শহীদ বুদ্ধিজীবী আলীম চৌধুরীকে নিয়ে লেখা বইয়ের ইংরেজি সংস্করণ

 প্রকাশিত: ২০২১-০৯-০৫ ২২:৪৬:১৭

জুয়েল রাজ:

শুক্রবার বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র ইউকের উদ্যোগে শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলীম চৌধুরীকে নিয়ে লেখা শ্যামলী নাসরীন চৌধুরীর বইয়ের ইংরেজি সংস্করণের প্রকাশনা উৎসব। লাফবারা ইউনিভার্সিটির স্ট্র্যাটফোর্ড ক্যাম্পাসে অনাড়ম্বর এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বইটির ইংরেজি রূপান্তর 'Dr. Alim, A Martyr of 1971' পাঠকদের সামনে উন্মোচন করা হয়।

বাংলায় প্রকাশিত মূল বই থেকে ইংরেজি অনুবাদের কাজটি করেন ফারাহ নাজ ও মানসী কায়েস। অন্যদিকে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ এই দলিলটিকে ইলেক্ট্রনিক প্রকাশনায় রূপদান করে চলিষ্ণু। প্রকাশনা উৎসবের আয়োজন সহযোগী হিসেবে ছিল লাফবারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইগ্রেন্ট মেমরি এন্ড দ্য পোস্ট কলোনিয়াল ইমাজিনেশন বিভাগ।

অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল সংযোগের মাধ্যমে বইটির লেখক শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী ছাড়াও বাংলাদেশ থেকে যুক্ত হন বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ, ডা. আলীম চৌধুরীর কন্যা ডা. নুজহাত চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরেক কন্যা ফারজানা চৌধুরী এবং যুক্তরাজ্য থেকে কবি শামীম আজাদ।

লাফবারা ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এমিলি কেইটলির সভাপতিত্বে পরিচালিত প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বইটির ইংরেজি রূপান্তরের প্রেক্ষাপট নিয়ে কথা বলেন বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র ইউকের সাধারণ সম্পাদক খাদিজা রহমান।

অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ বইটিকে 'ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ' বলে মন্তব্য করেন। বইটির লেখক শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী বলেন, বইটিতে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের যে নির্মোহ বর্ণনা রয়েছে, তা আগামী প্রজন্মকে একাত্তর সম্পর্কে সঠিক ধারণা দেবে।

ডা. নুজহাত চৌধুরী তার বক্তব্যে বইটির ইংরেজি সংস্করণের গুরুত্ব তুলে বলেন, একাত্তরের গণহত্যা কিংবা নৃশংসতার বিষয়টি আজও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পূর্ণাঙ্গভাবে উঠে আসেনি। কাজেই বইটির ইংরেজি রূপান্তরের মধ্য দিয়ে গণহত্যার বিষয়টি বিস্তৃত পরিসরে পাঠকদের কাছে পৌঁছতে পারবে।

ডা. আলীম চৌধুরীর আরেক কন্যা ফারজানা চৌধুরী বলেন, গত কয়েক দশকে মুক্তিযুদ্ধের অনেক ধরনের 'ন্যারেটিভ' তৈরি হলেও এই বইটি বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীর অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে রচিত এক ঐতিহাসিক দলিল।

কবি শামীম আজাদ তার সমাপনী বক্তব্যে বলেন, অনাবাসী তরুণ প্রজন্মের জন্য শ্যামলী নাসরীন চৌধুরীর এই বইটির ইংরেজি অনুবাদ একটি অসামান্য কাজ হয়ে থাকলো। ইংরেজি ভাষায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রকাশনার অপ্রতুলতার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি লন্ডন বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের এই উদ্যোগকে অভিনন্দন জানান।

লাফবারা ইউনিভার্সিটির মাইগ্রেন্ট মেমরি এন্ড দ্য পোস্ট কলোনিয়াল ইমাজিনেশন বিভাগের অধ্যাপক এমিলি কেইটলি বলেন, একাত্তরের স্মৃতি এবং জাতীয়তাবোধের বিষয়টি এই বইয়ে দারুণভাবে উঠে এসেছে। তিনি মনে করেন, বইটি একাত্তর বিষয়ক গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

অনুষ্ঠানে বইয়ের অনুবাদক ফারাহ নাজ ও মানসী কায়েস পুরো বইটি অনুবাদ করতে গিয়ে তাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।

প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বইটির ইংরেজি সংস্করণ থেকে নির্বাচিত অংশ পাঠ করে শোনান লাফবারা ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ও গবেষক ড. ক্লেলিয়া ক্লিনি, অনুবাদক ফারাহ নাজ ও বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র যুক্তরাজ্যের ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর সৈয়দা সায়মা আহমেদ।
উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ই-বুকটি চলিষ্ণু অ্যাপে পাওয়া যাবে।

আপনার মন্তব্য