হাসান মোরশেদ

০৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ১৪:২০

দাসপার্টির খোঁজে: খসড়া পর্ব- ৯

সর্বোচ্চ সম্মানের ঘোষণা দিয়ে ও রাষ্ট্র তাঁকে ভূষিত করেছে তৃতীয় খেতাবে, অথচ সহযোদ্ধাদের কাছে আজও তিনি শ্রেষ্ঠ বীর। বিশাল ভাটি অঞ্চলের বীরশ্রেষ্ঠ। হত্যা আর মরদেহ প্রদর্শনের ধরণে তাকে একাত্তরের যীশুও বলেন অনেকে। চুয়াল্লিশ বছর পর লেখক হাসান মোরশেদ বেরিয়েছেন শহীদ জগৎজ্যোতি দাস আর তাঁর দাসপার্টির খোঁজে। তাঁর সেই অনুসন্ধান ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে সিলেটটুডে২৪ ডট কম-এ। আজ প্রকাশিত হলো ৯ম পর্ব

১৯জুন। পহেলা রমজান। সকাল বেলা।
কাকৈলছেও, আজমিরীগঞ্জ, হবিগঞ্জ।
সেহরীর পর সামান্য কিছু সময় আমরা ঘুমিয়েছি। আটটার দিকে বের হই। আমি, নজরুল, তানিম ও ইলিয়াস। সামান্য পায়ে হেঁটেই নদীর পাড়ে আসি। কাল রাতে এসে পৌঁছে ছিলাম অন্ধকারে। এখন সকালের নরম আলোয় নদী দেখি, নদীবর্তী জনপদ দেখি।

শেরপুর থেকে কুশিয়ারা নদী আজমিরীগঞ্জ হয়ে এদিকে এসেছে ভেড়ামোহনা নামে। ভেড়ামোহনা নেমে গেছে আরো ভাটিতে। পেছন দিকে সুনামগঞ্জ, দিরাই হয়ে কালনী এসে মিশেছে। ভেড়ামোহনা ও কালনী মিশেছে আরেকটু ভাটিতে, সেখান থেকে মেঘনার মোহনা। ঐ মোহনা ধরে এগোলেই ভৈরব। আমরা দাঁড়িয়ে আছি কাকেলছৈও লঞ্চঘাটের কাছে। একসময় কাঠের ব্যবসার জন্য বিখ্যাত ছিলো এইঘাট।

নদী এখানে বিশাল। ইলিয়াস তার পরিচিত এক ইঞ্জিন নৌকা নেন। ছোট্ট একটা নৌকা। মাঝি ও ইলিয়াস হালের কাছে বসেন, আমি তাদের সামনে দাঁড়াই। নজরুল ও তানিম সামনের দিকে। নৌকা ভাসে ভাটিতে, আমরা পশ্চিমে নামতে থাকি- যতো ভাটিতে যাই ততো নদী আরো প্রশস্ত হতে থাকে। কিছুক্ষণ যাওয়ার পর নদীর বুকেই বিদ্যুতের খুঁটির লম্বা সারি দেখি উত্তর-পুর্ব কোণে। ইলিয়াসকে জিজ্ঞেস করি- কোন এলাকা? বলেন- জয়সিদ্ধি। ইটনা থানার জয়সিদ্ধি। বাংলার প্রথম র্যাং লার আনন্দমোহন বসুর বাড়ি, ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজ তার অবদান।

নৌকা এগুতে থাকে জয়সিদ্ধির দিকে, ইলিয়াস ফিরে যান একাত্তুরে। জগতজ্যোতি শহীদ হবার পর দাসপার্টির যুদ্ধ থামেনি। দল পুর্নগঠিত হয় আবার, নেতৃত্বে আসেন ইলিয়াসেরই বন্ধু জগন্নাথপুরের বেতাউকা গ্রামের সফিকুল হক চৌধুরী (বাচ্চু)। দাসপার্টির প্রথম দিকের সেকেন্ড ইন কমান্ড আলী আমজদ তখন আরেক দল নিয়ে তার নিজের এলাকা ধর্মপাশা-তাহিরপুরের দিকে যুদ্ধ করছেন।

বুকে গুলির ক্ষত আর প্রিয় কমান্ডার হত্যার প্রতিশোধ নিতে ইলিয়াস ও তখন ক্ষ্যাপাটে। টেকেরঘাট কিংবা শিলং যাননি চিকিৎসার জন্য, প্রতিশোধই তার উপশম তখন। এ সময় দাসপার্টি ঘাঁটি করে জয়সিদ্ধিতে। ইলিয়াস একটা গ্রাম দেখান বামে। নদী ও হাওর এখানে মিশে গিয়ে বিশাল আকার নিয়েছে। বলেন- ডিসেম্বর প্রথম দিকের এক সকালে জয়সিদ্ধি থেকে তাদের দল পায়ে হেঁটে এসে এম্বুশ করেছিলো এই গ্রামে।

শীতের নদী তখন শীর্ণ। একটা গানবোটে করে মিঠামইনের দিক থেকে আসছিলো তেরজন রাজাকারের এক সশস্ত্র দল। এই দলটাকে জীবিত অবস্থায় পাকড়াও করে হত্যা করা হয়েছিলো, তাদের গানবোট ডুবিয়ে দেয়া হয়েছিলো এখানে, সম্ভবত যে জায়গায় আমাদের নৌকা দাঁড়িয়ে ঠিক সেখানেই।

আমাদের নৌকা আরেকটু এগিয়ে বামে মোড় নেয়। জয়সিদ্ধি থেকে যায় ডানে। নৌকা ইউটার্ণ করে এগিয়ে যায়। এখানেই কালনী ও ভেড়ামোহনা মিশে গিয়ে আরেকটু ভাটিতে মেঘনা নাম নিয়েছে। আমরা মেঘনার দিকে না গিয়ে ভেড়ামোহনায় ফিরি- পেছনে কিশোরগঞ্জের ইটনা ও মিঠামইন, সামনে হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ। নরম একটা চরের মতো জায়গা, নৌকা থামে তবে নেমে দাঁড়ানোর মতো মাটি নেই। এখানে ইলিয়াস দেখান- পাক আর্মির রসদবাহী দুটো বার্জ তারা ডুবিয়েছিলেন। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই ভৈরব হয়ে সিলেটের দিকে যাচ্ছিলো। ভারত তখন স্বীকৃতি দিয়েছে বাংলাদেশকে, এদিকে ভারতীয় বোমারু বিমান উড়ছে। বার্জ দুটো লক্ষ্য করে বিমান থেকে বোমাবর্ষণ হলেও লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। মুক্তিযোদ্ধারা এরপর এগুলো দখল করে রসদ সামগ্রী গ্রামের লোকজনের মধ্যে বিতরণ করে গ্রেনেড লঞ্চার দিয়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ডুবিয়ে দেন। স্বাধীনতার পর বার্জ দুটো ঊত্তোলনের চেষ্টা করলে ও সম্ভব হয়নি।

আমাদের নৌকা এবার এগিয়ে চলে ফিরতি পথে কাকেলছৈও এর দিকে। যে ঘাট থেকে উঠেছিলাম এক সময়ে সেটা পেরিয়ে আরো পূর্বে উজানের দিকে। নদীর ডান পাশ ঘেঁষে নৌকা এগুতে থাকে। শাহপুর নামে একটা গ্রামে আমরা থামি। পাড় ধরে সারি সারি বাড়ি। ইলিয়াস একটা বাড়ি দেখান, হিন্দু বাড়ি- বলেন এই বাড়িটার সামনে পুকুর ছিলো, তখন ডিসেম্বরের দশ তারিখ সম্ভবত, নদীর পানি অনেক কম, পাড় শুকনো।

তারা ফিরছিলেন আজমিরীগঞ্জের দিক থেকে পায়ে হেঁটে নদীর পাড় ধরে। এসময় হঠাৎ শুনতে পান মিলিটারী গান বোটের আওয়াজ, পেছন থেকে এগিয়ে আসছে এদিকে। সম্ভবত মার্কুলীর দিক থেকে পালিয়ে ভৈরবের দিকে ছুটছে পাকিস্তান আর্মিদের নিয়ে। দ্রুত তারা নদীর পাড় ধরে এম্বুশ নেন। তিনি নিজে মেশিনগান নিয়ে অবস্থান নেন পুকুর পাড়ে। রেঞ্জের ভেতর আসা মাত্র শুরু হয় গুলি। পালিয়ে যাওয়ার সময় পাকিস্তান আর্মির দল ও ছিলো চুড়ান্ত রকম ডেসপারেট। শুরু হয় দুপক্ষের ভয়ংকর গুলি বিনিময়। ইলিয়াস হাত তুলে দেখান- এইদিকে গাছের একটা পাতা ও ছিলোনা, মিলিটারীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিলো।

আমরা ফিরে আসি কাকেলছৈও ঘাটে। ঘাট থেকে নেমে পায়ে হেঁটে এগোই বাজারের দিকে। টিপিক্যাল ভাটি এলাকার বাজার, দেখে মনে হয় সময় যেনো এখানে থমকে আছে। মাঝখানে সরু গলির মতো- বামপাশে সারিসারি দোকান নদীর উপর ঝুলে আছে। ডানে আরো কিছু। এখানে আমাদের সঙ্গী হন নূর মিয়া। জীর্ণ, ভাঙ্গাচুরা চেহারা, একটা ময়লা লুঙ্গী ও খয়েরী রংয়ের শার্ট গায়ে। মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধ করেছেন শেলা সাব-সেক্টরে। এসব এলাকায় দর্শনীয় কিছু নেই, বাজারটাই গুরুত্বপুর্ণ। রোজার প্রথম দিন, দোকানপাট তেমন খুলেনি- একজন বলেন চেয়ারম্যানের নির্দেশে এবার চা এর দোকান সব বন্ধ, দোকানীদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আমার কাছে অমুসলিমই মনে হয়।

বাজারগলির শেষ মাথা ঘুরে ফিরে আসার সময় ইলিয়াস দেখান- ঐ যে চেয়ারম্যান বসা। দেখি একটা পাকা দোকানের সামনে বয়স্ক একজন মানুষ উঁচু একটা চেয়ারে, তার দুই পাশে বেঞ্চে এবং পেছনে দাঁড়িয়ে আরো কিছু মানুষ। উপস্থিত সিদ্ধান্ত নেই এই চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলবো- যিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় ও এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। এগিয়ে যাই, সালাম দেই। খেয়াল করি তার চেয়ারটিই সবচেয়ে উঁচু সামনে আরো দু তিনটি চেয়ার তার থেকে নীচু। পাশে একটা বেঞ্চ, একটা চেয়ার। ঐ যে আরেকজন মধ্যবয়স্ক বসা।

ইলিয়াসই পরিচয় করিয়ে দেন- ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নুরুল হক ভুঁইয়া আর পাশের চেয়ারে বসা তার ভাই মিজবাহ উদ্দীন ভুইঁয়া, ইনি আজমিরীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। চেয়ারম্যান আমাদের বসতে বলেন- আমি তার থেকে নীচে চেয়ারে বসি সামনাসামনি। নজরুল একটা ক্যামেরা বের করে ছবি তুলতে থাকেন আর তানিম শুরু করেন ভিডিও। চেয়ারম্যান ও তার ভাই দুজনেই পরিচয় জানতে চান। ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কাজ করছি’ বলার পর জানতে চান ‘কোন মিডিয়া, কোন চ্যানেল’? দ্রুত এই প্রশ্ন এড়িয়ে যাই- কোন আইডেনটিটি কার্ড চেয়ে বসলে বিপদ। শুটিং চলছে- এমন আবহ তৈরী করে আমি চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞেস করি- ‘জনপ্রতিনিধি হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের সময় আপনার ভূমিকা কি ছিলো?’

কয়েক সেকেন্ডের জন্যতার প্রাচীন ভ্রূঁ কুঁচকে উঠলে ও সামলে উঠে ইলিয়াস ও নূর মিয়াকে দেখিয়ে বলেন- ‘এদেরকে তো আমিই যুদ্ধে পাঠাইছি’।

নূর মিয়া মাথা নীচু করলে ও ইলিয়াস প্রতিবাদ করেন – ‘ আমি আর বদিউজ্জামান সবার আগে গেছি নিজে নিজে’
চেয়ারম্যান তার শতভাঁজ মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করেন আর গলায় খ্যাক খ্যাক করে আওয়াজ তুলেন- ‘আহা এইসব বিতর্কের দরকার কী?’
আমি কথা চালিয়ে যাই
‘তখন কোন দল করতেন?’
-‘আমরা সারা জীবনই আওয়ামী লীগ, এই যে আমার ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি’
- দাসপার্টির কথা কিছু বলবেন?
- এরা যুদ্ধ করছে নানা দিকে। আমাদের এই দিকে অবশ্য তেমন কিছু না।

এইসময় কথা বলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, চেয়ারম্যানের ভাই মিজবাহ উদ্দীন। ইনি ইলিয়াসদের সমবয়সী কিন্তু যুদ্ধে যাননি। নজরুল ও তানিমের ক্যামেরার লেন্স ঘুরে তার দিকে।

- আমরা যুদ্ধের সাথেই ছিলাম। একবার কয়েকটা রাজাকার ঘেরাও করে ধরছি আমরা। ধরে এই দাসপার্টির হাতে তুলে দিছি, এরা তখন একটা খারাপ কাজ করছে।
- কী খারাপ কাজ?
- সবাইরে মেরে ফেলছে। মারার দরকার ছিলোনা। আশে পাশের গ্রামের মানুষ, অনেক মিনতি করছিলো
(এসময় পাশ থেকে একজন ফোঁড়ন কাটেন- সক্কলে মুসলমান ছিলো)
আমাদের মনোযোগ ছিলো মিজবাহউদ্দীনের দিকে। ইলিয়াসের উত্তেজিত গলা শুনে তার দিকে ফিরে তাকাই
- রাজাকারদের হাতে রাইফেল ছিলো কিনা?
-তা ছিলো।
- তাইলে এরা দেশের শত্রু ছিলোনা? এরা আমাদের মারতোনা? দাসপার্টির নিয়ম ছিলো দেশের শত্রু কাউরে মাটির উপর রাখা যাবেনা।

মেজবাহ উদ্দীন তবু অনঢ়- কাজটা ঠিক হয় নাই। সাথে তার সাঙ্গোপাঙ্গোরাও। ইলিয়াসের ভাই-ভাতিজা ও কয়জন উপস্থিত এই জটলায়। কন্ঠ ক্রমশ উত্তেজিত হয়। ইলিয়াস গর্জে উঠেন- ‘তোমরা সবাই পাকিস্তানের দালাল, পাকিস্তানের দালালেরা পাকিস্তানে ফিরে যাও’।
জটলায় পক্ষ বিপক্ষে গুঞ্জন বাড়তে থাকে।

ইলিয়াস ও নূর মিয়া বের হয়ে আসেন, আমরা ও তাদের সাথে সাথে। আমাদের পেছন পেছনে ঐ জটলার কিয়দংশ আসতে থাকে। ধারণা করি, এরা এলাকায় চেয়ারম্যানের বিরোধী পক্ষ। বয়স্ক কয়েকজন উচ্চকন্ঠেই বলেন- এরা আওয়ামী লীগে আসছে দেশ স্বাধীনের পরে, আগে তো দলাল ছিলো।

ইলিয়াসকে ভয়ংকর ক্ষিপ্ত দেখায়। আমরা তার পাশাপাশি হাঁটতে থাকি। হাঁটতে হাঁটতে নদীর পাড়েই একটা মাঠ। এই মাঠে মুক্তিযুদ্ধের পরে কাদের সিদ্দিকী এসে মুক্তিযোদ্ধাদের সভা করে গেছেন। ২০০১ এর নির্বাচনের আগে জনসভা করে গেছেন শেখ হাসিনা। আমরা সেই মাঠে আসি। কই থেকে যেনো কয়েকটা প্লাস্টিকের লাল চেয়ার ও আসে। আমাদের ঘিরে থাকেন উত্তেজিত জনতা।

ইলিয়াসের ফোন পেয়ে আসেন শাহ জামান। জেনারেল ওসমানীর মতো পাকানো গোঁফ ও দাড়িতে তাকে অন্যরকম দেখায়। ইনি ডাউকি/ তামাবিল সাব-সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন। যুদ্ধের আগে কৃষিকাজ করতেন, এখনো তাই করেন তবে এখন ভূমিহীন, নিজের জায়গা-জমি নেই আর।

আসেন মনোরঞ্জন দাস। ছোটখাট সাধারণ চেহারার মানুষ। জেলে সম্প্রদায়ের মানুষ, পরিবারের আর সবার মতোই নদী থেকে মাছ ধরতেন। পড়ালেখা করেননি। যুদ্ধ করেছেন ৩ নং সেক্টরে তেলিয়াপাড়ার দিকে।

যুদ্ধ শেষে ফিরে এসেছেন কিন্তু নিজের ভিটেমাটি আর ফিরে পাননি। এখনো মাছ ধরেন, থাকেন অন্যের বাড়িতে।

ইলিয়াস, নূরমিয়া, মনোরঞ্জন ও শাহজামাল- চার মুক্তিযোদ্ধার সাথে বসে গল্প করি, তাদের তখন এবং এখনকার গল্প শুনি। গ্রামের ক্ষমতাকাঠামোর ইতিবৃত্তটা বোঝার চেষ্টা করি। এরা সবাইই চেয়ারম্যানকে দালাল বলেন এবং অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগকে এই পরিবার দখল করে রেখেছে অথচ মুক্তিযুদ্ধের দুঃসময়ে তারাই ছিলেন আওয়ামী লীগের কর্মী। এই এলাকায় হিন্দু প্রাধান্য ছিলো কিন্তু ক্ষমতাবৃত্তের মানুষদের দাপটে অনেক হিন্দু পরিবারই এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে, বাকীরাও বিপদে আছে। তারা তাদের দুই প্রয়াত সহযোদ্ধা বদিউজ্জামান ও আরেকজনের জন্য আফসোস করেন। বলেন ওরা বেঁচে থাকলে তাদের সাহস আরো বেশি থাকতো।

কী জানি! তারা হয়তো কেবল তাদের গ্রামের পরিস্থিতিটাই বিবেচনা করেন আমি এই গ্রামের ছবি দিয়েই গোটা দেশের ক্ষমতাকেন্দ্রিক গভীর অসুখ টের পাই, এই অসুখ সহজে সারবার নয়। শেখ হাসিনা যখন নানা প্রতিকুলতা উপেক্ষা করে রাজাকারদের বিচার করছেন তখন তার দলের একটা উপজেলা সভাপতি একজন মুক্তিযোদ্ধাকে সরাসরি অভিযুক্ত করছেন- যুদ্ধকালীন সময়ে রাজাকারদের শাস্তি দেয়ার? এরকম মনোভাব পোষণ করেন কয়জন আওয়ামী লীগ নেতা- প্রান্তিক থেকে কেন্দ্রীয় পর্যায় পর্যন্ত? রাজাকারদের বিচার করার শেখ হাসিনার এজেন্ডা কী এরা সমর্থন করে? শেখ হাসিনা কোনদিন বিপদে পড়লে এই নেতারা তার পাশে দাঁড়াবে? নাকি হঠাৎ করে দৃশ্যপট বদলে গেলে ইলিয়াসের মতো যোদ্ধাদেরকেই এরা বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে।

জুমার নামাজের সময় হলে এরপর আমরা বিদায় নেই।

চলবে...

প্রাসঙ্গিক কয়েকটি ইউটিউব URL:
https://youtu.be/Jy_HIgxDIEQ

https://youtu.be/hxIVdvNmjec

https://youtu.be/hEJsOyTE_Zg

https://youtu.be/kmZP4KPbAws

https://youtu.be/VB9I0LeOk1c

 আগের পর্বের লিঙ্ক:

দাসপার্টির খোঁজে : খসড়া পর্ব-১

দাসপার্টির খোঁজে : খসড়া পর্ব-২

দাসপার্টির খোঁজে : খসড়া পর্ব-৩

দাসপার্টির খোঁজে : খসড়া পর্ব-৪

দাসপার্টির খোঁজে : খসড়া পর্ব-৫

দাসপার্টির খোঁজে : খসড়া পর্ব-৬

দাসপার্টির খোঁজে : খসড়া পর্ব-৭

দাসপার্টির খোঁজে : খসড়া পর্ব-৮

আপনার মন্তব্য

আলোচিত