শামান সাত্ত্বিক-এর একগুচ্ছ কবিতা

 প্রকাশিত: ২০১৫-১২-১১ ১৫:৫৭:০০

আপনাদের ধন্যবাদ আপনারা সমুদ্রের গর্জন থামিয়ে রেখেছেন আপনারা জগদ্বিখ্যাত লোকদের কদমবুচি করেছেন:


চমক রেখে যায় চমক লাগা ভোর
ঘুমের পৃথিবীর ঘুম লেগে থাকে
দু’চোখ দিয়ে তরল রসের আকর
চৌবাচ্চা উপচিয়ে গেলে
অতি দূরের গন্ধমাখা প্রপাত
রুপের নহর বইয়ে দেয় জলে

বসন্ত বন্দনা শেষে
আবারো রক্তিমাভ রঙ-বাহার
ঘরগুলোয় শেফালী শুভ্র ভোরের বাতাস বইতে দেয়।

ফেব্রুয়ারী ২০১৫


স্বপ্নীল চোখ খুঁজে নেয় মমতার অক্ষর
ঝরে গেলে তুষার দানা ইঙ্গিতে অলৌকিক ঈশ্বর

সূতায় বাঁধা পড়লে পাখীর পা
নাইলনের দড়ির গলায় ফাঁসের কথা মনে পড়ে
পাখীর চিৎকারও থেমে যায় ব্যাকরণ অশুদ্ধ বলে
ভোরে ঢেউ খেলে পরাস্ত সমাহিত সমুদ্রের দুই কূলে

আপনাদের ধন্যবাদ আপনারা সমুদ্রের গর্জন থামিয়ে রেখেছেন
আপনারা জগদ্বিখ্যাত লোকদের কদমবুচি করেছেন।

ফেব্রুয়ারী ২০১৫


কখনো মালাটি ফুলেল হবে এই চিন্তা মগজে রাখিনি
নব্য নবী মহান আনন্দে দোতরায় তান তুলে
তার চোখের শলাকার নির্গত আগুণে
ভস্মীভূত সবাই
কঙ্কালসার যৌবনে হাতে বাঁশি উঠেনি বলে
কলমের রণে আগুণ ঝরানো সুখ নামে

আত্মরতির প্লাবন শরীর কেড়ে নিলে
বালুকাময় সৈকতে রোদের খেলা ঝিলিমিলি ঝিকিমিকি।

ফেব্রুয়ারী ২০১৫


গড়ানো চিঠি মাছ ধরার বড়শিতে আটকে গেলে
পাথর সময়গুলো কথা কয়।
অনন্ত দুপুরের নীরব বাতাসে মেঘের আনাগোনা
নিঃশব্দ জনশূন্য হয়ে ওঠে - ঠাঁই নেই।
বেশ নিয়ে গুটি গুটি নড়ে উঠে অশেষ শূন্যতা
হাওয়ায় ভাসা ভাসা চোখ অজানিতে উঁকি দেয়
কোলাহলবিহীন বৃক্ষের মুখর পাতারা চিরল
কপাটে ধাক্কা এলে শাখাগুলোও নড়ে উঠে
কান পেতে দিয়ে সবুজ পত্রালি গুণগুণিয়ে শুনে গান
হিম হয়ে থাকা পুকুর হতে বুদ্বুদের ট্রেন উড়ে চলে।

অক্টোবর ২০১৫


কবর নিস্তব্ধতায় বিভোর হলে
আত্মানুসন্ধান জরুরী শোনায়
শবের শূন্য শরীরে শকুন নৃত্য
মনে হয় না আর হারাম

ধ্যাণমগ্ন বধূর কাছে এলে
ঘুরে ফিরে দেবীমূর্তি কাঁপন ধরায়
হৃদয় ঐশ্বরিক মাতমে লন্ড-ভন্ড হলে
একরত্তি ভোরের রোদের জানালায় উঁকি।

সকল তিলাওয়াত-আবৃত্তি
কর্পূরের মতো মিলিয়ে গেলে
আয়াতগুলো আরশিতে চোখ মেলে
দু-কূল দরিয়ায় বৃক্ষ-র মেলা বসে সারি সারি।।

নভেম্বর ২০১৫

আপনার মন্তব্য