বইমেলায় কবি মাহমুদুল হাসান মাছুমের ‘হিমঘরে পাখিসঙ্গ’

 প্রকাশিত: ২০২০-০২-০৬ ০০:৫০:৪৯

হৃদয় দাশ শুভ:

কবি মাহমুদুল হাসান মাছুম পাখিদের ভাষায় প্রাণ গেঁথে রাখেন আর কবিতার এক মায়াবি ঘোরে পাঠককে আটকে রাখেন তার শব্দ বয়ানে। পূর্ণতা ও অপূর্ণতার দুর্বোধ্য শিল্পের ভেতরে তিনি খুঁজে ফেরেন হিমালয়ের এক প্রাচীন বরফ কিংবা বিলুপ্ত নদীর চিত্রকর্ম, যেখানে কবি নিজেই হয়ে যান অন্ধকার বেষ্টিত হিমঘরের পাখি।

কবি মাহমুদুল হাসান মাছুমের 'হিমঘরে পাখিসঙ্গ' তৃতীয় কবিতাগ্রন্থ। 'সবুজ কবিতার ঋণ', 'বংশোদ্ভূত জোনাকির শহর' এর পর কবি জ্বালিয়েছেন তৃতীয় কোন গ্রন্থের আলোকবর্তিকা। ৭৯টি কবিতায় প্রেম-প্রকৃতি-রাজনীতি-আত্মজিজ্ঞাসা ও প্রহেলিকার এক চিত্রায়নের অনবদ্য সৃষ্টি 'হিমঘরে পাখিসঙ্গ' গ্রন্থে।

মাহমুদুল হাসান মাছুম প্রকৃতপক্ষে একজন নির্মোহ প্রকৃতির কবি, অবাধ বিচরণের বিপরীতে তিনি নির্জন ও একাকীর ভেতরে গড়ে তুলেছেন কবিতার এক ধ্যানবিদ্যা। কবিতার ভাষা, চিত্রকল্প এবং নির্মাণশৈলীতে নিজস্বতার ছাপে তিনি নিজ আত্মারই বিনির্মাণ করেছেন। 'শস্যক্ষেত উর্বরতা পায় কৃষকের শক্তিশালি হাতে/ জরায়ুর অন্ধকারে কে হিন্দু- কে বুদ্ধ- কে খ্রিস্টান/ কে-ই বা মুমিন মুসলমান? আমরা অন্ধকারের মানুষ' কিংবা 'রাতপাখির নিঃসঙ্গ ডানায় ভর করে/ একটা বিশ্রী রকম ঘুম উড়ে যাবার পর/ ঘুম আসেনি চোখে- কখনো কোনো রাতে/ সেই থেকে আমার প্রথম রাতের প্রেমে পড়া' কিংবা ' স্বপ্ন ভঙ্গের বিষাদে জেগে থাকি/ থাকি প্রাচীন পাহাড়ের পরমায়ু নিয়ে/ যেখানে পৃথিবী নতজানু হয় চিরকাল/ সেখানে যূথবদ্ধ হয়ে থাকি ইতস্ততায়।' এরকম অজস্র শব্দের ইন্দ্রজালে পাঠক বিমোহিত হয়ে থাকবে একথা বলার আর অপেক্ষা থাকে না।

কবির কবিতা পাঠকের হৃদয় ছুঁয়ে গড়ে তুলুক এক বিশ্বাসী কবিতার ঠিকানা, যা পাঠককে চিরকালই ভাসাতে থাকবে, ভাসিয়ে নিয়ে যাবে কবিতার এক পবিত্র প্রপাতের ভেতরে...।

বইটির প্রচ্ছদ করেছেন চারু পিন্টু। প্রকাশিত হয়েছে নওরোজ কিতাবিস্তান থেকে, স্টল নাম্বার- ৩৬৭-৩৬৮-৩৬৯।

আপনার মন্তব্য