নিজস্ব প্রতিবেদক

০৩ এপ্রিল, ২০২০ ২২:০৮

কোনো গাইডলাইন বুঝি না, সকলের পিপিই পরা উচিত: এমপি রতন

গত বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) নিজ এলাকায় করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) সম্পর্কে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করেন সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন। এসময় তার পরনে ছিলো ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই)।  

যদিও গত ৩১ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, 'পিপিই সবার জন্য না। যারা ডাক্তার, যারা করোনা রোগীদের সেবায় নিয়োজিত এবং নার্স শুধুমাত্র তারা পিপিই পরবেন। সবাই পিপিই পরতে গিয়ে যারা ডাক্তার উনারাই ঠিকমতো পিপিই পাচ্ছেন না। এখন থেকে পিপিই পরা কাউকে দেখলে তাকেই হাসপাতালে চিকিৎসা করার জন্যে পাঠানো হবে।'

প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের পর পিপিই পরে সাংসদের লিফলেট বিতরণের ছবি নিয়ে শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা।

এ ব্যাপারে শুক্রবার যোগাযোগ করা হলে সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন হোসেন রতন বলেন, সকলেরই পিপিই পরা উচিত। আমরা যারা জনগণের সঙ্গে মিশে কাজ করি তাদের অবশ্যই এটা পরা উচিত।

রতন বলেন, আমার পরনে যেটি ছিলো সেটি সরকারি পিপিই না। সরকারি পিপিই চিকিৎসাকর্মীদের জন্য। আমার পরনেরটি এখন যে কোনো দোকানে পাওয়া যায়। পাঁচশ' টাকার মতো দাম।

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার আমার সাথে প্রশাসনের লোকজন ছিলো। সেনাবাহিনী ছিলো। এলাকার অনেকে ছিলো। সাংসদ হিসেবে অনেক লোক আমার কাছে আসে। তাছাড়া আমি যেহেতু ঢাকা থেকে এসেছি তাই আমি নিজেও আক্রান্ত হতে পারি। ফলে সকলের সুরক্ষার জন্যই আমার পিপিই পরা প্রয়োজন ছিলো।

প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন বলেছিলেন তখন চিকিৎসাকর্মীদের পিপিইর সঙ্কট ছিলো। এখন আর সঙ্কট নেই।

এদিকে, গত ১৫ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সহযোগিতায় ‘করোনাভাইরাস ২০১৯ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) এর যুক্তিসঙ্গত ব্যবহার’ মর্মে একটি নির্দেশনা প্রচার করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

নির্দেশনায় বলা হয়, বিশ্বব্যাপী পিপিই তথা স্বাস্থ্য সেবা দাতাদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামের ঘাটতি রয়েছে এবং এ পরিস্থিতিতে জরুরি ভিত্তিতে দেশের স্বাস্থ্য সেবাদাতাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সঠিক নিয়মে যৌক্তিকভাবে সামগ্রীসমূহ ব্যবহার করতে হবে।

এই নির্দেশনার ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সাংসদ রতন বলেন, কোনো গাইডলাইন-ফাইডলাইন বুঝি না। সবার পিপিই পরা উচিত। স্বাস্থ্যমন্ত্রীরও পিপিই পরা দরকার। আমরা যারা পাবলিকলি কাজ করি তাদের সবার পিপিই পরা দরকার। গতকালই (বৃহস্পতিবার) আমি আমার এলাকায় একটা রোগি দেখতে গিয়েছি। তার সর্দি-কাশি ছিলো। এ কারণে ডাক্তররা পর্যন্ত কাছে যাচ্ছে না। পুরো গ্রাম দূরে সরে গেছে। কিন্তু আমাদের তো মানুষের কাছে যেতে হয়। মানুষকে সেবা দিতে হয়। আমি চাই যারাই পাবলিকলি কাজ করেন তাদের সকলেই পিপিই পরা উচিত।

তিনি এই প্রতিবেদককে উদেশ্য করে বলেন, আপনাকে সংবাদ সংগ্রহে বাইরে যেতে হয়। আপনারও পিপিই ব্যবহার করা উচিত।

বৃহস্পতিবারের লিফলেট বিতরণের বেশকয়েকটি ছবিতে দেখা যায়, সাংসদ রতনের পরনে পিপিই থাকলেও মুখে মাস্ক নেই। যদিও দেশের বিভিন্ন স্থানে মাস্ক না পরায় আইনশৃঙ্খলাবাহিনী সাধারণ নাগরিকদের হয়রানি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বলেন, আমার মুখে মাস্ক ছিলো। ওই ছবি তোলার সময় হয়তো কোনো কারণে মাস্ক খুলেছিলাম। এটা কি আর ২৪ ঘন্টা মুখে রাখা যায়, প্রশ্ন করেন রতন। 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত