নিজস্ব প্রতিবেদক

০২ মে, ২০২৩ ০৪:৩১

‘নারীবিদ্বেষী’ কাদের সিদ্দিকীর খেতাব বাতিল চান তসলিমা নাসরিন

বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের সিদ্দিকীকে ‘নারীবিদ্বেষী’ আখ্যা দিয়ে তাঁর মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক খেতাব বাতিল চান নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন।

গত শুক্রবার টাঙ্গাইলের সখীপুরে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার কফিনে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনে (গার্ড অব অনার) ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) যাওয়ায় বাধা দেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।

এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। কাদের সিদ্দিকীকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে চরম অপমান করেছেন উল্লেখ করে উদ্দেশ করে তসলিমা নাসরিন লিখেন, মুক্তিযুদ্ধ শুধু বন্দুক হাতে নিয়ে যুদ্ধ নয়, মুক্তিযুদ্ধ বা মুক্তির জন্য যুদ্ধ একটি চেতনার নাম।

তসলিমা নাসরিন লিখেন, টাঙ্গাইলের সখীপুরে কাদের সিদ্দিকী যে কুৎসিত, জঘন্য এবং বর্বর কাজ করেছেন, তাতে তাঁর বঙ্গবীর বা মুক্তিযোদ্ধা খেতাব বাতিল হয়ে যাওয়া উচিত। মুক্তিযুদ্ধ শুধু বন্দুক হাতে নিয়ে যুদ্ধ নয়, মুক্তিযুদ্ধ বা মুক্তির জন্য যুদ্ধ একটি চেতনার নাম। তিনি এই চেতনাকে চরম অপমান করেছেন। তিনি প্রমাণ করেছেন তিনি একজন নিকৃষ্ট নারীবিদ্বেষী লোক। তাঁর ধর্মান্ধতা তাঁকে বিবেকহীন করেছে, তাঁর বিবেকহীনতা তাঁকে কট্টর রাজাকারদের মতো স্বাধীনতাবিরোধী করেছে। দেশের স্বাধীনতা ধুসর হতে থাকে দেশে যদি নারীর স্বাধীনতা না থাকে।

তসলিমা নাসরিন আরও বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধার কফিনে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শন করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে কাদের সিদ্দিকী বাধা দিয়েছেন, কারণ সেই কর্মকর্তাটি নারী। বাংলাদেশের আইনই বলে উপজেলাগুলোয় কোনও মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু হলে উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, তিনি নারী হোন বা পুরুষ হোন, রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শন করবেন। ফারজানা আলমকে তো জানাজা পড়তে দেওয়া হয়নি তিনি নারী বলে, তিনি নারী বলে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শন করতেও দেওয়া হয়নি। অবশ্য সেদিন তিনি মুক্তিযোদ্ধার কফিনে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শন করেছেন, তবে কাদের সিদ্দিকী বিদেয় হওয়ার পর। জানাজার আগে ফারজানা আলমকে উদ্দেশ করে কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, ''নারীদের জানাজায় শামিল হওয়া ও গার্ড অব অনার দেওয়ার সুযোগ নেই। তিনি এখানে এসে মুক্তিযোদ্ধার লাশের সঙ্গে বেয়াদবি করেছেন।'' এত বড় অপমান করার পরও তিনি ক্ষান্ত হননি, ফারজানা আলমকে এক দিনের মধ্যে সখীপুর থেকে সরিয়ে নেওয়ার আদেশ দিয়ে এসেছেন।

‘‘দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন বলে কাদের সিদ্দিকীকে এক সময় শ্রদ্ধা করতাম। শ্রদ্ধা উবে গেছে দেশের নাগরিক নারীদের বিরুদ্ধে তাঁর অমানবিক, অরুচিকর, অশোভন, অসভ্য আচরণ দেখে। এই প্রথম তিনি তাঁর নারীবিদ্বেষ প্রকাশ করেননি, এর আগেও বহুবার করেছেন।’’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত