প্রকাশিত: ২০২২-০১-১৯ ২৩:২৪:০৪
নিজস্ব প্রতিবেদক:
‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২২’ উপলক্ষে ১১ দফা প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ লেখক পাঠক প্রকাশক ফোরাম।
বুধবার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী বিউটি বোর্ডিং-এ নবগঠিত সংগঠনটির প্রথম আনুষ্ঠানিক সভায় এই প্রস্তাব দেওয়া হয়। সভায় লেখক ও প্রকাশকদের পাশাপাশি পাঠকরাও উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ লেখক পাঠক প্রকাশক ফোরাম কর্তৃক উত্থাপিত ১১ দফা প্রস্তাবনাগুলো নিম্নরূপ:
১. সরকারি ঘোষণায় ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২২’ পনের দিন পিছিয়ে দেবার কারণে এবারের বইমেলায় প্রকাশকদের স্টল ও প্যাভিলিয়ন ভাড়া শতভাগ মওকুফ করতে হবে। মওকুফকৃত স্টল ভাড়াকেই প্রকাশকরা চলতি বছরের সরকারি প্রণোদনার অংশ হিসেবে ধরে নেবে।
২. স্বাস্থ্যবিধি মেনে 'নো মাস্ক নো এন্ট্রি' ও টিকা সনদ প্রদর্শন করে বইমেলায় প্রবেশ করার ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. স্বাস্থ্যবিধির প্রয়োজনে বইমেলায় একাধিক ‘প্রবেশ ও ‘বাহির পথ’ এর ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. বইমেলার সূচি করতে হবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা। ঢাকা শহর ও সারা দেশের মানুষের আগমন ও নির্গমন সুবিধার কথা চিন্তা করে এবং ভিড় এড়াতে বইমেলা সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সময় সূচি নির্ধারণ করতে হবে।
৫. বইমেলায় যাওয়া-আসার জন্য বইমেলা প্রাঙ্গণকে ঘিরে ঢাকা শহরের বিভিন্ন রুটে অন্তত ৫০টি বাস চালু করতে হবে। বিআরটিসি ও সিটি কর্পোরেশনকে সাথে নিয়ে বাংলা একাডেমি বইমেলার জন্য অতি সহজেই এধরনের বাস সার্ভিস চালু করতে পারবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
৬. ১৮-বছরের ঊর্ধ্ব বয়সীদের জন্য বইমেলায় প্রবেশের জন্য টিকেটের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এতে অনাহুত জনসমাগম এড়ানো যাবে। ছাত্র-ছাত্রীরা আইডি কার্ড প্রদর্শন করেই বইমেলায় প্রবেশ করতে পারবেন।
৭. প্যাভিলিয়ন চতুর্দিকে খোলা না রেখে ‘প্রবেশ ও বাহির পথ’ রেখে নির্মাণ করতে হবে। নির্দিষ্ট কিছু জোনের বদলে প্যাভিলিয়নের অবস্থান পুরো বইমেলা প্রাঙ্গণে সমানুপাতিক অবস্থানে দিতে হবে।
৮. বইমেলায় প্রবেশ ও বাহির পথে যথাযথভাবে শৃঙ্খলা রক্ষা করতে হবে। শাহবাগ, টিএসসি, দোয়েল চত্বর ও ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউটের প্রবেশ ও বাহির পথে ট্রাফিক ও পথচারীদের চলাচলের পথ সুগম রাখতে হবে। মেট্রো রেলের নির্মাণ স্থাপনা ও বিভিন্ন রোড ডিভাইডার ইত্যাদির সুশৃঙ্খল করতে হবে। বিশেষ দিবসগুলোতে (পহেলা ফাল্গুন, ভ্যালেন্টাইনস ডে, অমর একুশ, শুক্র ও শনিবার) আরও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার আওতায় শৃঙ্খলা রাখতে হবে। কারণ এই বিশেষ দিনগুলোতে সর্বোচ্চ সংখ্যক পাঠক ক্রেতা বইমেলায় আসেন। নিরাপত্তা ইস্যুকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।
৯. বইমেলায় খাবারের দোকান/ক্যান্টিন ছড়িয়ে ছিটিয়ে না দিয়ে নির্দিষ্ট জোনে দিতে হবে। টিএসসির গেট দিয়ে উদ্যানে প্রবেশের পর এলোপাথাড়ি খাবার ও কাবাব ইত্যাদির দোকান বরাদ্দ বন্ধ করতে হবে।
১০. বইমেলাকে শিশুবান্ধব বইমেলায় পরিণত করতে হবে। স্টল ও প্যাভিলিয়ন সজ্জা শিশুদের উপযোগী করে তৈরি করতে হবে। শিশুরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে মেলায় ঘুরতে পারে এবং স্টলে প্রদর্শিত বই সহজে দেখতে পারে সেভাবে স্টল সজ্জা করতে হবে।
১১. ‘লেখক বলছি’ মঞ্চকে আরও অংশগ্রহণমূলক করতে হবে। এজন্য কবি সাহিত্যিকদের কলেবর আরও বৃদ্ধি করতে হবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন জহুরুল ইসলাম বুলবুল, (প্রকাশক, পারফেক্ট পাবলিকেশন), আবুল বাশার ফিরোজ, (প্রকাশক, ধ্রুবপদ প্রকাশনী), আলমগীর সিকদার লোটন (প্রকাশক, আকাশ প্রকাশনী, সাবেক সভাপতি বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি), মাধব চন্দ্র দাস, (প্রকাশক, ত্রয়ী প্রকাশন), গফুর হোসেন (প্রকাশক, রিদম প্রকাশনা), রবীন আহসান (প্রকাশক, শ্রাবণ প্রকাশনী), সাইদ বারী, (প্রকাশক, সূচীপত্র), শিমুল আহমেদ (প্রকাশক, এক রঙা এক ঘুড়ি), রেজা ঘটক (কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা), শরফুজ্জামান (প্রকাশক, আকাশ বুক), নীলসাধু (কবি ও সম্পাদক, মেঘফুল), মাহবুবুর রহমান বাবু (প্রকাশক, বইপত্র প্রকাশন), বি এম কাউছার (প্রকাশক, শিলা প্রকাশনী), সাইফুজ্জামান (বইবাড়ি রিসোর্ট), শিহাব শাহরিয়ার (অনুবাদক ও লেখক), সাইফুল আলিম মৌ (লেখক ও কবি), গাজী মঞ্জুরুল আলম যুবরাজ (অনলাইন এক্টিভিস্ট), কারিমুন্নেসা পাপিয়া (লেখক), ইমিতিয়াজ আরিফ (কবি ও কথাসাহিত্যিক), আবুল হাসান আহমেদ (পাঠক), অনিক জাভেদ (লেখক) প্রমুখ।
আপনার মন্তব্য