বেঁচে থাকার দুঃসহ নির্ভারতা, ষষ্ঠ পর্ব : ১৫-১৮

 প্রকাশিত: ২০১৬-১০-২১ ০২:১৮:৪৪

কাজী মাহবুব হাসান:

বেঁচে থাকার দুঃসহ নির্ভারতা, ষষ্ঠ পর্ব (দ্য গ্র্যান্ড মার্চ) : ১৫ -১৮
১৫
তাদের বহনকারী উড়োজাহাজটি অবতরণ করেছিল ব্যাঙ্ককে। চারশ সত্তর জন ডাক্তার, বুদ্ধিজীবী আর সাংবাদিকদের বিশাল এই দলটি এরপর একটি আন্তর্জাতিক হোটেলের বিশাল হল রুমে জড়ো হয়েছিল। যেখানে ইতিমধ্যেই আরো অনেক ডাক্তার, অভিনেতা, সঙ্গীতশিল্পী ও ভাষাতত্ত্বের অধ্যাপকরা উপস্থিত ছিলেন কয়েকশত নোটবুক, টেপরেকর্ডার আর স্থির ও ভিডিও ক্যামেরা হাতে সাংবাদিকসহ। মঞ্চের উপর একটি লম্বা টেবিলের পেছনে প্রায় বিশ জনের মত যুক্তরাষ্ট্রের বুদ্ধিজীবীদের একটি দল পুরো অনুষ্ঠানটি তখন পরিচালনা করছিলেন।

ফরাসী বুদ্ধিজীবীদের দলটি, যাদের সাথে ফ্রাঞ্জ এই হলরুমে প্রবেশ করেছিল, তারা কিছুটা উপেক্ষিত ও অপমানিত বোধ করলেন এই দৃশ্যটি দেখে। কম্বোডিয়া নিয়ে এই মহাসমাবেশ আর মিছিল হচ্ছে মূলত তাদের পরিকল্পনা, আর সেখানে কিনা যুক্তরাষ্ট্রের এই নাগরিকরা, চূড়ান্তভাবে যারা নির্লজ্জ যথারীতি, শুধুমাত্র অনুষ্ঠানটি দখল করে নেয়নি, তারা সেটির দখল নিয়েছেন এমনকি ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করে, তারা আদৌ ভাবার প্রয়োজন বোধ করেননি যে,তাদের কথাগুলো কিভাবে ডেনমার্কবাসী কিংবা ফরাসী ভাষাভাষী কেউ বুঝতে পারবেন। এবং যেহেতু ডেনমার্কবাসীরা বহুদিন আগেই ভুলে গেছেন যে তারা কোনো এক সময় তাদের নিজস্ব একটি দেশ গড়েছিলেন, ইউরোপিয়দের মধ্যে শুধুমাত্র তাই ফরাসীরাই অবশিষ্ট ছিলেন এমন পরিস্থিতিতে যারা প্রতিবাদ করার যোগ্যতা রাখেন। তাদের মূলনীতি এত উচ্চমানের ছিল যে, এমনকি তারা ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করে প্রতিবাদ জানাতে অস্বীকার করেন, বরং তাদের অভিযোগগুলো তারা এই উদ্ধত আমেরিকানদের কাছে উপস্থাপন করেছিলেন তাদের নিজেদের মাতৃভাষায়। আর আমেরিকানরা তাদের ভাষার একটি শব্দও না বুঝে বন্ধুসুলভ ঐক্যমত্য প্রকাশ করা হাসির মাধ্যমে তাদের প্রতিক্রিয়া দেখান। পরিশেষে ফরাসীদের আর কিছুই করার থাকে না, তারা বাধ্য হন ইংরেজি ভাষায় তাদের অভিযোগ উত্থাপন করার জন্য: ‘কেন এই সভা ইংরেজিতে হচ্ছে যখন কিনা এখানে ফরাসীরা উপস্থিত’?

যদিও এমন একটি বিস্ময়কর অভিযোগে হতভম্ব, আমেরিকানরা তবুও হেসেছিলেন, এবং তারা বিষয়টি মেনে নেন: এখন থেকে সভা চলবে দ্বিভাষায়। কিন্তু সেটি শুরু করার আগে, যদিও একজন উপযুক্ত অনুবাদককে খুঁজে পেতে হবে। তারপর, প্রতিটি বাক্যকে ফরাসী ও ইংরেজি ভাষায় দুবার করে উচ্চারণ করতে হবে। যা এই আলোচনার সময়ও দ্বিগুণ করবে বা হয়তো আরো বেশী, কারণ কিছু ফরাসী বুদ্ধিজীবীদের নিশ্চয়ই কিছু ইংরেজি ভাষাজ্ঞান আছে, তারা বারবার অনুবাদককে থামাবেন তাকে সংশোধন করার জন্য, প্রতিটি শব্দে বিতর্ক করে।

সভাটি এর শীর্ষে পৌছায় যখন একজন বিখ্যাত আমেরিকান অভিনেত্রী মঞ্চে আসেন বক্তব্য দেবার জন্য । তার কারণে, আরো বেশী আলোকচিত্রী আর ক্যামেরাম্যানরা সেই হল রুমে প্রবেশ করেছিলেন, আর তার উচ্চারিত প্রতিটি শব্দের সাথে শোনা যায় কোনো না কোনো ক্যামেরার ছবি তোলার জন্য শাটার চাপার শব্দ।অভিনেত্রীটি প্রথমে দুর্দশাগ্রস্ত শিশুদের কথা বলেন, কমিউনিস্ট শাসনতন্ত্রের বর্বরতার কথা বলেন, মানবাধিকার থেকে নিরাপত্তার বিষয়, সভ্য সমাজের ঐতিহ্যবাহী মূল্যবোধের প্রতি হুমকি, একক ব্যক্তির অবিচ্ছেদ্য স্বাধীনতা, আর প্রেসিডেন্ট কার্টার, যিনি কম্বোডিয়ার সাম্প্রতিক ঘটনাবলীতে মর্মাহত ইত্যাদি বিষয় নিয়ে মন্তব্য করেন। যখন তিনি তার শেষ শব্দটি উচ্চারণ করেছিলেন, ততক্ষণে তার চোখ অশ্রুসিক্ত।

এরপর মঞ্চে লাফিয়ে উঠছিল এক লাল গোফওয়ালা ফরাসী চিকিৎসক এবং চিৎকার করে তিনি বললেন যে, ‘এখানে আমরা এসেছি মুমূর্ষু মানুষকে চিকিৎসা দিতে, প্রেসিডেন্ট কার্টারের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করার জন্য নয়। এটিকে আমেরিকার নীতির প্রচারণা মূলক সার্কাস বানানো থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে। আমরা এখানে কমিউনিজমের বিরোধিতা করতে আসিনি, আমরা এখানে জীবন বাচাতে এসেছি’।

সাথে সাথেই তাকে সমর্থন জানায় বেশ কিছু ফরাসী নাগরিক।

যিনি অনুবাদক তিনি ভয় পেয়েছিলেন এবং সাহস পাননি তারা যা বলছেন সেটি অনুবাদ করার জন্য। সুতরাং পোডিয়ামের উপর বসা বিশজন আমেরিকান আরো একবার শুভেচ্ছাসহ তাদের দিকে তাকিয়ে হেসেছিলেন। অনেকে মাথাও নাড়িয়েছিলেন ঐক্যমত্য প্রকাশ করে। তাদের একজন এমনকি বাতাসে মুষ্টিবদ্ধ হাতও তুলেছিলেন, কারণ তিনি জানতেন ইউরোপিয়রা তাদের মুষ্টিবদ্ধ হাত উপরে তুলতে ভালোবাসে সম্মিলিত কোনো আনন্দের অনুভূতি প্রকাশ করার জন্য।

১৬
কিন্তু কিভাবে সেই বামপন্থী বুদ্ধিজীবী ( কারণ গোঁফ সহ সেই ডাক্তার কিছুই না, যদি না তিনি বামপন্থী বুদ্ধিজীবী না হয়ে থাকেন) একটি কমিউনিস্ট দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে সমাবেশ করার ইচ্ছা পোষণ করেছেন, যখন কিনা কমিউনিজমকে সব সময়ই বামদের অধীনস্থ কোনো ক্ষেত্র হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে?

যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন নামের দেশটির দ্বারা সংঘটিত অপরাধগুলো খুব বেশী মাত্রায় সহ্যের সীমানা ছাড়িয়ে গিয়েছিল, তখন বামপন্থী কারো পক্ষে দুটি বিকল্পের একটিকে বেছে নেবার উপায় ছিল - হয় তাকে আগের জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আসতে হবে এবং বন্ধ করতে হবে মার্চ অথবা ( কম বেশী ভেড়ার মত) সোভিয়েত ইউনিয়নকে পুনশ্রেণীবিন্যস্ত করতে হবে গ্র্যান্ড মার্চের জন্য একটি বাধা হিসাবে এবং মার্চ অব্যাহত রাখতে হবে।

আমি আগেই বলেছিলাম, একজন বামপন্থীকে বামপন্থী বানায় গ্র্যান্ড মার্চের সেই ‘কিচ’? ‘কিচের’ পরিচয় রাজনৈতিক কৌশল থেকে আসে না বরং সেটি আসে কোনো চিত্র, রূপক আর শব্দভাণ্ডার থেকে। সেকারণে অভ্যাসটি ভাঙ্গা এবং কমিউনিস্ট কোনো দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে মার্চ করা সম্ভব হয়েছিল। তবে, যা অসম্ভব, সেটি হচ্ছে একটি শব্দকে অন্য একটি শব্দটি প্রতিস্থাপিত করা।এমন কারো জন্য খুবই সম্ভব হতে পারে ভিয়েতনামী সেনাবাহিনীকে হাতের মুষ্টি দেখিয়ে ভয় প্রদর্শন করা, কিন্তু তাদের জন্য অসম্ভব এমন কিছু চিৎকার করে বলা যে, ‘কমিউনিজমের পতন হোক’! ‘কমিউনিজমের পতন হোক’! শ্লোগানটি গ্র্যান্ড মার্চ বিরোধীদের, আর যারা তাদের নিজেদের মান বাঁচানো নিয়ে চিন্তিত, নিজেদের ‘কিচের’ বিশুদ্ধতার প্রতি অবশ্যই তাদের সবসময় বিশ্বস্ত থাকতে হবে।

শুধুমাত্র একটি কারণে আমি পুরো বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করলাম, তার কারণ আমি ব্যাখ্যা করতে চেয়েছি ফরাসী ডাক্তার আর আমেরিকার অভিনেত্রীর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির বিষয়টি আসলে কি ছিল। অভিনেত্রী আত্মকেন্দ্রিক হবার কারণে নিজেকে কল্পনা করেছেন অযাচিত হিংসার অথবা নারীবিদ্বেষের শিকার হিসাবে। কিন্তু বাস্তব বিষয়টি হচ্ছে ফরাসী ডাক্তার খুবই সূক্ষ্মভাবেই তার নন্দনতাত্ত্বিক সংবেদনশীলতাকে প্রকাশ করেছেন, প্রেসিডেন্ট কার্টার, আমাদের ঐতিহ্যবাহী মূল্যবোধ, কমিউনিজমের বর্বরতা সবই ‘আমেরিকান কিচের’ শব্দভাণ্ডারের অংশ, যার সাথে গ্র্যান্ড মার্চের ‘কিচের’ কোনো যোগসূত্রতা নেই।

১৭
পরেরদিন সকালে তারা সবাই কয়েকটি বাসে চড়ে থাইল্যান্ডের মধ্যে দিয়ে কম্বোডিয়ার সীমানার দিকে যাত্রা শুরু করেন। সন্ধ্যার দিকে তাদের মিছিল একটি ছোট গ্রামে এসে পৌছায়, যেখানে তারা মাচার উপর বানানো কতগুলো বাড়ি ভাড়া করে রেখেছিলেন আগেই।নিয়মিত প্লাবিত হওয়া নদীর কারণে গ্রামবাসীরা বাধ্য হয় মাটির উপরের স্তরে মাচা বেধে থাকার জন্য, যখন তাদের পালিত শুকরগুলো গাদাগাদি করে মাটিতে থাকে নীচে। ফ্রাঞ্জ আরো চারজন অধ্যাপকের সাথে একটি রুমে ঘুমিয়েছিল। দূর থেকে ভেসে আসছিল শুকরদের বৈশিষ্ট্যসূচক গোঙ্গানি, আর কাছ থেকে শোনা যাচ্ছিল একজন বিখ্যাত গণিতজ্ঞের নাক ডাকার শব্দ।

সকালে আবার তারা বাসে উঠে বসেন। থাই-কম্বোডিয়ার সীমানা থেকে এক মাইল অবধি সব ধরনের গাড়ী চলাচল ছিল নিষিদ্ধ। সীমানা অতিক্রম করতে হবে শুধুমাত্র সরু আর সশস্ত্র সীমান্ত প্রহরী দ্বারা সুরক্ষিত একটি পথ দিয়ে। বাসগুলোকে সেখানেই থামতে হয়েছিল। ফরাসীদের দলটি বাস থেকে নেমেই আবারো আবিষ্কার করেন, আমেরিকার দলটি তাদের পরাজিত করেছে, আর তারা এই মার্চের ভ্যানগার্ডের অবস্থানটি দখল করে নিয়েছে ইতিমধ্যেই। সেই গুরুত্বপূর্ণ সময়টি অবশেষে উপস্থিত হয়। দোভাষীকে স্মরণ করা হয় এবং আবারো দীর্ঘ বিতর্ক শুরু হয়। অবশেষে সবাই একমত হন একটি সাধারণ সিদ্ধান্তে, এই মিছিলের সামনে থাকবেন একজন আমেরিকান ও একজন ফরাসী এবং কম্বোডিয়ার দোভাষী, এরপরে আসবেন ডাক্তাররা, শুধুমাত্র তারপর আসবেন বাকী সবাই। আমেরিকার সেই অভিনেত্রীকে মিছিলের সবচেয়ে পেছনে পাঠানো হয়।

সীমান্ত অভিমুখের রাস্তাটি ছিল বেশ সংকীর্ণ আর এর দুই পাশে ছড়িয়ে ছিল ল্যান্ড মাইন পোতা মাঠ। প্রায়শই এটি আরো সরু হয়ে গেছে রাস্তার উপর ফেলে রাখা কোনো প্রতিবন্ধকের কারণে - যেমন সিমেন্টের ব্লক, যার সারা গায়ে পেঁচানো আছে কাঁটাতার - যেখান দিয়ে শুধুমাত্র এক লাইন করেই সামনে অগ্রসর হওয়া যায়।

ফ্রাঞ্জের কাছ থেকে প্রায় পনেরো ফুট সামনে ছিল একজন বিখ্যাত জার্মান কবি আর পপ সঙ্গীত শিল্পী, যিনি ইতিমধ্যেই নয়শ ত্রিশটি গান লিখেছেন শান্তির পক্ষে আর যুদ্ধে বিরুদ্ধে। তিনি বহন করছিলেন সাদা পতাকা লাগানো একটি লম্বা লাঠি, যা তার লম্বা কালো দাড়ির সাথে ভালোই ভারসাম্য সৃষ্টি করেছিল, আর তাকে স্বতন্ত্র করে রেখেছিল বাকী সবার কাছ থেকে।

এই লম্বা মিছিলের পুরোটা দৈর্ঘ্য জুড়ে, আলোকচিত্রী ও ক্যামেরাম্যানরা ছবি তুলছিলেন বা তাদের ভিডিও ক্যামেরা চলছিল, কখনো সামনে গিয়ে কখনো থেকে খানিকটা পিছিয়ে, হাঁটু মুড়ে, তারপর আবার সোজা হয়, আবার সামনে দৌড়ে গিয়ে। প্রায়শই তারা কোনো না কোনো বিখ্যাত ব্যক্তির নাম ধরে ডাকছিলেন, যিনি তারপর না জেনেই তাদের দিকে তাকাচ্ছেন ঠিক ততটুকু সময় জুড়ে, যতক্ষণ লাগে তাদের শাটার চাপার জন্য।

১৮
কিছু একটা ঘটার আভাস যেন টের পায় সবাই, পেছন ফিরে তাকিয়ে তার ধীরে হাটতে থাকেন।

আমেরিকার অভিনেত্রী, যিনি ছিলেন সবচেয়ে পেছনে, তিনি আর সেই অপমান সহ্য করতে পারেননি, কোনো একটি ব্যবস্থা নেবার দৃঢ় প্রত্যয়ে, তিনি দ্রুত দৌড়ে মিছিলের সামনে দিকে এগিয়ে যাবার চেষ্টা করেন। তাকে দেখে মনে হচ্ছিল যেন তিনি পাঁচ কিলোমিটার দৌড়ের কোনো প্রতিযোগী, যে কিনা এতক্ষণ শক্তি সঞ্চয় করেছে সবার পেছনে ধীরে দৌড়ে, হঠাৎ করে এখন সে দ্রুত তৎপর হয়ে উঠেছে ও একের পর এক প্রতিদ্বন্দ্বীকে অতিক্রম করে সামনে এগিয়ে যায়।

মিছিলের পুরুষরা সরে দাড়ায় বিব্রতকর হাসি সহ, বিখ্যাত দৌড়বিদের জয় লাভ করার প্রচেষ্টা যেন নষ্ট না হয়ে যায় এমন ইচ্ছা পোষণ করে।কিন্তু মিছিলের নারীরা চিৎকার করেন, ‘নিজের লাইনে ফিরে যাও! এটা কোনো তারকা মিছিল না’!

অদম্য, অভিনেত্রী এগিয়ে যেতে থাকেন, তাকে অনুসরণ করে দৌড়ায় পাঁচ জন ফটোগ্রাফার আর দুজন ক্যামেরাম্যান।

হঠাৎ করেই একজন ফরাসী নারী, ভাষাতত্ত্বের অধ্যাপক, অভিনেত্রীকে কব্জিটি শক্ত করে ধরে তাকে আটকে ফেলেন ও বলেন ( ভয়ঙ্কর শব্দের ইংরেজি ভাষায়), ‘এটি ডাক্তারদের মিছিল, যারা এসেছে মুমূর্ষু কম্বোডিয়ানদের চিকিৎসা করার জন্য, কোনো সিনেমার তারকার প্রচারণা অনুষ্ঠান নয় এটি’।

অভিনেত্রীর কব্জি বন্দী তখন ভাষাতত্ত্বের অধ্যাপিকার হাতের মুঠোয়; সে কোনোভাবেই তার হাতটি ছাড়াতে পারছে না।‘তুমি কি জানো তুমি করছো’? অভিনেত্রীটি বলেন, ( তার বিশুদ্ধ ইংরেজিতে), ‘আমি এরকম শত শত মিছিলে যোগ দিয়েছি! তারকাদের ছাড়া তুমি কিছুই করতে পারবে না, এটাই আমাদের কাজ, আমাদের নৈতিক দায়িত্ব’!

ভাষাতত্ত্বের অধ্যাপক এটি শুনে গালি দেন, ‘মের্দ’ (তার বিশুদ্ধ ফরাসীতে, ইংরেজি যে শব্দটি এর অর্থ হতে পারে, সেটি হচ্ছে ‘শিট’ বা মল )।

আমেরিকার অভিনেত্রী সেটি বুঝতে পেরে, ঝর ঝর করে কাঁদতে শুরু করেন।

দয়া করে, এভাবে থাকুন, একজন ক্যামেরাম্যান চিৎকার করে উঠে তার পায়ের কাছে নতজানু হয়ে বসে পড়ে কামেরা তাক করে। অভিনেত্রী তার ক্যামেরার লেন্সের বরাবর একটি দীর্ঘ দৃষ্টি দেন, তার গাল বেয়ে তখন ঝরে পড়ছিল অশ্রু।
(চলবে)

আপনার মন্তব্য