২১ ফেব্রুয়ারি , ২০২০ ১৪:০৩
সিলেটের গোলাপগঞ্জে অধিকাংশ সরকারি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই কোনো শহীদ মিনার। নতুন প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে সাথে শতবর্ষি একেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকার বিষয়টি অনেককে অবাক করলেও বাস্তব চিত্র এটাই। কেউ বলছেন, ফান্ডের অভাব কেউবা বলছেন, ম্যানেজিং কমিটির এ ব্যাপারে গুরুত্ব নেই।
তাই শহীদ মিনার না থাকায় অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্থায়ীভাবে বাঁশ ও কলাগাছ দিয়ে মিনার নির্মাণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে থাকেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। উপজেলায় হাতে গোনা কয়েটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্থায়ী শহীদ মিনার থাকলেও সেগুলো সারা বছর পড়ে থাকে অযত্ন ও অবহেলায়। প্রতিবছর শহীদ দিবসের আগে ঘষামাজা করে শ্রদ্ধা জানানো হয় সেখানে।
উপজেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, গোলাপগঞ্জ উপজেলায় ১৮০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে এরমধ্যে মাত্র ১৯টি বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার রয়েছে। আর বাকি ১৬১ টি বিদ্যালয়ে নেই শহীদ মিনার। উপজেলায় ২৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১১টি স্কুল ও কলেজ, ৪টি ডিগ্রী কলেজ ও ১টি ইন্টারমিডিয়েট কলেজ সহ মোট ৪১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ২১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রয়েছে শহীদ মিনার। উপজেলার ১৪টি সরকারি মাদ্রাসার একটিতেও নেই শহীদ মিনার। এছাড়াও কিন্ডারগার্টেনগুলোর সিংহভাগেই নেই কোনো শহীদ মিনার।
সরকারি-বেসরকারি স্কুল-কলেজ ও মাদরাসায় শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনার নির্মাণে সরকারি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির অবহেলা, অর্থের অভাব ও প্রশাসনিক তদারকি না থাকায় প্রতিষ্ঠানগুলোতে শহীদ মিনার গড়ে তোলা হয়নি। এতে করে নতুন প্রজন্মের মধ্যে ভাষা আন্দোলনের চেতনা জাগছে না। তারা ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাসও জানতে পারছেন না।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার দেওয়ান নাজমুল আলম জানান, গোলাপগঞ্জ উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শহিদ মিনার নির্মাণে আমাদের কাছে কোন বরাদ্দ নেই। এ কাজে ম্যানেজিং কমিটি বা স্থানীয় বৃত্তশালীরা অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার অভিজিৎ কুমার পাল বলেন, গোলাপগঞ্জের মাধ্যমিক যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই, সেগুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রই বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোতেও শহিদ মিনার নির্মাণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মামুনুর রহমান জানান, প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা প্রয়োজন। কিন্তু সরকারি বরাদ্দ না থাকায় প্রত্যেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নির্মাণ সম্ভব হচ্ছেনা। উপজেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে সকল প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নির্মাণে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সকলের সমন্বয়ে শহিদ মিনার নির্মাণের কাজ অব্যাহত রয়েছে। পর্যায়ক্রমে প্রত্যেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নির্মাণ করা হবে।
আপনার মন্তব্য