আলীম হায়দার-এর পাঁচ কবিতা

 প্রকাশিত: ২০১৫-১২-০৪ ২১:৪৯:৫২

বালকের প্রেমটা যদি শ্রাবণ দুপুরের রোদের মতো উত্তাপ ছড়ানো প্রেম হয় তবে বালিকার প্রেমটাও দাউ দাউ আগুন:

প্রেমিক জননীরূপী
তুমি ব্যথা পেলে ব্যথা পাই আমি
একসাথে লেগে থাকে দুজনার নাড়ী।

তাই বলছি-
আরো কাছে আসো
কোলের ভেতর ঘাপটি মারো, ঘুমিয়ে পড়ো।

ও-কৃষ্ণকিন্নরী
প্রেমিকের বুকে মাথা গুঁজে
ক্লান্তি কাটানো দুপুরে
শৈশবের মাতৃছায়ার কথা মনে পড়ে কি?

প্রেমিক তো মায়ের মতোই, আমিও মাতৃছায়া দিতে জানি।


ব্যাপক তুমি
নরম চোখের নীরব খুনি
ব্যাপক তুমি।
গাল খুলো না-
টোলের ফাঁদে মরতে পারি,
ম্লান মুখে
আরো বেশি আচ্ছি তুমি-
বরফি ঠোঁটি।

হৃদয় খোঁড়া ওই চাহনি
খোদার কিরা ব্যাপক তুমি।

মায়া চোখী নিটোল কটি
দারুণ তোমার নিবেশ গতি

নরম চোখের নীরব খুনি
খোদার কিরা ব্যাপক তুমি।


আরাধনা মন্ত্র
অই চাহনিতে চোখ রাখার সাহস কোরো না কেউ কখনো-
দৃষ্টি নত করো
মাথা নামিয়ে চলো
শাড়ির পাড়ের নিচে আঁড় চোখে কী খোঁজ?

ঔদিকে আর নয়-
এবার ফেরো।
এক নজরেই তোমরা কি সব বিমূঢ় হয়ে গেছো?
তারচেয়ে বলাকার দিকে ফেরো,
নইলে হঠাৎ করেই
থেমে যাবে তোমাদের অস্থির হয়ে ওঠা হৃদপিণ্ড।

ও অনন্য। ও অনবদ্য। ও পরিপূর্ণ।

তোমরা ওকে অধর খুলতে মানা করো
ঠোঁট নয় ঠিক-
ও-দুটো ধারালো তলোয়ার যেন!
তারপরও
ওই চুমু লোভনীয়।

হে অনন্ত যুবতি-আমায় বুকে টানো
ওই চোখে চোখ রেখে,ওই ঠোঁটে ঠোঁট চেপে-
দম ফেঁসে মারা যাবো।
অধর পরশে তুমুল আবেশে আমায় খুন করো।।

তোমার নিপুণ গলায় খাঁজ হবো, উদরে মিঠা ভাঁজ হবো,
আমরণ লেপ্টে থাকবো,
কবরের মাটিতে একসাথে মিশে যাবো।


যদি কায়া ডাকে, মায়া ডাকে
দূরেই তো থাকো সকালে-দুপুরে-বিকেলে
এইবেলা একটু আসো তো কাছে, ক্ষতি কী তাতে

একটু ওম দিলে, একটু ওম নিলে
হোক কিছু বিকিকিনি-
সুখের হাটে।
এইবেলা একটু আসো তো কাছে।

কৈ গো, কোথায় তুমি?
আসো না কেনো, কেনো এতো কিপটেমি?
ভরা যৈবন থৈথৈ করে, একা একা তুমি থাকো কি করে?

কাছে আসো, আরো কাছে, সুখ দাও ঘন আঁচে
ডোবাও তোমার পদ্মগাঙে-
উপচানো সরোবরে।

কাছে আসো, আরো কাছে, সাঁতার দেব ঢেঊ তোলা হ্রদে।
কোলে বসো, ঠোঁট রাখো ঠোঁটে
চেপে ধরো সজোরে বুক, ওই বুকবালিশে
তছ্নছ হয়ে যাব বৃন্ত; বেয়নেটে।

আনন্দ করো, আমোদে আমোদে মগ্ন হও, সুখের শিকারে।

 

দুপুর বালক, আগুন বালিকা
এ ধরা জুড়ে যদি দুটি চপল মনের একটা নিখাঁদ প্রেম জমে ওঠে
আর সেই অনুভূতিময়-
প্রেমটা যদি জমিয়ে তোলে কোনো বোকা বালক আর অবুঝ বালিকা!
কেমন হবে ?
খারাপও হতে পারে, হলে হোক না!
সবকিছু সবার কাছে ভালো হতে হবে এমন কোনো মানে নেই।

বালকের প্রেমটা যদি শ্রাবণ দুপুরের রোদের মতো উত্তাপ ছড়ানো প্রেম হয়
তবে বালিকার প্রেমটাও দাউ দাউ আগুন হতে দোষ কী!
প্রেমের মধ্যে বালক বালিকা, বয়সটা একটু কম হয়ে গেল না!
আরে প্রেমের আবার বয়স কী!
একাকী নিজের কাছে প্রতিটা মানবই বালক, মানবী মানেই বালিকা।

আপনার মন্তব্য