প্রকাশিত: ২০১৬-০৬-০৮ ২০:৩৭:১৮
মনিস রফিক:
আমার সব স্মৃতি কিন্তু সুখের নয়
ছয়.
সিনক্লেয়ার পরিবারের সবার সাথেই আমার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। আমার নানী ক্যাথলিন ছিলেন এক চমৎকার মহিলা। আমার ভাবতে ভালো লাগে যে, আমার সন্তান জ্যাভিয়ার আর ইলা তাঁর স্নেহ পেয়েছে। কয়েক বছর আগে ক্যাথলিন মারা গেছেন। আমার খালা জানেট কানাডার বিমান বিভাগে শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছেন। যদিও এখন তিনি তাঁর কাজ থেকে অবসর নিয়েছেন কিন্তু যখনই আমি ভ্যাঙ্কুভার বিমান বন্দরে যাই তখন আমি বিশেষ সম্মান পাই এবং এর কারণ হচ্ছে আমি জানেটের বোনের ছেলে।
আমি যখন ছোট তখনই আমার আরেক খালা লিন আমেরিকায় গিয়ে বসবাস শুরু করেন। যখনই তিনি তাঁর চমৎকার স্বামী ফ্রেডকে নিয়ে আমাদের কাছে বেড়াতে আসেন, তখন ফ্রেডের সাথে আমাদের রাজনীতি নিয়ে তুমুল তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। কারণ ফ্রেড একজন কট্টর রিপাবলিকান। আমার খালাদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট বেটসী হচ্ছেন একজন নার্স। ভ্যাঙ্কুভার আইল্যান্ডে তিনি আর আমার ব্রিটিশ অভিবাসী কাকা রবিন একসাথে ব্রেন্টউড বে নার্সারিজ চালান। আমার আরেক চাচা টমকে আমি সব সময় আমার গডফাদার হিসেবে মানি। তিনি তাঁর যুবক বয়সে ব্রিটিশ কলম্বিয়া লায়ন্স এর হয়ে খেলতেন। যখন আমি পশ্চিমে পড়তে গিয়েছিলাম তখন তিনিই ছিলেন আমার আসল শিক্ষক বা গুরু।
আমার মা'র সবচেয়ে বড়বোন হিদারকে তিনি বিয়ে করেছিলেন। আমার নানা জিমি সিনক্লেয়ারের নির্বাচনী প্রচারণার সবচেয়ে ক্ষুদে ভলেন্টিয়ার হিসেবে সেই চল্লিশের দশক থেকে যে হিদার তাঁর রাজনৈতিক কর্ম শুরু করেছিলেন তা তিনি আজীবন ধরে রেখেছেন। এখনো তিনি টরন্টোতে লিবারেল পার্টির একজন একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। আমার নির্বাচনী প্রচারণাতেও তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন। ২০১৩ সালে হাউস অব কমন্স এ লিবারেল পার্টির নেতা হিসেবে আমি যখন প্রথম প্রশ্ন-পর্বে অংশ নিয়েছিলাম তখন তিনি দর্শক গ্যালারী থেকে হাত নেড়েছিলেন, আমি তাঁর এই ভালোবাসাকে স্যালুট জানিয়েছিলাম এবং আমার বুকে হাত রেখে আমার প্রতি তাঁর যে আজন্ম ভালোবাসা তার সম্মান জানিয়েছিলাম। তখনই তিনি এসে আমাকে অভিবাদন জানিয়েছিলেন। সেইদিন আমি স্কটল্যান্ডীয় পশমি কাপড়ের ডোরাকাটা সিনক্লেয়ার টাই পরেছিলাম।
বিগত বছরগুলোতে মায়ের সাথে আমার সম্পর্ক অনেক মধুর থাকতে থাকতে এক সময় খারাপ হয়ে গিয়েছিল, অবশ্য সম্পর্কটা এখন আবার সেই আগের মত ভালো। আমাদের এই সম্পর্কের উঠা-নামা যাই হোক না কেন, আমাদের যে বৃহত্তর ট্রুডো ও সিনক্লেয়ার পরিবার - এঁদের মধ্যে সুসম্পর্কে কখনোই চির ধরেনি।
প্রধানমন্ত্রীর ছেলে হিসেবে আমার সব স্মৃতি কিন্তু সুখের নয়। আমার জীবনের অনেক খারাপ সময় গিয়েছে, আর এই খারাপ সময়গুলোর মূল কারণ ছিলো আমার বাবা মা'র দাম্পত্য কলহ।
তাঁদের বিয়ে নিয়ে অনেক লেখা হয়েছে, অনেক ফিসফাস হয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত তাঁদের বিয়ে টিকেনি। তবে ঐ লেখা ও ফিসফাসের অধিকাংশই ছিল মনগড়া এবং অসত্য। ব্যাপারটা কিন্তু আমার ব্যক্তিগত জীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছে। যদিও এ বিষয়ে কথা বলা আমার কাছে সবচেয়ে বিব্রতকর বিষয়, তারপরও শেষ পর্যন্ত আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমি যখন একটা বই লিখবো, তখন বিষয়টা আমি আমার মত করে বলবো। আমি বলবো, কিভাবে আমি ধীরে ধীরে 'আমি' হয়ে উঠলাম। আসলে আমার এই আমি হয়ে উঠাই আমার নিজস্ব কোন ইচ্ছা বা পরিকল্পনা ছিল না বরং আমার আমি হয়ে উঠার পেছনে আমার বাবা-মা দু'জনেরই রয়েছে প্রবল প্রভাব। আমি আজকের যে আমি তার সম্পূর্ণ কৃতিত্ব বা দায়ভার সম্পূর্ণ আমার বাবা মায়ের। কিন্তু ভগ্ন পরিবারের প্রতিটি শিশুর মতই আমি তাঁদের এই বিচ্ছেদ মেনে নিয়েই বড় হয়েছি।
বর্তমানে আমি স্পষ্টভাবেই বুঝি আমার বাবা মা'র দাম্পত্য সংকটের প্রধান প্রধান কারণ কি ছিল। আমি আগেই উল্লেখ করেছি এর একটা প্রধানতম কারণ ছিল তাঁদের বয়সের বিশাল ফারাক এবং এটা ছিল চোখে পড়ার মত। বাবা বিয়ে করেছিলেন তাঁর পড়ন্ত বয়সে আর মা বিয়ে করেছিলেন তাঁর যৌবনের একেবারে শুরুর দিকে। তাঁদের বিয়ের সময় বাবার বয়স ছিল ৫২ আর মায়ের বয়স ছিল মাত্র ২২। তবে এটা বলা প্রয়োজন বলে আমি মনে করছি, তাঁরা তাঁদের এক সাথে পথ চলার শুরুতে দু'জন দু'জনকে কি গভীরভাবে ভালোবাসতেন এবং কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত একে অপরের প্রতি তাঁদের এই ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধ ছিল।
বাবা মা'র সম্পর্কের টানাপোড়নের একটা অন্যতম যে কারণ সেটা একেবারেই আলোচনায় আসেনি, এমনকি মা নিজেই সে সম্পর্কে সবাইকে জানানোর পরও। সেটা ছিলো 'বায়পোলারিটি' অসুখের সাথে মায়ের আজীবন লড়াই। বেশীর ভাগ মানুষই অনুধাবন করতে পারেনা, সেলিব্রেটি, রাজা-রাণী বা সরকার প্রধানদের পরিবারের যে জীবনের দিকে জনগণ সব সময় তাকিয়ে থাকে সেটামাঝে মধ্যে কত কষ্টের হয়। হয়তো মনে হতে পারে, এটা ও ধরনের ভয়ংকর কোনো বিষয়ই নয়, কিন্তু খুব সতর্কতার সাথে এবং খুব ছক কেটে না চললে যে কোনো মুহূর্তে কিছু উৎকট সমস্যা এসে হাজির হয়। আসলে এমন জীবনের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা বলে কিছুই থাকে না। আগপিছ অনেক কিছু ভেবে পথ চলতে হয়। বাবার ক্ষেত্রে এই বিষয়টা ছিল সম্পূর্ণ আলাদা, তিনি সব কষ্ট, সব প্রতিকূলতা বা সব ধরনের বৈরী পরিবেশ খুবই হাসি মুখে বা চ্যালেঞ্জের সাথে নিতে পারতেন এবং তাঁর জীবনের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল শৃংখলাপরায়ণতা ও কঠোর পরিশ্রম। কিন্তু মায়ের ক্ষেত্রে এ পরিবেশ ও পরিস্থিতি ছিল তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের বাইরে।
'বায়পোলার' মানসিক সমস্যাটা কিন্তু একেবারে দুর্লভ নয়। গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীর শতকরা তিনভাগ মানুষ এই সমস্যায় ভুগছে। আর এটা জাতি, ধর্ম, স্থান, পরিবেশ নির্বিশেষে সব মানুষেরই হতে পারে। আমাদের এক'শ জন ফেসবুক-বন্ধুদের একটু বিশেষভাবে লক্ষ্য করলেই আমরা দেখবো, এদের অন্তত তিনজনের মধ্যে এই সমস্যার লক্ষণ আছে। আসলে আমরা বেশীরভাগ মানুষই এর সম্পর্কের না জানার ফলে আমরা এটাকে কোনো মানসিক রোগের কাতারে ফেলি না এবং কেউ এটায় আক্রান্ত হলে তার যে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার প্রয়োজন সেটা জানিই না। এটাতো সত্যি, হাত ভাঙলে, প্রচণ্ড মাথা ব্যথা করলে বা অনবরত কাশি হলেও আমরা আমাদের প্রিয়জনদের ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায় বা তাঁর প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করি, কিন্তু সাধারণত যারা কোনো মানসিক রোগে ভুগে তাদের ক্ষেত্রে আমরা তেমন কোনো উদ্যোগ নিইনা। বরং মানসিক সমস্যায় আক্রান্তদের আমরা না বুঝেই তাদের সাথে যথোপযুক্ত ব্যবহার করি না, এমন কি মাঝে মধ্যে তাদের ব্যবহারে আমরা প্রায়শ বিরক্তি প্রকাশ করি এবং এ বিষয়ে বাজে মন্তব্য করি।
আমার মা সবসময়ই একজন মেধাবী ও শানিত মহিলা ছিলেন এবং যখন তিনি নিজে নিজেই বুঝতে পারলেন তাঁর এই অসুখ সম্পর্কে, তখন তিনি একপ্রকার মাঠে নেমে পড়লেন এবং এই মানসিক অসুখ সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করার কাজে লেগে যান। অনেক আসরে, অনেক জায়গাই, অনেক বক্তৃতাই তিনি এ বিষয়ে কথা বলেছেন। আমি যখন তাঁর পাশে থাকি, তখনো আমাদের অনেক আলোচনায় এ বিষয়টা উঠে আসতো। ২০১০ সালে ' চেঞ্জিং মাই মাইন্ড' নামে তিনি তাঁর স্মৃতিকথা বের করেন। বইটি সত্যিই ছিল চমৎকার। এই বইতে তিনি তাঁর সেই দুঃসহ মানসিক অবস্থা ও সময়ের কথা তুলে ধরেছেন। তাঁর এই গ্রন্থের একটা অন্যতম প্রধান বার্তা হচ্ছে, আমাদের মানসিক সমস্যার বিষয়গুলি যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে ও গঠনমূলক উপায়ে আলোচনা করা উচিৎ। সত্তরের দশকে মা যখন এ সমস্যায় ভুগছিলেন, তখন দুঃখজনকভাবে এ বিষয়ে আমাদের কারো জ্ঞান ছিলো না। আমি বিশ্বাস করি, সেই সময়টায় যদি তাঁর এই সমস্যাটার কথা জানা যেত এবং সেটা প্রতিকার করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হতো, তাহলে সেই বছরগুলোতে একজন কম বয়স্ক মা এবং স্ত্রী হিসেবে তিনি যে খারাপ সময় পার করেছেন, তা করতে হতো না।
কিন্তু এটার পরোতো বাবা-মা'র বয়সের যে ত্রিশ বছরের ব্যবধান ছিলো সেটাওতো তাঁদের সম্পর্কের টানাপোড়নের ক্ষেত্রে আনতে হবে। আসলে এই বয়সের ফারাকের সমস্যাটা ডিঙ্গানোটা খুব সহজ ছিলো না। ১৯৬৭ সালে তাহিতি বিচে আমার বাবাকে প্রথম দেখায় হয়তো আমার মা বাবার ব্যক্তিত্বের প্রতি মুগ্ধ হয়েছিলেন, কয়েক বছর পর তাঁদের আবার দেখা হলে হয়তো আমার বাবা আমার মায়ের সৌন্দর্য আর মিষ্টি চাহনিতে প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবতা খুঁড়ে খুঁড়ে হলেও তাঁর গন্তব্যে পৌঁছবে এটাই সত্য, আর এই বাস্তবতার গন্তব্য ছিলো আমাদের তিন ভাইয়ের জীবন। সত্যটা ছিলো, আমার মা মাঝে মাঝেই বাবাকে 'অস্থির চিত্তের সেকেলে লোক' মনে করতেন। কিন্তু আমার মা-বাবার যখন বিয়ে হয়, সে সময়ের আমার বাবা মানুষের সামাজিক মুক্তির এক অগ্রদূত বলে বিবেচিত হচ্ছিলেন, কিন্তু নিজের জীবনে অর্থাৎ নিজের বিবাহিত জীবনে তাঁর স্ত্রীর প্রতি তাঁর ব্যবহারে সেই ছোটবেলায় তাঁর মনোজগতে যে প্রথাগত ধারণা গেঁথে গিয়েছিল সেখান থেকে তিনি বের হতে পারেন নি।
অন্যদিকে আমার মা ছিলেন আমার বাবার বিপরীত। তিনি প্রথাগত বিধিনিষেধ থেকে অনেক এগিয়ে ছিলেন। তাঁর সম্পর্কে সহজভাবে বলতে গেলে বলতে হয় তিনি ছিলেন কিছুটা হিপ্পি টাইপের, যারা সমাজের সব বাঁধা ও সীমাবদ্ধতা ভাঙতে চেয়েছিলেন, এমনকি তাঁর স্বামীও যেগুলোকে প্রথাগত রীতি-নীতি হিসেবে সম্মান জানতেন সেগুলোকেও। নিজের মানসিক আদর্শের প্রতি তাঁর যে অঙ্গিকার এবং ২৪ সাসেস্কে এর কানাডার সরকারী প্রধানমন্ত্রী বাসভবনের খাঁচায় বন্দী পাখির মত জীবন কাটানোর যে ছটফটে যন্ত্রণা সেটা তিনি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না। মার্গারেট তাঁর গ্রন্থ 'চেঞ্জিং মাই মাইন্ড' এ লিখেছেন, "গোটা পৃথিবীর মানুষ মনে করে, পিয়েরে এমন একজন মানুষ যে বেশীরভাগ সময় আনন্দ-ফুর্তি বা ব্যালে নাচ নিয়ে ব্যস্ত থাকে। কিন্তু তাঁর আসল ব্যস্ততা ছিলো তাঁর কাজ - ঘণ্টার পর ঘণ্টা সে কাজের মধ্যে ডুবে থাকতো। সরকারি অনুষ্ঠান ছাড়া সে কখনো কোনো থিয়েটার বা কোনো ব্যালেতে যেত না। তাঁর জন্য এই ধরনের জীবনটা সুন্দর ও স্বাভাবিক ছিলো......কিন্তু আমার জন্য এটা যথেষ্ট ছিলো না ; আমি আরো কিছু চাইতাম, একটু খেলতে আর একটু মুক্তির স্বাদ নিতে।"
এছাড়াও আরো সমস্যা ছিলো। এগুলোর প্রধানতম ছিলো তাঁদের দু'জনের ধর্মীয় ব্যবধান। আমার বাবা ছিলেন এক একনিষ্ঠ ক্যাথলিক, আর মা যদিও এংলিকান ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে বড় হয়েছিলেন কিন্তু তাঁর মধ্যে সেই ধর্মীয় বিশ্বাস বা চর্চা একেবারেই ছিলো না বরং ষাটের দশকে মুক্তচিন্তার অন্যদের মত তিনি বৌদ্ধ ধর্মের দিকে ঝুঁকেছিলেন। ধর্ম কেনো মানুষের সবকিছু এমনকি চিন্তাকেও গ্রাস করবে সেটা তিনি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারতেন না। আমার সাথে এক কথোপকথনে তিনি এক সময় বলেছিলেন, "এই যে ধর্মের রীতি নীতির বাইরে আমরা চিন্তা করলেও যে সেটা পাপ বলে গণ্য হবে, এটার কোনো মানে হয় না। মানুষের ব্যক্তিগত জীবন ও চিন্তায় ধর্মের এই যে আধিপত্য তা কখনো সুস্থ হতে পারে না"। এ ব্যাপারটা তাঁকে খুবই বাজে মনে হতো।
বর্তমান সময়ে বাবা-মা'র বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে আমার ধারণাটা হচ্ছে, তাঁদের এ বিষয় নিয়ে যেসব গল্প বাজারে চালু ছিলো তা নিছক অতিরঞ্জিত। কারণ আমার বাবা ওমন প্রাচীনপন্থী কখনোই ছিলেন না আর আমার মাকে অনেকেই যেভাবে চিত্রিত করেছেন মা ঠিক ও ধরনের বেপরোয়া কখনোই ছিলেন না। আসলে দম্পতি হিসেবে বাবা-মা'র বিষয়টা খুর সহজ ও স্বাভাবিক ছিল না। তারপরও আমি সেই সব সুন্দর মনের মানুষদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাই যারা আমার বাবা-মা'র দাম্পত্য জীবন নিয়ে ফিসফাস বা অতিরঞ্জিত কাহিনী তৈরি না করে বরং বিবেকবান মানুষের মত মন্তব্য করেছেন যে, একজন ঠাণ্ডা ও কাজ পাগল পুরুষ ও একজন সদা উৎফুল্ল লাস্যময়ী কম বয়সী মেয়ের মধ্যে যে বন্ধন তৈরি হয়েছিল তা প্রকৃতিগতভাবেই বৈরী ছিল আর সে কারণেই তাঁদের বিয়েটা টিকেনি।
(চলবে)
আপনার মন্তব্য