আরিফ জেবতিক

৩১ জুলাই, ২০১৯ ১৬:৩৫

কেউ দয়াকরে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে বুঝান

এক মাতালকে আদালতে তোলা হয়েছে। বিচারক জিজ্ঞেস করলেন, 'তুমি কি জানো, তোমার অপরাধ কী?' মাতাল বলল, 'নো আইডিয়া।'
বিচারক বললেন, ' মদ খাওয়ার জন্য তোমাকে এখানে ধরে আনা হয়েছে।"
মাতাল বলল, ' ওহ, তাই নাকি! তা দেরি কেন, বোতল-গ্লাস আনতে বলুন, শুরু করে দেই।'

তো এই কৌতুকের মতোই হচ্ছে আমাদের অনেক নিয়োগপ্রাপ্ত লোকজনের অবস্থা। এদেরকে সম্ভবত তার কাজের কোর অবজেক্টিভ বুঝিয়ে দেয়া হয় না।

আমার মনে আছে, রানা প্লাজার বিপর্যয়ের সময় কয়েকদিন তখনকার দুর্যোগ ও ত্রান মন্ত্রীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তিনি ছিলেন নিজের এলাকায়। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, 'আমি ঢাকায় গিয়ে কী করব? যা করার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেই তো করা হচ্ছে।'
আমরা দেশের বড় বিপর্যয় থেকে শুরু করে নায়িক নায়িকার সংসার রক্ষার জন্যও এখন প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হতে হয়। বাকিরা সম্ভবত কনফিউজড যে কেন তাঁদেরকে সরকারি বাড়ি-গাড়ি-বেতন-স্ট্যাটাস দিয়ে রাখা হয়েছে।

দেশ এখন ভয়াবহ ডেঙুর বিপর্যয়ে পড়েছে। সারাদেশে বন্যার পানি নামা শুরু করা মাত্র পানিবাহী রোগের প্রাদুর্ভাবে পড়বে গোটা দেশ। এই সময়ে আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মালয়েশিয়া গেছেন বেড়াতে। কী পরিমান দায়িত্বজ্ঞানহীন অবস্থা!

এটা ঠিক যে মন্ত্রী আমাদেরকে স্যালাইন গুলেও খাওয়াবে না, মশা মারার কয়েলও কিনে দিবে না। কিন্তু এই দুর্যোগ সময়ে তার শারিরীক উপস্থিতি এবং সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়াটা অবশ্যই জরুরি। এটাকেই অর্গানাইজেশনাল লিডারশিপ বলা হয়। এ কারনেই এসব মন্ত্রী-সচিবের পদ সৃজন করা হয়েছে।

কিন্তু স্বাস্থ্যমন্ত্রী হয়তো আদালতের সেই লোকটার মতোই ভুল ভেবেছেন। তিনি হয়তো ভেবেছেন, 'স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য মন্ত্রী করা হয়েছে' এই কথার অর্থ তার নিজের স্বাস্থ্য রক্ষা করার কথা বলা হয়েছে।

কেউ তাকে দয়াকরে বুঝান, তাকে আসলে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দেখভাল করার জন্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহিত)

আরিফ জেবতিক: লেখক।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত