অনুভব আহমেদের বিস্মৃতির কোলাজ ও অন্যান্য

 প্রকাশিত: ২০১৭-০৫-০৩ ১৪:০৮:২৬

চিত্রকর: লিবি মিলস

অনুভব আহমেদ:

১. বিস্মৃতির কোলাজ

অনেক খুঁজেছি!
কোথাও পাইনি!
জলের বুকে আঁচড় কেটে ক্লান্ত
এবার ফিরতে হবে
ভাঙা কবিতার গুঞ্জন নিয়ে থেমে যায় সমস্ত নীরবতা
কার্ণিশে বিস্মৃতির অতলান্ত কোলাজ!

কাল অবধি যাকে চিনতাম আজ আর তাকে চিনতে না পারলে অবাক হইনা
সেই নাম লিখে দিই ঝরা পাতার বুকে
নিরুদ্দেশের কোল ঘেষে উড়িয়ে দিই কালো ডানার প্রজাপতি
আমার ভেতর প্রতিটি আমিই একা!

সিগন্যালে দাঁড়ানো সন্ধ্যার
বিষাদ সংলাপে
তোমাকে ভাবিনা আর
অনন্ত ইথারে ছুঁড়ে দেই সিগারেটের
বেওয়ারিশ ধোঁয়া; আঙুলের দীর্ঘশ্বাস!
একদিন ঠিক ভুলে যাবো
কে কাকে কী নামে ডাকতাম
কার অগোছালো হাতে নেমেছে রাত!
তোমার পুরো বসত ঘিরে
শব্দের মেটাফোরিক বিন্যাস
যা শুনিনি আমি, যা বলোনি তুমি
বলবে এসো
এসো
দাঁড়াবে এখানে
কবরের পাশে
আলোর পাশে
অন্ধকারের পাশে
জীবনের পাশে
শেষ বলে-বলে দিয়ে যাবে নতুন শুরু!

২. মৃন্ময় সুখ

একটা রাত কাটিয়ে যেও শিয়রে
দেখবে কী অনাদরে নিঃশ্বাস পরে থাকে পোষা বালিশে
খসে যাওয়া তারার খোসায় চাওয়ার জীবাশ্ম আগলে রাখা দৃশ্যপটকেও
কী অমূলক, অসহায় দেখায়
দেখবে তুমি-
এই অন্ধকারে রোজ মৃত্যু নিয়ে দাঁড়িয়েছি আমি
দরোজায় হাইড এন্ড সী খেলায় নিজের ভেতর ডুবে গেছে যে
তাকে কোনোদিন ডাকেনি কেউ
তাকে ফিরিয়ে দিয়েছে মৃণ্ময় সুখ
তোমার জন্য লিখে রেখেছে সে চিরহরিৎ জীবন
পেতে দিয়েছে পর্নমোচি বুক নিরাকার
তার হৃদপিন্ড থেকেই খসে খসে পরেছে প্রতিরোধের প্লাস্টার
তোমাকে ভালোবেসে আজ তার ভীষণ অসুখ
তুমি এসে তাকে দেখে যেও একবার।

৩. বিস্মৃতির নিরালা ক্ষণ

রাতের বুকে মাথা রেখে আমি অন্ধকারকে শুনি।
ভেতরে ছটফট করে কর্পোরেট হুলস্থুল,তুমি।
মন্থর পায়ে বুকের সিঁড়ি ভাঙা এইসব রাতে বৃষ্টি হয় খুব।
জানালার চোখ নিয়ে যায় দূর
স্মৃতির জলাবদ্ধতা সাঁতরে ফিরতে আমার খুব ক্লান্ত লাগে, জানো!

ভালোবাসার অবাধ্য অন্ধকার এসে জড়ো হয়
এখানে তুমি নেই
তোমার শহর
সময় থেকে অনেক দূর
আমার খুব ঘুমিয়ে পড়তে ইচ্ছে করে
অসংখ্য বিস্মৃতির নিরালা ঘরে জেগে থাকা তোমাকে
অন্ধকারের দেয়াল এঁকে মুছে ফেলতে ইচ্ছে করে।

অথচ, তুমি গ্রাস করেছো ধমনীতে ছুটে বেড়ানো রক্তস্রোত
দিয়েছো হাড়ের ভেতর জমাট মৃত্যু ছিমছাম পরিপাটি বিশৃংখলা।

আপনার মন্তব্য