সিলেটটুডে ডেস্ক

১৮ জুলাই, ২০১৬ ২০:৩৫

কুমিল্লায় নিখোঁজ ৮ যুবক, ৩ জনকে জঙ্গি সন্দেহ পুলিশের

গুলশানে জঙ্গি হামলার পর সারাদেশে নিখোঁজ যুবকদের নিয়ে চলছে আলোচনা, করা হচ্ছে তালিকা। এর মধ্যেই কুমিল্লার ৮ জন যুবকের নিখোঁজ থাকার তথ্য দিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন।

সোমবার কুমিল্লা জেলা আইনশৃংখলা কমিটির সভায় এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার।

তিনি জানিয়েছেন, এই যুবকদের মধ্যে তিনজনকে জঙ্গি হিসেবে সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়েছে, যাদের একজন আছেন পুলিশের নজরদারিতে। আরো অনেকে নিখোঁজ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গত শনিবার রাতে গ্রেপ্তার করা এক যুবকের পরিচালিত ‘রক্তিম দিগন্ত’ নামে ফেইসবুক আইডি থেকেও জঙ্গি যোগাযোগের পর্যাপ্ত তথ্য পেয়েছে বলে জানিয়েছে কুমিল্লা পুলিশ।

পুলিশ সুপার জানান, গত দুই মাসে ৮ জন জঙ্গিকে কুমিল্লা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে একজন ইস্ট ওয়েস্ট ইউনির্ভাসিটির ট্রিপল-ই বিষয়ে শেষ বর্ষের ছাত্র ও হিযবুত তাহরিরের সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়াজী (২৬)। সে ২০০৮ সালে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। পরে অনিয়মিত ছিল। মিয়াজী কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের আদ্রা ইউনিয়নের বড় তুঘুরিয়া গ্রামের মুস্তফা কামাল মিয়াজীর ছেলে। গ্রেপ্তারের পর তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

পুলিশ সুপার সভায় বলেন, ‘আমরা যাদের ধরেছি তাদের মূল বক্তব্য হচ্ছে ‘জিহাদ’। তাদের কাছে জিহাদে সাধারণ মানুষকে মারা কোন গুনাহর কাজ নয়।

জঙ্গিদের একটি অনলাইন পোস্ট উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, “আরেক জঙ্গি লিখেছে, আমার অনেক ইচ্ছা ছিল সামরিক বাহিনীতে যোগ দেয়ার। কিন্তু সে আশা পূরণ হলো না। মনে সুপ্ত ইচ্ছা যুদ্ধ করবো। সেই যুদ্ধ ইসলামের জন্য, আল্লাহর জন্য। কোন মানুষের মস্তিষ্ক প্রসূত সংবিধানের জন্য নয়। তাদের মূল বিষয় খিলাফত।”

তিনি জানান, তীক্ষ্ণ নজরদারির মাধ্যমে তারা জঙ্গি সংগ্রহ করে। তারা দেখে কোন যুবক বা কিশোর বিষন্নতায় ভূগছে। কে বাবা-মা থেকে দূরে আছে।

সভায় কুমিল্লা জেলা পরিষদের প্রশাসক আলহাজ মো: ওমর ফারুক অভিযোগ করে বলেন, “আমাদের অনেকেই কুমিল্লায় হেফাজতে ইসলামের অভিভাবক। হেফাজতের মিছিলে আমি তাদের দেখেছি। ঢাকায় এবং শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর হেফাজত ও জামায়াত কেউই কিন্তু নিন্দা জানায় নি।

সভায় কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো: হাসানুজ্জামান কল্লোলের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন ১০ বিজির কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল মো: মেহেদী, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সফিউল আহমেদ বাবুল, র‌্যাবের কমান্ডার মেজর মোস্তাফা কাওছার, লাকসাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট ইউনুছ ভূইয়া, দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজর (অব:) মোহাম্মদ আলী, সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার, পিপি মোস্তাফিজুর রহমান লিটন, এনএসআই-এর যুগ্ম পরিচালক মুজিবুর রহমান, হোমনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট আজিজুর রহমান মোল্লা, কুমিল্লা ইসলামিয়া আলীয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুল মতিন, কান্দিরপাড় জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা ক্বারী মো: ইব্রাহীম, চকবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম জিলানী, পূজা উদযাপন কমিটির উজ্জ্বল কুমার দে প্রমুখ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত