১৭ ফেব্রুয়ারি , ২০২৩ ১১:৩৬
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও লন্ডনে অমর একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানমালায় রয়েছে– ২৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার প্রভাতফেরি ও শিশু কিশোরদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এমনটা জানিয়েছেন একুশের প্রভাতফেরি আয়োজন পরিষদ, লন্ডন যুক্তরাজ্যের আয়োজকগণ।
এবছর ২৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকাল দশটায় লন্ডনের আলতাব আলী পার্কের শহীদ মিনারে প্রভাতফেরী ও শিশু কিশোরদের অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ব্রাডি আর্টস সেন্টারে দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত শিশু কিশোরদের অংশগ্রহণে, শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত হবে সাংস্কৃতিক পর্ব।
বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩) একুশের প্রভাতফেরি আয়োজন পরিষদ, লন্ডন যুক্তরাজ্যের উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পরিষদের সদস্য সচিব জামাল আহমদ খান। এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন আহবায়ক লোকমান হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু মুসা হাসান ও শাহরিয়ার বিন আলী।
লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের কার্যালয়ে বিলেতের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সবাইকে ভাষার মাসের শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে পরিষদের সদস্য সচিব জামাল আহমদ খান বলেন, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি অনেক রক্তের বিনিময়ে আমরা বাংলা ভাষাকে আমাদের মাতৃভাষা হিসেবে রক্ষা করতে পেরেছি। আমাদের ত্যাগ ও অর্জনের স্বীকৃতি স্বরূপ অমর একুশে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে বিশ্বের সকল ভাষাভাষী মানুষ পালন করছে।
বিলেতের বেড়ে উঠা নব প্রজন্মসহ অপরাপর বহু ভাষাভাষী মানুষের মাঝে অমর একুশের গৌরবোজ্জ্বল সংগ্রাম গাঁথা ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যকে সামনে রেখে ২০১৬ সালে বিলেতে প্রথমবারের মতো আমরা একুশের প্রভাতফেরি আয়োজন করে এই পরিষদ। ঐ সময় বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের যুক্তরাজ্য শাখা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে এবং বিলেতে ক্রিয়াশীল মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল সামাজিক সাংস্কৃতিক রাজনৈতিক সংগঠনের সমন্বয়ে গড়ে উঠে একুশের প্রভাতফেরী আয়োজন পরিষদ। তারই ধারাবাহিকতা আজও অব্যাহত রেখেছি আমরা। প্রতিবছর আমাদের এই উদ্যোগের সাথে আপনাদের সহযোগিতায় আমরা কৃতজ্ঞ।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, বিগত ৭ বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও আমরা লন্ডনের আলতাব আলী পার্কে অবস্থিত শহীদ মিনারে অমর একুশের ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর কর্মসূচি নিয়েছি। ঐতিহ্য অনুযায়ী ২০ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে অর্থাৎ রাত ১২টা এক মিনিটে আলতাব আলী পার্কের শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো হয়ে আসছে। যেহেতু মধ্যরাতে দূর দূরান্ত থেকে অনেকেই আসতে পারেন না, বিশেষ করে শিশু কিশোররা আসতে পারে না, তাই গত সাত বছর যাবত আলতাব আলী পার্কের শহীদ মিনারে রাতের আয়োজনের পাশাপাশি সকালবেলা প্রভাতফেরী পালিত হয়ে আসছে। প্রচলিত রীতি অনুযায়ী একুশের দিন ভোরে প্রভাতফেরী হওয়ার কথা থাকলেও বিলেতের আবহাওয়া ও শিশু-কিশোরদের স্কুলের বিবেচনায় আমরা ২/৪ দিন পিছিয়ে প্রভাতফেরী করে থাকি। অর্থাৎ প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারির পরের শনি অথবা রোববার প্রভাতফেরী অনুষ্ঠিত হয়। এবছর প্রভাতফেরী ও শিশু কিশোরদের অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে ২৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকাল দশটায় লন্ডনের আলতাব আলী পার্কের শহীদ মিনারে।
এরপর ব্রাডি আর্টস সেন্টারে দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত শিশু কিশোরদের অংশগ্রহণে এবং বিলেতের বিভিন্ন শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
একুশের প্রভাতফেরী ও শিশু-কিশোরদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাঙালির মাতৃভাষা রক্ষার আন্দোলন এবং ইউনেস্কো ঘোষিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরা হবে নতুন প্রজন্ম এবং অন্যান্য ভাষাভাষীর মানুষের কাছে। পরিবেশন করা হবে অমর একুশের গান এবং দেশাত্মবোধক গান। আপনাদের মাধ্যমে আমরা একুশের চেতনায় উজ্জীবিত বিলেতের সকল প্রগতিশীল সংগঠন ও ব্যক্তিকে শিশু-কিশোরদের সাথে নিয়ে ২৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার প্রভাতফেরী এবং শিশু-কিশোরদের সাংস্কৃতিক সমাবেশে যোগদান করার আহবান জানাচ্ছি ।
লিখিত বক্তব্য পাঠ শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন একুশের প্রভাতফেরী আয়োজন পরিষদ, লন্ডনের নেতৃবৃন্দ। সাংবাদিকদের পরামর্শ গ্রহণ করে তারা বলেন, আগামীতে এর আলোকে প্রভাতফেরী অনুষ্ঠান পালনের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর কাছে নতুন প্রজন্মের কাছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য ও বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি তুলে ধরা হবে।
আপনার মন্তব্য