হে জ্বর, হৃদয়ের শিখা-অনির্বাণ

 প্রকাশিত: ২০২৫-০৯-১৮ ১৮:২১:৪৪

মাসুদ পারভেজ রূপাই:

জ্বর আসলে আমি কাবু হয়ে যাই
ভেতরটা অচিনপাখির মতো উদাস
খাঁচা ভেঙ্গে যাবে বলে উঠেপড়ে লাগে আমার আমি
কিন্তু জ্বর আমাকে আগলে রাখে,
যেন আমাকে ছেড়ে যাবেই না, এই তার পণ!

জ্বর এলে আমি ষোড়শী হয়ে যাই
আমার শরীরজুড়ে বেদনার সারাৎসার,
ফালি করে কাটা চাঁদ
সারাদিন লেপ্টে থাকার মতো আমার প্রেয়সী
হায় জ্বর: এতটা ভালোবাসা তো আমি চাইনি!

জ্বর এলে আমার কাঁপুনি ধরে, বুকের পাটাতন চিরে
সোজা বেরিয়ে পড়ে বিকালের কার্নিশ বেয়ে
হাড়কাঁপানো ব্যথায় আমি দ্রবীভূত হয়ে যাই—
যেমন করে আমি নিজের সবটা এলিয়ে দিই তোমার কাছে
চোখমুখের দিব্যি দিয়ে শুধু ভালোবাসার দোহাই দিয়ে!

শিখা অনির্বাণে কাবু হওয়া শরীর আমার বিদ্রোহ করে
যাতনার দিব্যি দিয়ে বলে, আমি তো অনেক ভালো—
তোমায় ছেড়ে যাবো না'কো কোনদিন!
অথচ আমার প্রেমিকারাও বলেছিল অমন কথা
তবুও তারা ছেড়ে চলে গেছে—
যেন বহমান নদীর মতো:
শান্ত, ধীর ও হৃদকম্পনবিহীন!

হে জ্বর, যেন প্রাচীন রাত
ঘনিয়ে আসা অন্ধকার
সময়ের ফসিল
আর আমি জ্বরের বাহুলগ্না
আমায় ছাড়া যেন চলেই না...

আমি দিব্যি দিই প্রেমিকার মুখের—
চোখের
চুলের
খোলাবুকের
তবুও আমাকে আগলে রাখার নামে নির্যাস শুষে নেই
হায়! সোনালি ডানার অম্লমধুর জ্বর;
আমাকে ছেড়ে যেতে তোমার এত ভয়!

অথচ আমাকে ছেড়ে গেছে প্রেমিকাদের ঔজ্জ্বল্য
আমার ভেতর ফাঁপা, শূন্যে আমার বাস—
আমাকে রেহাই দাও, আমি আর কারও প্রিয় হতে চাই না।

হে সর্বনাশা জ্বর: তোমায় দিলাম কমলাকান্তের ছুটি।

আপনার মন্তব্য