সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক

২৭ জুন, ২০১৬ ১৭:১১

‘বিদায় মেসাইয়া মেসি, বিদায় নমস্য পা যুগল’

কোপা আমেরিকার ফাইনালে চিলির বিপক্ষে পরাজয়ের পর বিশ্বসেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি আর্জেন্টাইন ফুটবল থেকে বিদায় নেওয়ার ঘোষণায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মেসির ভক্ত, অনুরাগীরা ফিরে এসো মেসি আকুতি জানাচ্ছেন।

ফুটবলযাদুতে বিশ্বকে বুঁদ করে ক্ষণজন্মা এ ফুটবলারের বিদায়ে বিশ্বফুটবল যে বেশি ধাক্কা খেলো তা নিয়ে সন্দেহ নেই কারও। তবে আশার কথা জাতীয় দলের জার্সি ছাড়লেও ফুটবল ছাড়েন নি মেসি; ক্লাব ফুটবল খেলবেন তিনি।


মেসির আর্জেন্টাইন ফুটবল থেকে বিদায়ের ঘোষণার পর ফেসবুকে রাজীব রাসেল লিখেন, আমিও অবসরে যাচ্ছি। আন্তর্জাতিক ফুটবলের দর্শক হিসেবে অবসর নিলাম। কেবল নিজের দেশের খেলাগুলোই দেখবো, এর বাইরে ফুটবল বলে কিছু নেই। ফুটবলে আরেকজন মেসি জন্মালে অবসর ভাঙ্গার কথা ভেবে দেখা যেতে পারে। যদিও, মেসিরা বছর বছর জন্মায় না!

২০০৫ সালে জাতীয় দলে অভিষেক হওয়ার পর ২৯ বছর বয়সী মেসি ১১২টি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন। সেমি-ফাইনালে দুর্দান্ত ফ্রি-কিকে যুক্তরাষ্ট্রের জালে বল পাঠিয়ে গাব্রিয়েল বাতিস্তুতার রেকর্ড ভেঙে করেছেন দেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৫টি গোল। তিনি বার্সেলোনার হয়ে ২৮টি শিরোপা জিতেছেন।


ফেসবুকে সৌম্য তাপাদার লিখেন, আন্তর্জাতিক ফুটবল কে বিদায় জানালেন লিওনেল মেসি!!!!! কিন্তু হায়!!!! মেসির আজন্ম আফসোস থাকবে সময়ের শ্রেষ্ঠ প্লেয়ার হয়েও নিজের দেশের হয়ে একটা কাপ জিততে পারেননি!!!!

ব্লগার হিল্লোল দত্ত লিখেছেন, "লিওনেল মেসি, মাই লাভ, মাই ফেভ, মাই হার্ট, ইউ ব্রোক মি এন্ড মাই হার্ট ওয়ন্স আগেইন লাইক এভরিবাডি এলস আই লাভড, এন্ড এডোর্ড, এন্ড ডিজায়ার্ড, এন্ড সাপোর্টেড, এন্ড ক্রাইড ফর।

কোনো বিশেষ দলের প্রতি সমর্থন ছিল না, মেসির ক্রীড়ানৈপুণ্যের কাছে প্রত্যাশা ছিল, আশেপাশের কাছের, আপন, অজস্র আর্হেন্তাইন সমর্থকদের আশার, কান্নার, আবেগের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ছিল।

নক্ষত্রের পতন দেখলাম নিজের চোখে, বেদনাদায়ক এক সাক্ষ্যপ্রমাণ!

কিন্তু কবি তো বলেই গেছেন, প্রেম ধীরে মুছে যায়, নক্ষত্রেরও মরে যেতে হয় একদিন, হয় নাকি?

জানি আমি এখন, মরে যেতে হয় সবারই, সবকিছুরই।

পরাজয়ই সত্য সবার ওপরে। আর বেদনা, বেদনা, বেদনা, হে পরাজিত সম্রাট!"


উল্লেখ্য, গত বছরে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ও দুই কোপা আমেরিকার ফাইনালে উঠেছিল লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। কিন্তু শিরোপা জয় করতে পারে নি। এবারের টুর্নামেন্টে তিনি তার স্বদেশি গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতার রেকর্ড গোলকে অতিক্রম করে নতুন আর্জেন্টাইন রেকর্ড গড়েন।  

ফারুক সাদিক লিখেন,

লিওনেল মেসির দলে তিনি একা নন। স্বদেশী আলফ্রেডো দে স্তেফানো কিংবা হাঙ্গেরিয়ান ফুটবলের অমর নায়ক ফেরেঙ্ক পুসকাসদের পাশে পাচ্ছেন মেসি। নিজেদের সময়ে এঁরা সকলেই বিশ্বের অপ্রতিদ্বন্দ্বী শ্রেষ্ঠত্বের আসনে আসীন ছিলেন, আছেন। বিশ্ব ফুটবলের ইতিহাসের মহান সব কিংবদন্তির নিয়তি বোধহয় এভাবেই লিখিত হয়- মহাবিশ্বের শ্রেষ্ঠতম প্রতিভা হয়েও দেশের জন্যে কোনও বড় মঞ্চের শিরোপা অর্জনের ক্ষেত্রে পৌনঃপুনিক ব্যর্থতা বোধহয় লিখিত থাকে।

আপনাকে মনে রাখবে বিশ্ব ফুটবল, লিওনেল মেসি। নাকি আপনিই মনে থাকবেন? যেভাবেই হোক- নীল সাদা জার্সিতে আপনাকে উচ্ছ্বসিত দেখার আক্ষেপ থেকে যাবে বহুদিন। আপনার জন্যে শুভকামনা।

সর্বশেষ ১৯৯৩ সালে আর্জেন্টিনা জিতেছিল কোপা আমেরিকা কাপ। তখন বাতিস্তুতার জোড়া গোলে তারা মেক্সিকোকে হারায়।  

ফুটবলে যদি কোন দলে সাপোর্ট করতে হয় আর্জেন্টিনাকেই করব এমন উচ্চারণ করে সঞ্জয় দে লিখেন, আমার কাছে আর্জেন্টিনাই সেরা দল, আমার কাছে মেসিই পৃথিবীর সর্বকালের সেরা ফুটবলার। পেলে যে যুগে ফুটবল খেলেছেন তখনকার ফুটবল আজকের দিনের মত ছিলনা, এটা স্বীকার করতেই হবে। আরে ভাই কম্পিটিটিভ ফুটবল তো শুরু হল ৯০ এর দশকে, যা আজ পরিণত। এখন মেসিকে আটকানোর ছক থাকে প্রতিপক্ষ কোচের ল্যাপটপে। মেসি এভাবেই খেলে, সব ভেঙ্গেচুরে।

কেবল কি লিওনেল মেসি কিংবদন্তীর অনেক লাতিন গ্রেট কোপা আমেরিকা জিততে পারেন নি। ফুটবল-সম্রাট পেলে জিতাতে পারেন নি ব্রাজিলকে। আর্জেন্টাইন অপর গ্রেট ডিয়েগো ম্যারাডোনা ১৯৭৯, ১৯৮৭ ও ১৯৮৯ তিনবার কোপায় খেলেও শিরোপা জেতাতে পারেন নি দলকে।

কাজল দাস লিখেছেন,

আমি যদি জীবনে কোন দিন লিওনেল মেসির সাথে দেখা করতে পারি তাহলে তাঁকে বলতাম -মেসি তোমার জায়গা আমি হলে এতো আফসোস করতাম না, কারণ 'রোদন ভরা বসন্ত'' নামের একটা গান আমাদের জানা আছে, আমরা এও জানি , জীবন এক 'বিপন্ন বিস্ময়' । এখানে অনেক কিছু জিতে ও না জেতার তীব্র গাঢ় বেদনা বুকের ভেতরে নক্ষত্রের নীচে জেগে উঠে।

বিদায় মেসাইয়া মেসি।
বিদায় নমস্য পা যুগলকে তোমার।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত