স্পোর্টস ডেস্ক

০৮ অক্টোবর, ২০১৯ ১৬:২৯

লা লিগার দশক সেরা একাদশে যাদের রেখেছে ‘গোল’

ফুটবলের মৌসুমে নতুন একটা দশক অপেক্ষা করে আছে। ২০১০ এর দশক শেষ হতে চলেছে। ক্রীড়া বিষয়ক সংবাদ মাধ্যম গোল তাই স্পেনের সর্বোচ্চ পর্যায়ের ফুটবল লিগ লা লিগার এক দশকের সেরা একটি একাদশ গড়েছে। তাতে আক্রমণে রোনালদো, মেসি এবং অ্যান্থনিও গ্রিজম্যান জায়গা পেয়েছেন। আছেন পিকে-রামসোরা।

জ্যান অব্লাক (গোলরক্ষক): ২০১৪ সালে সবচেয়ে দামি গোলরক্ষক হিসেবে লা লিগায় আসেন ওব্লাক। প্রতি মৌসুমেই তিনি ধারাবাহিকভাবে পারফরম্যান্স করে গেছেন। স্লোভেনিয়ার এই গোলরক্ষক গেল চার মৌসুমে লা লিগার সেরা গোলরক্ষক হয়েছেন। ২০১৫-‌১৬ মৌসুমে তিনি ৩৮ ম্যাচে মাত্র ১৮ গোল হজম করেন। সব মিলিয়ে ভিক্টর ভালদেস, মার্ক টের স্টেগান এবং কেইলর নাভাসকে হটিয়ে লা লিগার দশক সেরা গোলরক্ষক হয়েছেন তিনি।

জেরার্ড পিকে (রক্ষণভাগ): সেন্ট্রাল ডিফেন্সে বার্সেলোনার জেরার্ড পিকে জায়গা পেয়েছেন। ম্যানইউ থেকে ২০০৮ সালে নিজের শহর বার্সেলোনায় ফেরেন তিনি। দলের অবিচ্ছেদ্য ফুটবলারে পরিণত হন। লা লিগায় এই সময়ে তিনি আটটি শিরোপা জিতেছেন। বার্সার রক্ষণভাগ অটুট রেখেছেন তিনি।

সের্গিও রামোস (রক্ষণভাগ): জিরার্ড পিকে বার্সেলোনার জন্য যেমন সের্গিও রামোস রিয়ালের জন্য তার থেকেও বেশি। তিনি এখন পর্যন্ত বিশ্বের সেরা সেন্ট্রাল ডিফেন্ডারদের একজন। রক্ষণেই তিনি শুধু অবদান রাখেন না। আক্রমণেও অবদান রাখেন। তাকে ছাড়া লা লিগার দশক সেরা একাদশের কথা ভাবাই যায় না।

দানি আলভেস (রক্ষণভাগ): ব্রাজিলের এই রাইট ব্যাক বার্সেলোনা পর্ব চুকিয়ে জুভেন্টাস, পিএসজি হয়ে দেশের লিগে খেলছেন। তারপরও তিনি লা লিগার শেষ দশ বছরের সেরা একাদশে আছেন। ২০০৮ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত বার্সায় খেলেছেন তিনি। বার্সার ট্রেবল জয়ে তার বড় অবদান। টেকনিক, শারীরিক শক্তি এবং গতি মিলিয়ে তিনি ছিলেন বার্সায় অনন্য। বার্সা আলভেসের বদলি এখনও ঠিক সেভাবে পায়নি।

মার্সেলো (রক্ষণভাগ): সেন্ট্রাল ডিফেন্স স্পেনের দখলে। রাইট এবং লেফট ব্যাক ব্রাজিলের দখলে। দু'জন করে বার্সেলোনা এবং রিয়ালের ফুটবলার। ২০০৭ সাল থেকে রিয়ালে খেলে যাচ্ছেন মার্সেলো। লেফট ব্যাকে তার জুড়ি মেলা ভার। রর্বাতো কার্লোসের পরে তাকে বিশ্বের সেরা লেফট ব্যাক ধরা হয়। ২০১১ সালে ম্যারাডোনা বলেন লা লিগার রোনালদো-মেসির পরে তৃতীয় সেরা ফুটবলার তিনি। রিয়ালের আক্রমণে তিনি অন্য মাত্রা যোগ করেন। লা লিগার দশক সেরা একাদশ তাই তাকে ছাড়া হয় না।

জাভি (মাঝমাঠ): পেপ গার্দিওয়ালা তাকে নিয়ে বলেছিলেন, বার্সার মাথা সে। লা লিগায় পাঁচশ'র বেশি ম্যাচ খেলেছেন জাভি। তাকে লা লিগা তথা বিশ্ব ফুটবলের দক্ষ এবং স্মার্ট মিডফিল্ডার বলা হয়। ২০১৫ সালে বার্সা পর্ব চুকিয়ে কাতারের লিগে চলে যান জাভি। তারপরও তার লা লিগার দশক সেরা ফুটবল একাদশে থাকা আটকায়নি জাভির।

লুকা মডরিচ (মাঝমাঠ): মিডফিল্ডে রিয়াল মাদ্রিদের লুকা মডরিচের মতো ক্লাসিক এবং পরিপূর্ণ মিডফিল্ডার কমই দেখা যায়। টটেনহ্যাম থেকে ২০১২ সালে রিয়ালে আসেন তিনি। দু'বার লা লিগার সেরা মিডফিল্ডার হয়েছেন। তার মাঠ দাপিয়ে বেড়ানোর ক্ষমতা, দূর থেকে গোল করা, গোল করানোর জন্য টনি ক্রুস এবং সার্জিও বুসকেটসকে হটিয়ে লা লিগার দশক সেরা মিডফিল্ডার হয়েছেন।

আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা (মাঝমাঠ): বার্সেলোনা একাডেমি থেকে উঠা আসা আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার পুরো ক্যারিয়ারই বলতে গেলে কেটে গেছে বার্সায়। বার্সার হয়ে ১৬ বছর খেলেছেন তিনি। ধারাবাহিকতা ছিল তার মূল শক্তি। বার্সেলোনার তৃতীয় ফুটবলার হিসেবে (ম্যারাডোনা, রোনালদিনহো) রিয়াল দর্শকদের থেকে অভিনন্দন পেয়েছেন ইনিয়েস্তা। তিনি তাই সেরা একাদশে জায়গার অন্যতম দাবিদার।

লিওনেল মেসি (আক্রমণভাগ): ২০০৪ সাল থেকে বার্সেলোনায় খেলছেন তিনি। বার্সার এমনকি লা লিগায় গোলের রেকর্ডটা মেসিময়। দশক সেরা একাদশে তিনি জায়গা পাবেন এটা অবধারিত। লা লিগার শুধু দশক সেরা নয়, ইতিহাস সেরা একাদশ গড়া হলে মেসিকে বাদ দেওয়া কঠিন হবে। তর্কসাপেক্ষে অসম্ভব।

ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো (আক্রমণভাগ): রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে নয় বছর খেলেছেন তিনি। রিয়ালের হয়ে তিনি চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছেন টানা তিনটি। পাঁচ বছরে চারটি। কিন্তু একাদশ তো গড়া হচ্ছে লা লিগার পারফরম্যান্স বিবেচনা করে। রোনালদো সেখানে এই নয় বছরে মাত্র দুটি লিগ জিতেছেন। কিন্তু মেসি-রোনালদো মিলে যে গেল দশকে লা লিগা জমিয়ে রেখেছেন তার কী হবে। রোনালদোর সঙ্গে মেসিও আছেন লা লিগার দশক সেরা একাদশে। তাকে লা লিগার ইতিহাস সেরা একাদশে নিতেও হয়তো আপত্তি নেই অনেকের।

অ্যান্থনিও গ্রিজম্যান (আক্রমণভাগ): ফ্রান্স তারকা ২০০৯ থেকে লা লিগায় খেলছেন। রিয়াল সোসিয়েদাদের পর অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ মাতিয়েছেন তিনি। মেসি-রোনালদোর ছায়ার ঢেকে থাকা তারকা ভাবা হয় গ্রিজুকে। তাকে তাই মেসি-রোনালদোর সঙ্গে রাখা হয়েছে সেরা একাদশে এবং আক্রমণের অগ্রভাগে। বেনজেমা-সুরায়েজকে অনেকে তার চেয়ে এগিয়ে রাখবেন। তবে গোলের বিচারে এই দুই স্ট্রাইকারের চেয়ে খুব একটা পিছিয়ে নেই গ্রিজম্যান।

দশক সেরা একাদশে নাম রাখা সম্ভব না হলেও গোল কর্তৃপক্ষ টনি ক্রুস এবং সার্জিও বুসকেটসের নাম উল্লেখ করে সম্মান জানিয়েছেন। তারকার ভিড়ে সেরা একাদশে রাখা হয়নি রাফায়েল ভারানে, ডিয়াগো গডিন, জর্ডি আলবাকে। সেকথাও উল্লেখ করেছে গোল। লা লিগার দশক সেরা দুই স্ট্রাইকার করিম বেনজেমা এবং লুইস সুয়ারেজও একইভাবে বাদ পড়ে গেছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত