ঊনমানুষ

 প্রকাশিত: ২০১৬-১২-২৮ ১২:৩৭:৪৭

শাশ্বতী বিপ্লব:

ঊনমানুষ
-কি হয়েছে রুমকি? কোন দুঃসংবাদ?

- কিছু হয়নি রতন ভাই।

- কিছু একটাতো হয়েছে আজ তোমার। আমাকে বলতে পারো। বাসায় কোন সমস্যা হয়েছে? আন্টি ভালো আছেন তো?

রুমকি রতন ভাইয়ের চোখের দিকে তাকায় না। অন্যদিকে তাকিয়ে কোনরকম বলে, "সব ঠিক আছে রতন ভাই। আজ আমি একটু ছুটি চাই। আমার নেক্সট সেশনটা একটু ম্যানেজ করে নিয়েন প্লীজ। সাদিয়াতো আছে আজকে, ওকে একটু বলবেন আমার হয়ে এ্যাংকরিংটা করে দিতে। ওর অবশ্য প্রেসার হয়ে যাবে। আমি পরে পুষিয়ে দেবো, ওকে বলবেন।

- সে না হয় বলবো। ওসব নিয়ে তুমি ভেবোনা। কিন্তু তোমার কি হয়েছে সেটা তো বলবে।

- বলবো রতন ভাই, আজ নয়। আমাকে আজ ছেড়ে দিন প্লীজ। আসছি।

ব্যাগটা কাঁধে নিয়ে কারো দিকে না তাকিয়ে বেরিয়ে পড়ে রুমকি। কাঁদবে না ভেবেও চোখ ভিজে ওঠে। নিজেকে অচেনা ঠেকে নিজের কাছে।

২.
কিছুতেই নিজেকে গুছিয়ে উঠতে পারেনি রুমকি আজ, কিছুতেই না। মাইক্রোফোনের সামনে বসে যতবার কথা বলতে চেষ্টা করেছে, ততবারই বুকে জমে থাকা কান্নাটা গলায় আটকে গেছে। তড়িঘড়ি করে কোনরকম নিজের নির্ধারিত প্রোগ্রামটা শেষ করেই উঠে পড়েছে। চোখের পানি সামলাতে সামলাতে সহকর্মীদের বিস্মিত চোখকে উপেক্ষা করে রুমকি বেরিয়ে এসেছে অফিস থেকে।

রুমকি শক্ত, তেজী মেয়ে হিসেবে পরিচিত। আর কথার জাদুকর। হ্যাঁ, কথাটা রুমকি ভালোই বলে। আজ তার যত জনপ্রিয়তা, খ্যাতি সব এই কথার কারণেই। অডিশনের সময় একবারেই সে বাজিমাত করেছিলো। সবার চোখে প্রশংসা আর অভিনন্দনে ভেসে গিয়েছিলো সে। তাছাড়া রুমকির লেখার হাতও ভালো। মানুষ ওর লেখা পড়তে পছন্দ করে। ফ্যান ফলোয়ারের সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিন। এক একটা পোস্ট ন্যুনতম একহাজার লাইক জোটে অনায়াসে। আজকাল আবার ইনবক্সে মানুষ পরামর্শ চাওয়া শুরু করেছে, বিশেষ করে মেয়েরা। অনেক মেয়েরা নিছক ভালোলাগার কথা জানায়। বলে, আপনার লেখা পড়ে সাহস পাই। রুমকির ভালো লাগে।

কিন্তু আজ নিজেকেই যেনো চিনতে কষ্ট হচ্ছে রুমকির। অন্যকে যেসব পরামর্শ দেয় তার কোনটাই সে নিজেকে দিতে পারছে না। সে তার লেখায় মেয়েদের শক্ত হতে বলে, অন্যায় মেনে না নিতে বলে। বলে, "নিজেকে ভালোবাসো, কোন একজনের জন্য তোমার জীবন থেমে থাকবে না। ঘুরে দাঁড়াও মেয়ে।" তবে নিজে কেন আজ শক্ত হতে পারছে না! কেন এতো অসহায় লাগছে নিজেকে!!

৩.
এতোটা অসহায় নিজেকে আর কখনো মনে হয়নি রুমকির। কিচ্ছু বলতে পারেনি সে, কিচ্ছু না। কি বলতে পারতো সে? চিৎকার করতো? গালি দিতো? তীব্র ঘৃণার শব্দে বুঝিয়ে দিতো এরকম পলায়নপর আর আপোষকামী একজন মানুষের তারও কোন প্রয়োজন নেই?

কিন্তু কি লাভ হতো তাতে? আজ তার যে পরিচয়ের দিকে আঙ্গুল তুলেছে শাহেদ, তার কোন যুতসই উত্তর নেই রুমকির কাছে। কেনই বা থাকবে? এই পরিচয়টার কোন মূল্যই যে নেই রুমকির কাছে, কোনদিন ছিলোও না। তবু কেন এই পরিচয়টাই, যাকে সে কখনো ধারণই করেনি, শাহেদ ও রুমকির মাঝে আজ কুৎসিত সত্য হয়ে পথ আগলে দাঁড়িয়েছে! এই যে তার এতো যোগ্যতা, জনপ্রিয়তা, কিছুরই কোন মানে নেই আর। এইতো, কালও এসব নিয়ে তার কত অহঙ্কার ছিলো। কিন্তু মাত্র একটি দিনের ব্যবধানে সবকিছু কেমন অন্তঃসারশূন্য, অর্থহীন।

আজ প্রথমবারের মতো রুমকি কথার খেই হারিয়েছে। কথার পিঠে কথার যোগান দিতে যে রুমকির জুড়ি মেলা ভার, সেই রুমকি আজ ভীষণরকম চুপ। কথার জায়গা দখল করে নিয়েছে অব্যক্ত কান্না আর অপমান।নিজের এই প্রতিক্রিয়ায় নিজের উপরই রাগ হচ্ছে তার। এতো দূর্বলতো সে নয়, তবে?

কিছু একটা কম আছে তার, কিছু একটা। যেটা সে অর্জন করতে পারেনি তার শিক্ষা বা কাজ দিয়ে। এক আজব অক্ষমতায় পুরো অস্তিত্ব তেতো হয়ে ওঠে রুমকির, কষে লাথি মারতে ইচ্ছা করে। কিন্তু কাকে লাথি মারবে সে? কে আসল অপরাধী? কোথায় পাবে তাকে? শাহেদ শেষ পর্যন্ত তবে হেরে গেলো, আপোষ করে নিলো জীবনের সাথে!! কিন্তু কেন? কিসের দায়িত্বের কথা বলছে শাহেদ আজ? এতোদিন কোথায় ছিলো এই দায়িত্ববোধ? আর রুমকির প্রতি বুঝি শাহেদের কোন দায়িত্ব নেই? তাদের দু'জনের দেখা স্বপ্নের প্রতিও না? বেশি ভাবতে পারে না সে, হন হন করে হেঁটে যায় মেইন রোডের দিকে।

৪.
ইউনিভার্সিটির তুখোড় তার্কিক রুমকি, সবাই একনামে চিনতো। রেসিজম নিয়ে, সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে, মানুষে মানুষে বিভেদ নিয়ে কতবার বিতর্কে জিতেছে সে। "সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই" - কবি চণ্ডীদাসের এই চরণটি কতবার বলে হাততালি পেয়েছে।এটি তার প্রিয় উক্তি। রুমকি তার জীবনাচরণেও এই কথাটি মেনে চলার চেষ্টা করে।শাহেদের সাথে সম্পর্কের সাথেও জড়িয়ে আছে এই চরণ।আহা, সেই সোনাঝরা দিনগুলো!

শাহেদ রাজনীতি করে। না না, নিছক টেন্ডারবাজী বা অস্ত্রের ঝনঝনানি নয়।এই যাকে সবাই প্রগতিশীল রাজনীতি বলে সেটাই। শাহেদের সবকিছু ভালো লাগে ওর। বিশেষ করে মেয়েদের প্রতি, নারী স্বাধীনতার প্রতি শাহেদের অকুণ্ঠ সমর্থন রুমকিকে ভীষণ টানে। শাহেদ মানুষে মানুষে ভেদাভেদ করেনা, কোন কারণেই না। একটা মানুষের ধর্ম বা পারিবারিক স্ট্যাটাস এসব ফালতু বিষয় নিয়ে শাহেদকে কখনো মাথা ঘামাতে দেখেনি রুমকি।

রুমকি এমনিতেই সাহসী মেয়ে। শাহেদের মতো একজনকে পাশে পেয়ে ওর সাহস ও আত্মবিশ্বাস আরো বেড়েছে। শাহেদকে নিয়ে তার মুগ্ধতার শেষ নেই। কলাভবনের নীচে দাঁড়িয়ে শাহেদ যখন বক্তৃতা করতো, তার বলিষ্ঠ কণ্ঠে ঝরে পড়া সাম্যবাদের কথা মুগ্ধ হয়ে শুনতো রুমকি।কতবার ক্লাস ফাঁকি দিয়েছে সে শাহেদের বক্তৃতা শোনার জন্য। আজকের এই শাহেদই কি সেই শাহেদ। তার প্রিয় নেতা, বন্ধু, প্রেমিক - সবকিছু কেমন গুলিয়ে যেতে থাকে রুমকির।

২০১৩ সালে যখন সাঈদী রাজাকারের ফাঁসির রায়কে পুঁজি করে দেশের আনাচে কানাচে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে, শাহেদ তার তীব্র প্রতিবাদ করেছিলো। রুমকির আজো মনে আছে শাহেদের উচ্চারিত প্রতিটা শব্দ, প্রতিটা অঙ্গভঙ্গি, মুখের প্রতিটা রেখা। আহ, শাহেদকে কি সুন্দর লেগেছিলো রুমকির সেদিন। ভালোলাগায় ভেসে গিয়েছিলো সে। রুমকির গা কাঁটা দিয়ে ওঠে আজও। তার প্রিয় লাইনটি দিয়েই দিয়েই বক্তব্য শেষ করেছিলো শাহেদ, "সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই"। সেই প্রতিবাদের ময়দানেই পরিচয়টা বন্ধুত্ব এবং অতঃপর প্রেমে পরিণতি পায় ।অথচ আজ সেই প্রিয় উক্তিটি যখন রুমকির গালে সজোরে চপেটাঘাত করে গেলো, তখন সে শুধুই নির্বাক শ্রোতা হয়ে রইলো।

জীবনে প্রথমবার, এই প্রথমবার জন্মসূত্রে পাওয়া নিজের পরিচয়টাকে বড্ড বেশি ভারী লাগে রুমকির। নিজেকে ঊনমানুষ মনে হয় তার।মানুষ থেকে কিছুটা কম, কিছুটা ছোট, কিছুটা ভিন্ন। আহ, বড় অদ্ভুত অনুভূতি! এটাই তবে পরম সত্য! যে সত্য তার ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া হয়েছে, যে সত্য বেছে নেয়ার সুযোগ দেয়া হয়নি তাকে।শুধুমাত্র মানুষ পরিচয়টা আর যথেষ্ট নয় তার জন্য! কি আশ্চর্য! কি আশ্চর্য!! অথচ সে অন্যরকম ভেবেছিলো। ভুল ভেবেছিলো তবে? এতো বড় ভুলকে ভালোবেসেছিলো সে!!

৫.
শাহেদ এবং রুমকি, উভয়ের পরিবার থেকেই তাদের সম্পর্কটা নিয়ে আপত্তি আছে গোড়া থেকেই। কিন্তু রুমকি বা শাহেদ সেটা কখনো গায়ে মাখেনি। তারা সব জেনে-বুঝেই সম্পর্কে জড়িয়েছে। আর তাদের দু'জনের যেখানে এসব নিয়ে কোন মাথা ব্যথা নেই, তখন পরিবারের এই মনোভাবকে কখনো পাত্তা দেয়ার প্রয়োজন মনে করেনি রুমকি। কিন্তু আজ আর সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই। আজ তার কাছে সব জলের মতো পরিষ্কার করে দিয়ে গেছে শাহেদ। জল কা জল, পানি কা পানি, ব্যাস।

স্টার কাবাবের কোলাহলে আজ বসেছিলো তারা। কথাগুলো বাসায় বসেও হতে পারতো, কিন্তু শাহেদ বাইরেই বসতে চেয়েছিলো। হয়তো বাইরের কোলাহলে নিজের মুখোশটা লুকাতে সহজ হবে ভেবেছিলো সে। যে মুখোশটা এতোদিন সযতনে পড়ে ছিলো শাহেদ অথবা আজ নতুন করে পড়লো, ঠিক জানে না রুমকি। ঘরের ভেতর শুধু সে আর রুমকি, আয়োজনটা উপযুক্ত মনে হয়নি বোধকরি শাহেদের।

রুমকি: বাপরে, কি এমন কথা যা বাসায় বলা যাচ্ছিলো না? সত্যি, তুমি মাঝে মাঝে এমন অদ্ভুত সব কাণ্ড করো না। কি বলবে তাড়াতাড়ি বলো, আমাকে চারটার মধ্যে অফিসে পৌঁছাতে হবে কিন্তু।

শাহেদ কোন ভণিতায় গেলো না। অন্তত: এইটুকু দয়া সে করতে পারলো রুমকিকে। সরাসরি আসল কথায় এলো।

শাহেদ: "তোমাকে ধর্ম পাল্টাতে হবে রুমকি। মুসলমান হতে হবে। নইলে এই বিয়েটা আমি করতো পারবো না।"

এরকম কিছু একটা শোনার জন্য রুমকি তৈরি ছিলো না, কথা হারালো কিছুক্ষণ। তারপর অস্ফুটে বললো, "হঠাৎ?"

শাহেদ একটু অধৈর্য হলো, "তুমি তো কোন ধর্মই মানো না রুমকি, একটা পোশাকি ধর্ম পাল্টাতে তো তোমার সমস্যা হওয়ার কথা নয়।"

রুমকি: কেন?

শাহেদ: কিসের কেন?

রুমকি: ধর্মটা যখন পোশাকি, তখন হঠাৎ সেটা বদলানোর প্রশ্ন আসছে কেন? আর আমার নয়, তোমার সমস্যাটা বুঝতে চাইছি।

শাহেদ: দেখো, আমার একটা সমাজ আছে, পরিবার আছে। তাদের কথাও আমাকে ভাবতে হয়। আমার মা, আর...

রুমকি: আর?

শাহেদ: আর শান্তা, আমার ছোট বোন, ওর দিকটাওতো আমার ভাবা উচিত, তাইনা? আফটারঅল, আমি পরিবারের বড় ছেলে, আমার একটা দায়িত্ব আছে। তোমাকে বিয়ে করলে ওর বিয়েটা আটকে যাবে। আর তাছাড়া...

রুমকি চুপ করে আছে দেখে শাহেদ বললো: তোমাকে এক্ষুনি কিছু বলতে হবে না। তুমি দু'দিন সময় নাও। দেখো, এটা কিন্তু খুব সিম্পল একটা ব্যাপার, তুমি চাইলেই করতে পারো। আর ইয়ে মানে, আমি আজ থেকে আর তোমার সাথে থাকবো না ভাবছি। মানে আমরা যার যার বাসায় ফিরে যাবো। আমাদের বাসাটাও ছেড়ে দেয়া উচিত। কি বলো?

উচিত! কি বলবে রুমকি? কি উচিত আর কি অনুচিত সবকিছু গুলিয়ে যাচ্ছিলো রুমকির। শাহেদ ইতস্তত: করে আবার বললো, "আমি এখানে আসার আগে বাড়ীওয়ালার সাথে কথা বলে এসেছি অবশ্য। উনাকে বলেছি বাসা ছাড়ার কথা। তুমি যদি মায়ের কাছে ফিরতে না চাও ওখানে আরো দু'মাস থাকতে পারবে। দু'মাসের এডভান্স তো দেয়াই আছে, তুমি ও নিয়ে ভেবো না। আর নতুন বাসা নিতে চাইলে সেটাও খুঁজে নেয়ার সময় পাবে। তোমার অবশ্য মায়ের কাছেই গিয়ে থাকা উচিত। সেটাই ভালো হবে। একা একা আলাদা থাকার দরকার নেই।"

রুমকি তবুও চুপ দেখে শাহেদ একটু অস্বস্তি নিয়ে গলাটা পরিষ্কার করে। একটা সিগারেট বের করে আবার ঢুকিয়ে রাখে। দাঁড়াতে দাঁড়াতে বলে, তোমার অফিসের দেরী হয়ে যাবে রুমকি, চলো সিএনজি করে দিই। আর, ইয়ে মানে, আমার কথাটা যদি তুমি নাই মানতে পারো, সেক্ষেত্রে আমাদের সম্পর্কটা আর না টানাই ভালো হবে। তোমার জন্য, আমার জন্যও। ভেবে জানিও।

৬.
ডিসেম্বর প্রায় শেষ হতে চললো। ঢাকা শীত আসি আসি করেও যেনো আসতে চাইছে না। কিন্তু পাতারা ঝরে যেতে শুরু করেছে।মাঝে মাঝে কিছুটা ঠাণ্ডা বাতাস রাস্তার ধুলো আর ছেঁড়া কাগজগুলো উড়িয়ে দিয়ে যায়। সাথে দু'একটি শুকনো পাতাও। কারওয়ান বাজার থেকে হেঁটে হেঁটে রুমকি বিজয় সরণীর কাছে চলে আসে। অথচ সে পান্থপথের দিকে যেতে চেয়েছিলো। বারবার পথ ভুল হয়ে যায় রুমকির।

বিজয় সরণির গোল চক্করে বসে টাকা গুনছে দু'টি মেয়ে। নগরে শীত না এলেও ওদের শুকনো ঠোট আর রুক্ষ মুখে শীত ঠিকই জানান দিয়েছে। ওরাওতো ঊনমানুষ, রুমকি ভাবে। মানুষের মতো দেখতে কিন্তু পুরো মানুষ নয়। রুমকির খুব ইচ্ছা করে রোদে পিঠ দিয়ে ওদের সাথে বসে যেতে। পেছন থেকে রুমকির নাম ধরে ডাকছে কেউ একজন, রুমকি ফিরে তাকায় না। ডাকুক, আজ সে আর পিছু ফিরবে না।ঘোর লাগা চোখে ধীরে ধীরে রুমকি হেঁটে যেতে থাকে গোলচক্করের মেয়েগুলোর দিকে।

আপনার মন্তব্য

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন