আন্দোলনেরও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

সিলেটের সাবেক এই মেয়র বলেন, ‘চিটাগাং সুন্দর করবা, উত্তরবঙ্গে ব্রিজ অইব আর সিলেটরে যা খুশি করবা, ইটা আর হতে দেওয়া যায় না। সিলেটের কথা আইলেই অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ, সিলেটের কথা আইলেই সরকারের কাছে টেকা নাই। তো হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ কইরা এই সব ব্রিজ, কালভার্ট অন্যান্য অঞ্চলে হয় কীভাবে? চিটাগাং স্বর্গ বানাউক্কা, আমার কোনো আপত্তি নাই; আরও অঞ্চলেও হোক, খুশি হইমু। কিন্তু আমরা সিলেটিরা বাদ যাব কেন?’

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুরবস্থার প্রসঙ্গ টেনে আরিফুল হক বলেন, ‘আজকে একটা অসুস্থ রোগী নিয়া যাওয়া যায় না, রোগী রাস্তায় মারা যাইতাছে। ট্রেনের অবস্থা সেইম (একই)। সারা বাংলাদেশে নতুন নতুন ট্রেন, কম্পার্টমেন্ট (বগি)। সিলেটে টাডা (বজ্রপাত) পড়ছে! রেল কর্তৃপক্ষ এবং যোগাযোগ মন্ত্রণালয়রে কই, রাস্তা পুনর্নির্মাণ হওয়ার আগ পর্যন্ত স্পেশাল দুইটা ট্রেন বরাদ্দ করা হোক ঢাকা-সিলেটে এবং নতুন কম্পার্টমেন্ট দেওয়া হোক। এখানে (সিলেট রেলস্টেশন) যারা আছে, তারা কম্পিউটারে আগে টিকিট নেয়গি, পরে বেশি দামে বেচত চায়। এনতান (তাদের) পেছনে আমরা জনগণ থাকমু, ইনশা আল্লাহ। তানতানরেও ধরমু। পাবলিক ডিমান্ড না মানলে আন্দোলন হইব এবার।’

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘সড়ক, রেলপথের দুরবস্থার সুযোগ পাইয়া এখন বিমানে ৩ হাজার টাকার টিকিট ১২ হাজার টাকা করতাছে। এমন মোরগা পাইছে আমরার সিলেটি হকলরে, যা খুশি তা-ই করতাছে। বিমান কর্তৃপক্ষ যদি এইটার সমাধানে ব্যবস্থা না করে, তানতান বিরুদ্ধেও আমরা জনগণ ব্যবস্থা নিমু। আমরার রাস্তা দিতে হইব ঠিক করি, বিমানের ভাড়া কমাইতে হইব।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত