ইলেকশান ক্যান্ডি

 প্রকাশিত: ২০১৫-১২-০৮ ১৮:৫৩:১১

মাসকাওয়াথ আহসান:

নির্বাচনী বৈতরিণী পার হতে ওবামার হাতে কোন কার্ড-ই ছিলো না। এমেরিকানরা ওবামা ভাইয়াকে নিয়া হ্যাপি নয়। হ্যাপি নয় ইহুদী-খ্রিস্টান বিজনেস সিন্ডিকেট। কনডোলিসা রাইস ওবামাকে ভালোবাসেন; কখনো বলা হয়নি। সে ওবামাকে বলে, ওবু আমায় একটা সাঁঝ দেবে। তোমাকে আমি জিতিয়ে দেবো।

ওবামা ফোন করে মিশেলকে জানায়, আমি একটু সেফ-হাউজে যাচ্ছি, ফ্লোরিডায়। কাল ফিরবো তুমি খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে পোড়ো মিশু।

মিশেল মুখ ঝামটা দ্যায়, সংসারের কোন খবর রাখোনা। চাইনা এই ফার্স্ট লেডির বোরিং লাইফ; থ্যাংকলেস জব; প্লিজ আমাকে মুক্ত করে দাও। আমি বাচ্চাদের নিয়ে কোথাও একটু শান্তিতে থাকি।

ওবামার চট করে নোবেল শান্তি পদকের টাকাটার কথা মনে পড়ে যায়।--মিস মিশু আপনি আর চারটা বছর হোয়াইট হাউজের কারাগারে থাকেন, পরিবর্তে নোবেল শান্তি পুরস্কারের টাকা গুলি নিয়েন।

মিশেল আরো রেগে যায়, লাইফ ইজ নট অল এবাউট মানি, আই ওয়ান্ট পিস।

ওই শুরু হলো। মিশেলের অভ্যাস হচ্ছে লেবু কচলাইয়া তেতো করা। তাকে প্রেম-অপ্রেমের শুরুতেই পঁই পঁই করে বলা হয়েছে ক্যারিয়ারই জীবনের প্রথম ভালোবাসা, এরপর খ্যাতি, মিশেল তৃতীয়তে।

তখন গদ গদ হয়ে সে বললো, এতো কিছু লাগবে না, আমায় দাসী করে রেখো।

আর বিয়ের পর মিশেল বস হয়ে ওঠে। তার বিরাট গুষ্টির বিয়ে আর ফিউনেরালে গিয়ে কথা বলার কাউকে না পেয়ে চার্চের বাগানে একা একা হেঁটে মার্ল বরো লাইটস পোড়ানোর জন্য জন্ম হয়েছিল ওবামার। মিশেল সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। হিলারী ক্লিনটনের রোগটা মিশেলেরও আছে। পাবলিকলি ভেরি নাইস; মনের গভীরে কনট্রোল ফ্রিক।

ওবামাকে হেলিকপ্টারের লং ফ্লাইং-এ নিয়ে যায় কন্ডোলিসা। ব্যাগ থেকে একটা জয়েন্ট বের করে দেয়। অনেকদিন পর। বাসায় মিশেল তার বাচ্চাগুলো নিয়ে জার্মান শেরপার মতো গন্ধ শুঁকে ওবামার। একটা সিগেরেট খেতে কতো লেকচার, কত কচকচ।

আর কন্ডি, আহা ক্যান্ডি; নিয়ে এলো রঙের ধুম্রজাল। চোখের কোণায় মুচকি হাসি। ইলেকশান জেতার চাল। আকাশের তারাগুলো কাছে চলে আসছে, কখনো হেলিকপ্টার নিজেই ঢুকে যাচ্ছে তারাবাজারে। ওবামা হাতে একটি তারার ফুল নিয়ে কন্ডির হাতে এগিয়ে দেয়। কন্ডি মোহন নাগিনীর মত সলাজ হাসিতে বলে, নাইট ইজ স্টিল ইয়াং

ওবামা দরাজ হাসি হেসে সেই রূপকথার মতো, কেনিয়ার গ্রামের সেই দাদাবাড়ীর সেই বায়োস্কোপ দেখা রাতের অপেক্ষা করে।

ফ্লোরিডার ফার্ম হাউজটি অনুপম কোন রঙ্গিন নাইরোবি সাজে সেজেছে। ওবামা অভ্যাস বশতঃ ফ্রিজ থেকে একটা বিয়ার ক্যান বের করতে গেলে কন্ডি বাধা দ্যায়।আই এম দ্য বস টু নাইট।

ওবামা মনে মনে ভাবে চারিদিকে বস পাখি ছাড়ছে মওলা। প্রথমে পুন পুন হইয়া রাজি করে, রাজি হইলেই আই এম দ্য বস। পিছা মারি কপালের।ওকে ইউ আর দ্য কুইন অফ কেনিয়া।

কন্ডি খুশী হয়। ওবামাকে একটা টেকিলা শ্যুট এগিয়ে দেয়। তবে লবণ নিতে হবে নামাকওয়ালীর হাত থেকে। তিনটা শট মেরে দেয়ার পর, ওবামা সত্যি সত্যি নাইরোবির রং-এ চলে যায়।

কন্ডি হাসিমুখে বলে, বার্ণ আওয়ার সি আই এ এসেট ওসামা বিন লাদেন, মেক ইট পাবলিক; ইউ গট মাই ভোট।

ওবামার মাথা ঘুরে। বুশদা ফোন করে অনুরোধ করেছে, ওসামাকে টাচ না করতে। বুশের আব্বা আর ওসামার আব্বার একটা যোথ বিজনেস ফার্ম আছে সৌদী আরব। ফ্যামিলি ফ্রেন্ড।

অরে আমি মারতে পারুম না ক্যান্ডি।

কেন, ডু ইউ লাভ হিম।

তুমার বস বুশদা ভালোবাসে।

সো হোয়াট। আমি আছি। নেভি সিলের টিমে আমার চোজেন পাঁচ জন হিটম্যান থাকবে। বাকিগুলি তুমি দ্যাও।

না ক্যান্ডি, আমি পারুম না। বুশদা মাইরা ফালাইবো।

কাওয়ার্ডস ডাই মেনি টাইমস বিফোর দেয়ার ডেথ।

আমার দরকার নাই প্রেসিডেন্ট হওনের আর; হইছে তো, যাই-গা।

কন্ডি কানে কানে বলে এক প্ল্যানের কথা। এসময় নাইরোবির মোহন হরিণীর সৌরভ আসে। চোখ বুঁজে ওবামা দেখে নাইরোবির রাতের আলো ছায়া, জয়েন্টস পাব, মায়াবনবিহারিনী হরিণীর মেলা।

এরপর ওসামা-বিন-লাদেন নিহত হয়। ওবামা টিভি ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে লাদেনের মাথাটা একটি রুপালী নক্সী থালায় মেলে ধরে এমেরিকানদের সামনে।

চারিদিকে উই আর এমেরিকান ইয়ো ইয়ো রব পড়ে যায়। জিতে যান ওবামা নবায়ন নির্বাচন। ভূমিধস বিজয়। কয়েক ছবি, লাদেনের মৃতদেহের কয়েকটি ছবি এতো মূল্যবান, পৃথিবীর কোন শিল্পকর্ম কখনো এতোদামে বিক্রি হয়নি।

কিন্তু ওবামার খটকা লাগে। ওসামাকে ঝেড়ে দেয়া হলো; অথচ বুশদা কিছু বলছেন না।

ওসামা হত্যা অভিযানের কন্ট্রোলরুমের ছবিগুলো দেখতে দেখতে নিজেকে নেপোলিয়ান মনে হয় ওবামার। হঠাত একটা ছবির পিছে এক পরিচিত লোককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বিস্মিত হন ওবামা। সে-কি! সে এখানে কী করে।

ক্যান্ডি আর ফোন ধরেনা। পাত্তা দেয়না। ওবামা কারণ খুঁজে পায়না। একটা থ্যাংক ইউ ডিনারও নিলো না। ওবামা ছোট্ট একটা গাড়ী চালিয়ে কন্ডির বাড়ির পাশে গাড়ীটা থামায়। দু'বার ঘন্টা বাজায়। ভেতরে তুমুল শব্দে বিড়ি জলাইলে বাজছে। বলিউড কন্ডির খুব প্রিয়। ওতো বিপাশা।

বাধ্য হয়ে ওবামা জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে অবাক হয়ে যায়। এই তাহলে ক্যান্ডির নতুন বয়ফ্রেন্ড। এইজন্য ওবামার ফোন আর ধরার টাইম পায়না সে।

যাইহোক উইন উইন সিচুয়েশান। ক্যান্ডির বুদ্ধিতে ওবামা ইলেকশান জিতেছে, আর প্রেসিডেন্টের অথরিটি ব্যবহার করে পাঁচজন নেভী সিল দিয়ে কন্ডি তার বয়ফ্রেন্ড ওসামা-বিন-লাদেনকে বাঁচিয়ে নিয়ে আসছে।

ওবামা নিজেকে নিয়ে হাসতে হাসতে বলে,রাম চাহে লীলা চাহে লীলা চাহে রামতো এইসব ভেজালের মইদ্দ্যে যাওয়ার আমার কী কাম!

আপনার মন্তব্য