জফির সেতুর হিজলের রং লাল: মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর চেতনার মিছিল

 প্রকাশিত: ২০১৭-০৩-৩১ ১৮:৩৮:৩৭

বিজিৎ দেব :

ঔপন্যাসিক জফির সেতু ( জন্ম. ১৯৭১) মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা এবং যুদ্ধ-উত্তর  অস্তিত্বকে তুলে ধরেছেন তাঁর মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস হিজলের রং লাল-এর  মাধ্যমে। বাংলাদেশের সাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রেক্ষাপট নিয়ে অনেক উপন্যাস সৃজিত হয়েছে। প্রায় সবারই দৃষ্টিকোণ এক।  মুক্তিযুদ্ধ বিষয়-অনুষঙ্গ। কিন্তু ব্যতিক্রম ধারার সৃজন পাই আমরা জফির সেতুর উপন্যাসে।

বাংলাদেশ এবং বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশের দীর্ঘ পথপরিক্রমায় আমাদের মহান স্বাধীনতার গৌরব-উজ্জ্বল স্মৃতির মিনার মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে স্বগৌরবে। এই গৌরবের বিস্তৃতিরেখা অনেক প্রশস্ত। মহান মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর ইতিহাস সুদীর্ঘ কালের বাঙালির আন্দোলন-সংগ্রামের ফসল। মুক্তিযুদ্ধেও পূর্বাপর বলে একটি নিমোর্হ এবং গভীর নিরাসক্তিবাদ চেতনা আমাদের খুঁজে বেড়ায়।  তা আমরা জফির সেতুর হিজলের রং লাল উপন্যাসে আমরা পাই। এজন্য বোধকরি লেখকের একটি দীর্ঘ জার্নি আছে। এই জার্নিজ্ঞান মূলত শূন্যতা থেকে তাঁকে তাড়া করেছে। আমরা বর্তমান কাল-অবধি জফির সেতুর মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক উপন্যাসসত্তায়ÑÑ মুক্তিযুদ্ধের সত্তাকে খুঁজে পাই এমনকি ভবিষ্যৎ স্বপ্ন এবং বিশ্বাসের গতিক্রমনীয় ঘূর্ণন পাই। যেগুলো চর্যিত হওয়ার নেপথ্য রস- দেশপ্রেমের খাঁটি নির্যাস বুকে আপন করে নেয়ার বাস্তবতা। যেমন উপন্যাসের প্রথম স্তবক : ‘ আশ্বিনের সূর্যাস্তবেলায় সাদা কাশগুচ্ছের ওপর বিচ্ছুরিত রং পিয়াইনের পানিতে আগুন ধরিয়ে দিলে বাব বিড়বিড় কওে বলেছিলেন, ‘ এই বংশে এক মেয়ে হবে তোমার ঔরসে। ওর নাম হবে অগ্নি। আগুনের মতো গায়ের রং- তাই অগ্নি।’ ( হিজলের রং লাল : পৃ. ৭)

 মন এবং হৃদয়ের যোগ না হলে ভাষাও সর্বজনীন হয় না। তেমনি কাহিনি এবং চরিত্র সংস্থাপনও। হিজলের রং লাল উপন্যাসের কাহিনি একরৈখিক নয়। যুদ্ধ শুধু শত্রু-মিত্রের খেলার মধ্যে সীমাব্ধ না থেকে যুদ্ধে অনেক কিছু হয়। কিছু হওয়ার দার্শনিক মূল্যবোধসহ এতে আছে পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার তুমুল দ্বন্ধ! এই দ্বন্ধের সারসত্তা জফির সেতুর এই উপন্যাসে বিভিন্নভাবে উপস্থাপিত।  তাঁর উপন্যাসের আবরণে পাঠকের জন্য অশ্রু এবং শোকের পাশাপাশি সাহসী ও অসাম্প্রদায়িক গীতল সুর তুলেছেন। যা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে করেছে সুদূরপ্রসারী ভাব-প্রভাবক। কারণ মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের জীবনের সাথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ত্যাগ,  সামরিক বেসামরিক যোদ্ধাসহ সাধারণ জনগণের ত্যাগ এবং একাত্মতা ব্যতীত আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশের গৌরব-উজ্জ্বল ঠিকানা নির্মাণ আদৌ সম্ভব ছিলনা। ঔপন্যাসিক খুব সাহসের সাথে রাজাকার আল-বদরের অবস্থান তাঁর উপন্যাসশিল্পে তুলে ধরেছেন। এতেকরে  প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের  চেতনায় অসাম্প্রদায়িক সাম্যবাদী সমাজ নির্মাণের মিছিলের ভাষাকে নতুন সৃজনে দীর্ঘায়িত করেছেন।

১৯৪৭ সালের দেশবিভাগের যন্ত্রণা আজও মনে রাখার মতন ঘটনা। পাকিস্তান নামক একটি কৃত্রিম অন্ধরাষ্ট্রের জন্ম আমাদের আকাশে মোটেও সুখকর ছিলনা। বস্তুত জন্মের পর থেকেই তাদের অন্যায় খড়গ আমাদের জীবনকে তিতিয়ে তোলে। প্রথমেই পাকিস্তানিদের ভাষিক আক্রমণ দুর্বিসহ অবস্থায় ফেলে দেয়। এর  প্রেক্ষিতে ১৯৪৮ সালের ভাষা আন্দোলনে ভাষাবোধের মানচিত্র আসে অনেক রক্তস্রোতের বিনিময়ে। তারপরে শুরু হয় বাঙালির স্বাধীকার আন্দোলনের লড়াই। চলে আইয়ূবী অন্যায়-অত্যাচার। সংগঠিত হয়  ৬ দফা আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান। এবং ১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচন। এখানে পরাজিত পাকিস্তান বাহিনি অপকর্মে তাদের অন্যায় হাত প্রসারিত কওে বাঙালি নিরীহ জনতার ওপর।  নিয়াজী এবং তার সেনাবাহিনি ও এদেশীয় রাজাকার-সহযোগে নিরীহ জনতার ওপর অমানবিক অত্যাচার, নারী ধর্ষণ, গণহত্যা এবং লুটপাট করে। যা কোনও যুদ্ধের ইতিহাসে এমন পরিস্থিতি পাওয়া বিরল। অবশেষে নিয়াজীর আত্মসমর্পণে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম। কিন্তু যুদ্ধপরবর্তী শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে সূচিত হয় নির্মম কালো ইতিহাসের। ফলত রাজাকারের সংস্থাপন এবং তাদের বীরদর্পে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং রাজনীতির ময়দানে প্রভুত্ব অর্জন স্বাধীনতার পতাকাকে করে ভূলুণ্ঠিত। বর্তমান কালেও মুখোশধারী প্রগতিশীলতার লেবাসধারী স্বার্থকা-ারী কতিপয় ব্যক্তিবর্গ নিজ-স্বার্থসিদ্ধি করছে। কিন্তু যুদ্ধাপরাধ বিরোধী আন্দোলন ‘হালের গণজাগরণ মঞ্চ’ এবং পরিপ্রেক্ষিত অনেক ঘটনা তরুণদের মনে চেতনার জন্ম দিয়েছে। এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়-অনুষঙ্গ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বোঝতে ও জানতে জফির সেতুর মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস পাঠের বিকল্প নেই।  আমাদের চেতনার সদর দরজা দিয়ে  সহজেই প্রবেশ করিয়ে নেয় তাঁর উপন্যাসের চেতনার অভিব্যক্তি।

হিজলের রং লাল  উপন্যাসের কাহিনি বিস্তার লাভ করেছে প্রথমে মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর ঘনাকে কেন্দ্র করে। উপন্যাসে মুক্তিযোদ্ধা চরিত্র ছিদেক আলী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন। যুদ্ধপরবর্তী সময়ে অনেক রাজাকার বীরদর্পে স্থানীয় এবং জাতীয় রাজনীতিতে মুখোশ পরে ক্ষমতার কেন্দ্রে বসে। সুনামগঞ্জের রাধানগর গ্রামে পরিচিত মঙ্গাই রাজাকার যে বর্তমানে এলাকার মতে কসাই নামে পরিচিত। মঙ্গাই ‘হাজী’ হয় স্বাধীনতার পর। সে রাধানগর গ্রামের পাঁচশত হিন্দুকে গরু খাইয়ে কলমা পড়িয়ে মুসলমান করেছিল একাত্তরে। তার পুত্র চেয়ারম্যান। নাম আবু চেয়ারম্যান। নির্বাচনে আওয়ামীলীগের হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। মুক্তিযোদ্ধা ছিদেক আলীর কাছে ভোট চাইতে আসলে তিনি পরিষ্কার বললেন-

 ‘হুনো ভাতিজা,  তোমরা লগে নিজামির কুনো পার্থক্য নাই। তোমরা কুয়ারির পাথর তুলা লাগি আর জাগা দখল করার লাগি রাজনীতি করো। আমরা কিতা বুঝিনানি? হাসিনায়ও বুঝইন। কিন্তু করার কিতা  আছে। লুম বাছলে কম্বল পাওয়া যাইত নায়। ... তোমার রাজাকার বাপওরে জিকার করিও, ওউ গাঁউ থাকি ঊনিশ মানুষ মুক্তিযুদ্ধত গেছিল।’ ( হিজলের রং লাল : পৃ. ১৪)
 
ঔপন্যাসিক জফির সেতু স্বাধীনতা-উত্তর বাস্তবচিত্র অংকন করেছেন মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ও চেতনাকে নিয়ে। ১৯৭১-এর পর শহীদ জননী জাহানার ইমাম যুদ্ধাপরাধ বিচারের দাবিতে গণ-আন্দোলন গড়ে তোলেন, এজন্য তখন তাঁকে কারাবরণও করতে হয়। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে রাজাকারের তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেন। এই রাজাকারদেও তালিকা প্রস্তুতে মুক্তিযোদ্ধা ছিদেক আলীর পুত্র শিহাব মাস্টার জড়িত হন। এতে করে কসাই রাজাকার মঙ্গাই এবং তার পুত্র শিহাবকে অনেক বোঝায়। কিন্তু শিহাব চেতনা থেকে দূরে সরে যান নি। ঔপন্যাসিক বাঙালির শৌর্য এবং বীর্যের ধারাপাতের শক্তিশালী মাধ্যমকে তাঁর উপন্যাসে ব্যবহার করেছেন। হাজার হাজার বছরের লালিত বাঙালির মূল্যবোধ এবং চেতনাকে তিনি দেখছেন অসাম্প্রদায়িক চেতনা থেকে। যেখানে শক্তি এবং সাম্যবাদের চেতনাই আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধেও মৌলচেতনার ভিত্তি এই বিষয় জফির সেতু তাঁর উপন্যাসে বরাবর প্রকাশ করেছেন। আমরা তাঁর উপন্যাসে দেখতে পাই দরবেশ রাজাকার এবং সাচ্চু রাজাকার গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনে বিরূপ মন্তব্য করে মুক্তিযোদ্ধা শিহাব মাস্টারকে। বলে সবাই কিতা মালাউন হইগেছে নি। কিন্তু শিহাব মাস্টার এর জোর প্রতিবাদ জানান।  এর জন্য শিহাব মাস্টারকে মৃত্যুর মুখে পতিত হতে হয়। একদিন শিহাবের লাশ পাওয়া যায় ঘরের মধ্যে দড়িতে ঝুলন্ত। ঔপন্যাসিক এই মৃত্যুর  রহস্য রেখে গেছেন। কিন্তু কারণ ছাড়া কোন কার্য সংগঠিত হবে না, তা-ই সত্য। শিহাবকে খুন কওে রাজাকারের দোসরা। কারণ শিহাব গণজাগরণ মঞ্চের একনিষ্ঠ কর্মি ছিলেন এবং রাজাকোরের তালিকাও করেছিলেন। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে বিশ^বিদ্যালয়ে পড়–য়া তার মেয়ে অগ্নি আসেন। পোস্টমর্টেমের জন্য হাসপাতালে নেয়া হয়। এখানেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় পড়তে হয় শিহাবের লাশ। মুক্তিযোদ্ধা ছিদেক আলীর পুত্রশোকের বিলাপের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং মিছিলের জানান দেন ঔপন্যাসিক।

উপন্যাসের অগ্নি, নবীন, এবং শিহাব মাস্টার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগরণের প্রতীক। অগ্নি ছোট বেলায় তার দাদা ছিদেক আলী এবং তার বাব শিহাব মাস্টারের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনেছিল। গেরিলা যুদ্ধ, সম্মুখ যুদ্ধ এবং আপামর জনতার সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়ার কথা। সিলেট অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধেও সামগ্রিক যুদ্ধকথা হিজলের রং লাল উপন্যাসে চিত্রায়িত করেছেন। এই চিত্রায়নে আছে মুক্তিযুদ্ধের দার্শনিক প্রত্যয় এবং সাহিত্যিক মূল্যবোধ।

যুদ্ধ এখনও চলছে। এর শেষ কি হবে। প্রগতির সাথে প্রতিক্রিয়াশীলের যুদ্ধ। যতদিন পর্যন্ত এই সমাজ থেকে পাকিস্তানের দোসরদের শেকড় উপড়ে ফেলা না হবে ততদিন এই যুদ্ধের অবসান হবে না।  অগ্নির বাবা শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে একটি ডায়েরি পেিেছলেন। এবং সেটাতে তিনি অগ্নিকে উদ্দেশ্য করে ডায়েরি পাতা সোনা ঝরিয়েছিলেন। আজ মৃত বাবার ডায়েরি খুলতেই অগ্নি দেখতে পায় বাবার লেখা, যুদ্ধ চলছেই-

‘ আমায় নিয়ে কি তুমি উদ্বিগ্ন, অগ্নি? উদ্বিগ্ন হয়ো না। আমার বিরুদ্ধে যেটাই রটনা হউক না-কেন আমি তো জানি, আমি কী। এও জানি, মানুষ সকল সময় লড়ে যায় অমানুষের বিরুদ্ধেই! একাত্তরে দেশীয় যে পশুরা আমাদেও পূর্বসূরিদেও হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল, তারা আবার নতুন করে  মাঠে নেমেছে। এর লড়াই চলবে।’  ( হিজলের রং লাল : পৃ.  ৮৭ )

বাবার স্মৃতি বুকে নেয় অগ্নি। এই স্মৃতি শোকের অশ্রু বর্ষণ করে না। বরং নতুন করে যুদ্ধে আবাহনের মন্ত্র দেয়। শিহাব মাস্টার  অনুপ্রেরণার স্থল হয় লক্ষকোটি অগ্নির বুকের রক্তরাগ। অগ্নি তার বাবার মতোই বুঝতে থাকে একাত্তরের মতন আরেকদফা বুদ্ধিজীবী নিধন শুরু হয়েছে। নতুন প্রজন্মকে এই পিশাচদের বিরুদ্ধে জাগতে হবে। কারণ জাতির পতাকা যাতে খামছে না ধরতে পাওে পুরোনো শকুন। মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস বাংলাদেশের সাহিত্যে অনেক ক্ষেত্রেই মহাকাব্যেরও বিস্তার। আহমদ ছফা যখন বলেন- ‘ ইতিহাসে কোন কোন সময় আসে যখন এক একটা মিনিটের ব্যাপ্তি, গভীরতা এবং ঘনত্ব হাজার বছরকে ছাড়িয়ে যায়। আমাদের জীবনে একাত্তর সাল  সে রকম।...চোখ বুজে একাত্তরের কথা চিন্তা করলে আমার কানে মহাসিন্ধুর কল্লোল ধ্বনিত প্রতিধ্বনিত থাকে।’ বাঙালি জাতিসত্তার এই দাগ একজন কবি, ঔপন্যাসিককে আলোড়িত করবে না; তা কখনও হয় না। জফির সেতুর জীবন-জিজ্ঞাসার অন্তহীন ধ্বনিতে অনুরণিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। তা আবডালে থেকে নয়। মগডালেও নয়। সমস্ত বিষয় তাঁর জানা-শুনা এবং নিজের সাথে বোঝা-পড়ার মধ্য দিয়ে বিকশিত হয়েছে উপন্যাসের মাত্রা। ফলত পেয়েছি তাঁর হৃদয় ও প্রেমের যোগ- ‘ হিজলের রং লাল’ উপন্যাসে। কারণ ‘ মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে ঔপন্যাসিক দেশভাগের শিকার উদবাস্তু চার পুরুষের একটি পরিবারের এমন একটি মর্মন্তুদ আখ্যান নির্মাণ করেছেন যা মানবিক সংকটে পূর্ণ, সে অর্থে অস্তিত্ব সংগ্রামেরও কাহিনী।... মুক্তিযুদ্ধের পর আরও এক রক্তাক্ত যুদ্ধের সমান্তরাল কাহিী। যে-যুদ্ধ দৃশ্যের ভেতরে ও দৃশ্যেও বাইরে, আজকের বাংলাদেশ...’ ।

কবি ও ঔপন্যাসিক জফির সেতু নিজে লালন করেন প্রগতির চিন্তা। তিনি বিশ্বদ্যিালয়ের শিক্ষক। তাই উপন্যাসে শিক্ষকের ভূমিকা এসেছে। তা দোষের  নয়। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর চাচারা যুদ্ধে গেরিলা যোদ্ধা হিসেবে যুদ্ধ করেছেন।

হিজলের রং লাল উপন্যাসে ভাষার বুননে হালকা চালের শব্দের প্রয়োগে ব্যক্ত করেছেন গভীর কথামঞ্জরি। যেগুলো সময়ের সারথি। একজন লেখকের সবচেয়ে বড় দায় সমকালকে ধরা। জফির সেতু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে আজকের বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট দেখেছেন ভবিষ্যৎ যাত্রার মধ্য দিয়ে।
 
হিজলের রং লাল
জফির সেতু
প্রথম প্রকাশ : আগস্ট ২০১৬
প্রকাশক : বেহুলাবাংলা
পৃ. ৮৮, মূল্য : ১৩৫

আপনার মন্তব্য