
২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২২:৩৬
পরিস্থিতির ‘উন্নতি হলে’ ভিসা প্রক্রিয়াও ‘স্বাভাবিক হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা।
সোমবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে দানবীর রণদা প্রসাদ সাহার বাড়ির পূজামণ্ডপে সপ্তমী পূজার অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সবাইকে শারদীয় দুর্গোৎসবের শুভেচ্ছা জানিয়ে ভারতীয় হাই কমিশনার বলেন, “আমি এখানে সপ্তমীতে অংশ দিয়ে পূজা উদযাপন করতে এসেছি। ভারত ও বাংলাদেশ একইভাবে দুর্গা পূজা উদযাপন করে থাকে। আমরা আশা করি দুর্গা পূজা আমাদের দুই দেশ ও দেশের মানুষের জীবনকে আরো আলোকিত করে তুলবে, উজ্জ্বল ভবিষ্যত বয়ে আনবে।”
সাংবাদিকরা ভারতীয় ভিসার বিষয়ে প্রশ্ন করলে প্রণয় ভার্মা বলেন, “বাংলাদেশ থেকে ভারতে যেতে বর্তমানে মেডিকেল ভিসা চালু আছে এবং আমরা তা প্রচুর পরিমাণে দিচ্ছি। পরিস্থিতির উন্নতি হলে অন্যান্য ভিসা প্রক্রিয়া স্বাভাবিক হবে।”
জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর থেকে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে টানাপড়েন চলছে। সেই প্রেক্ষাপটে মেডিকেল বা জরুরি ভিসা বাদে অন্য কোনো ভিসা দিচ্ছে না ভারত সরকার। মেডিকেল ভিসাও দেওয়া হচ্ছে সীমিত আকারে।
এর মধ্যে আবার ৫ ভিসা আবেদন কেন্দ্রে সীমিত পরিসরে কাজ চলায় মেডিকেল ভিসাপ্রত্যাশীদেরও অনেকে পাচ্ছেন না ভিসা আবেদন জমা দেওয়ার অ্যাপয়েন্টমেন্ট।
বাংলাদেশ থেকে ক্যান্সার, হৃদরোগ, কিডনি রোগ, প্রজননস্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা নিতে ভারতে যেতেন অনেক বাংলাদেশি নাগরিক। প্রতিবছর কত লোক ভারতে চিকিৎসা নিতে যায় সেটির সঠিক পরিসংখ্যান বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাওয়া যায় না।
তবে ভারত সরকারের তথ্যের বরাতে দ্য প্রিন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালে বাংলাদেশিদের জন্য প্রায় ১৬ লাখ ভিসা ইস্যু করেছিল ভারত। এর মধ্যে সাড়ে ৪ লাখ ছিল মেডিকেল ভিসা। অনেকে ভ্রমণ ভিসায় গিয়েও ভারতে চিকিৎসা করিয়ে আসেন। ফলে চিকিৎসা নেওয়া বাংলাদেশিদের প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশি হওয়ারই কথা।
২০২৪ সালের অগাস্ট পর্যন্ত ১৫ ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশিদের জন্য ৮ লাখ ভিসা ইস্যু করা হয়েছিল, যার মধ্যে মেডিকেল ভিসা ছিল ২ লাখ।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন গত মার্চে বলেছিলেন, “ভারত যেকোনো কারণে হোক তাদের… ভিসাতো সার্বভৌম অধিকার, কোনো দেশ কাউকে যদি ভিসা না দেয় বা কোনো গোষ্ঠীকে ভিসা না দেয়, এ নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলা যায় না। এটা তাদের সিদ্ধান্ত।
“আমরা আশা করব, তারা সিদ্ধান্ত জানাবেন আমাদেরকে বা তাদের কার্যকলাপ বাড়াবেন, যাতে করে লোকজন যারা ভিসা চায় তারা ভিসা পেতে পারে।”
ভারতীয় হাই কমিশনার কুমুদিনী হাসপাতালে পৌঁছালে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। পরে তিনি হাসপাতালের মিউজিয়ামে চা চক্রে যোগ দেন।
সেখান থেকে ডিঙ্গি নৌকায় লৌহজং নদী পার হয়ে তিনি রণদা প্রসাদ সাহার বাড়ির পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন। এসময় ভারতেশ্বরী হোমসের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় নৃত্যানুষ্ঠান উপভোগ করেন।
অন্যদের মধ্যে কুমুদিনী হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজীব প্রসাদ সাহা, হাসপাতালের পরিচালক মহাবীর প্রতীক, মির্জাপুর থানার ওসি মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম, কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল হালিম, হাসপাতালের উপ-পরিচালক অনিমেষ ভৌমিক এসময় উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মন্তব্য