২০ ফেব্রুয়ারি , ২০২০ ২১:২৫
নানা কারণে পর্যটকদের কাছে পছন্দের স্থান সিলেটের গোয়াইনঘাট। এখানকার পাহাড়, টিলা, চা বাগান এবং জাফলং, রাতারগুল, শ্রীপুর ও বিছনাকান্দির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিনিয়তই অসংখ্য পর্যটক এখানে ঘুরতে আসেন।
কালের বহু স্মৃতি, বহু স্থাপনা ও তার নির্মাণশৈলী আজও সিলেটের এ উপজেলার দিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যের মর্যাদা। নিসর্গের ছায়া ডাকা গোয়াইনঘাটে ঐতিহ্যের সাথে এবার আরেকটি দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্য হয়েছে গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজের শহীদ মিনার। দৃষ্টিনন্দন এই শহীদ মিনারটি দেখে যে কেউ মুগ্ধ হবেন। অপরূপ নান্দনিকতা আর ঐতিহ্য- এ দু’য়ের মিশেলে এটি নির্মিত হয়েছে।
নান্দনিকতা, আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে এই শহীদ মিনার। ধারনা করা হচ্ছে উত্তর সিলেটের চার উপজেলার মধ্য সবচেয়ে বড় শহীদ মিনার এটি। শহীদ মিনারটিতে চুড়ায় উপরে বসানো হয়েছে একটি রক্তিম সূর্য। মিনার আর বেদিগুলো দেখার মতো শৈল্পিক কারুকাজ লিপিবদ্ধ। কত টাকায় নির্মিত হয়েছে বৃহৎ ও দৃষ্টিনন্দন এই শহীদ মিনার এমন তথ্য পাওয়া না গেলেও ধারনা করা হচ্ছে শহীদ মিনারটি নির্মাণ ব্যয় হবে নূন্যতম ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা।
এবারই প্রথম বারের মতো বাংলাদেশের জনগণের গৌরবোজ্জ্বল একটি দিন একুশে ফেব্রুয়ারিতে এই শহীদ মিনারের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে যাচ্ছেন গোয়ানঘাটবাসী। ইতোপূর্বে গত ২৫ জানুয়ারি প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদকে সাথে নিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এ শহীদ মিনারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
জানা যায়, গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজের দৃষ্টি নন্দন শহীদ মিনারটি ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগ নিয়ে স্থাপন করেছেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ফজলুল হক। এ শহীদ মিনারিটি তৈরিতে তিনি সরকারি-বেসরকারি অর্থায়ন, এমনকি কারো অনুদান ছাড়াই স্থাপনাটি নির্মাণ করেছেন। তবে কেউ ইচ্ছে এটি নির্মাণে সহযোগিতা করতে চাইলে তিনি তাদের নিয়ে এগিয়ে নিয়েছেন শহীদ মিনারটি নির্মাণের কাজ।
এলাকাবাসীর কথা বলে জানা যায়, অধ্যক্ষ ফজলুল হকের দীর্ঘদিনের কর্মক্ষেত্র গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজ। এক সময় তিনি ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। এমনকি স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির একজন কর্মী হিসেবে তিনি এখনো কাজ করে চলেছেন।
নিজের আবেগ, ভালোবাসা আর স্মৃতিকে জাগ্রত রাখতেই কলেজ ক্যাম্পাসে এমন দৃষ্টিনন্দন শহীদ মিনার তৈরির চিন্তা মাথায় আসে জানিয়ে অধ্যক্ষ ফজলুল হক বলেন, ১৯৫২সালে রচিত রক্তাক্ত পটভূমি আমাদের হৃদয়ে দাগ কেটে থাকবে আজীবনভর। মায়ের ভাষা বাংলার জন্য আত্মদানকারী জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতিকে আমাদের প্রজন্মের কাছে জাগ্রত রাখার জন্যই গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজে শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নেই এবং আল্লাহর অশেষ কৃপায় এর কাজও ইতিপূর্বে শেষ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ভালোবাসা থেকে গড়ে তোলা এ শহীদ মিনারটির নির্মাণ ব্যয়ও তাই প্রকাশ থেকে বিরত রয়েছেন সীমান্ত জনপদের অন্যতম এই শিক্ষাবিদ।
আপনার মন্তব্য