কেউ কি বলতে পারো?

 প্রকাশিত: ২০২০-০৫-২৬ ২১:৩৬:১৭

রণেশ মৈত্র:

কেউ কি বলতে পারো
কখন নামে সন্ধ্যা?
রাতের অন্ধকার?
যখন সবাই হয়ে উঠি ঘরমুখী?
বাইরের ব্যস্ততার শেষে?

বলতো কখন নামে সন্ধ্যা?
যখন ভয় ভয় লাগে?
গা ছিম ছিম করে?
এখন তো সদাই তা হলে সন্ধ্যা
কিংবা রাত্রি।
ঘুট ঘুটি অন্ধকার।

খবর এলো মৃত্যুর খবর
নিকটজনের বিদায়ের খবর
ছুটবো কি শেষ দেখাটি দেখতে?
না, যাওয়া গেল না
ভীতি বাদ সাধলো
আতংক ঘিরে ধরলো।
একটি ঘৃণ্য কাপুরুষ যেন।

কবরস্থানের খবর কি?
অনেক অনেক কবর?
তার আগে জানাযা?
না, জন-মানবশূন্য জানাযা
দেখি, শুধুই প্রিয় জনেরাই দাঁড়িয়ে
অসহ্য এক দৃশ্য
কোন দিন দেখিনি তো।

কাঁধে নয়-এম্বুলেন্স নিয়ে গেল দেহ
সমাধিস্থ হলো কি?
না, তা জানবার অবকাশ নেই
তাই শুধাই না কাউকেই;
হয়, আবার হয়ও না
নিজে দিব্যি থেকেছি নিজ ঘরে।
তবে কি আমি স্বার্থপর?
হয়তো বা তাই।

কাঁধে শব নিয়ে শ্মশান যাত্রা
কীর্তন আর হরিবোল!
না, কোনটাই না-সব ফাঁকা
শ্মশানবন্ধু?
না। এলেন না কেউ
খবর পেয়েও এলেন না
আবারও সেই অ্যাম্বুলেন্স-নিয়ে গেল দেহ
অত:পর?
না, কিছুই জানা গেল না।
শ্রাদ্ধ? না, তাও হবে না।
মৎস্যমুখী? তা-ও না।

আচ্ছা, কবে আসবে সেদিন?
যেদিন আমরা কবরস্থানে-শ্মশানে দলে বলে যাব
যেদিন সূর্য উঠবে
ফুল ফুটবে
পাখীর কলকাকলিতে মুখরিত হবে
আমাদের ভালবাসার এই পৃথিবীটা?

আসবে, আসছে সেদিন
আলোকোজ্জ্বল চারদিক
দু’চোখ ভরে দেখব
দেখব সবাই মিলে।
এসো স্বাগত জানাই
অনাগত সেই সুদিনটিকে।
বরণ করি অগ্রিম
বরণ ডালা দিয়ে।

সেদিন আমরা দল বেঁধে পার্কে যাব
সিনেমা দেখব
বাজারে গিয়ে সবজীটা মাছটা কিনব
সভা-সমাবেশে যাব
ছবি দেখবো গান গাইবো সমবেত কণ্ঠে?
বক্তৃতা-ভাষণ? তাও দেব
সেটি হবে নতুন বাংলাদেশ
যার জন্যে লড়েছি একাত্তরে।

আপনার মন্তব্য