সুকান্ত পার্থিবের ৪ কবিতা

 প্রকাশিত: ২০১৮-০৫-২৯ ১৫:৫৫:১১

 আপডেট: ২০১৮-০৫-২৯ ১৬:২৩:১৮

সুকান্ত পার্থিব:

অন্বেষণ
এই নগরে নিরুপম মানুষ খুঁজছে
প্রায় দুই দশক ধরে...
মানুষী পোশাকের গন্ধ রাস্তাঘাট জুড়ে
তবে সে মানুষ পায় নি কখনো!

তিলোত্তমা নগরীর উদ্যানে-ময়দানে দেখেছে
প্লাইস্টোসিন যুগের বিবর্তিত মানুষের আধুনিক অবয়ব,
তবে সেখানেও টের পেয়েছে আফ্রিকার মাংসাশী প্রাণির হিংস্রতার প্রতিচ্ছায়া!
সুযোগের সন্ধানে যারা অপেক্ষা করে
মৃত্যুনাশী ছোবলের...

জীবনভর মানুষ দেখছে নিরুপম;
খুব চেনা মানুষ, খুব কাছের মানুষ!
যারা সময়ের আবর্তনে ধুতরোফল হয়ে
দুর্দিনের দুর্গে নেমে আসে বুকেপিঠে সমরাস্ত্রের বেশে...


নিষেধাজ্ঞা
অনিমেষ চোখে প্রেয়সীর মুখে দেখি বৈশাখের বজ্রপাত
হালখাতার হিসাব-নিকাশে বেঁচে থাকে হিংসার জলপ্রপাত
মৃদুমন্দ হাওয়ায় গন্তব্যে ছুটে পালতোলা নৌকার গতিপথ
জীবিকার মূল্য নির্ধারণে বালুচরে চাপা পড়ে ফণিমনসার  বিবেকবোধ
অভাবের তাড়নায় বিপন্ন পাললিক সভ্যতার নিদর্শন
ধাতবীয় মুদ্রার বিনিময়ে জীবন সঁপে চিতার আয়োজন


১ মে
একমুঠো সজীব ঘাসে লুকে থাকা
শিশিরের স্বপ্ন এখনো ছুঁতে পারি নি!
সোনালী পাটের আঁশজুড়ে বজ্রপাতের নীল ক্ষত
নিথর দেহে এঁকে দেয় মসলিনের কারুকার্য

নদীয়া ভুলে যায়নি নীলকরের পেয়াদার
পাঁজরের আঘাত! বিষণ্ণ মুখগুলো কারখানায়,
চা-বাগানে, কয়লাখনিতে নিজেদের বুক খুঁড়ে
মণিমুক্তা বিলিয়ে যায় নিষ্পেষণ-নিপীড়নে

ইতিহাস বঞ্চিতের রক্তে লিখে রাখে প্রভুদের নাম
পৃথিবীর ঘুম ভাঙাবে একদিন মেহনতির তপ্ত ঘাম


সূর্যাস্ত
ভাঙ্গনের সুরে আবেগতাড়িত ব্যথিত হৃদয়
রোদেলা বিকেলে ফ্যাঁকাসে অস্তগামী সূর্যের আধো ঝলমল আলোকে শেষ ঠিকানা খুঁজে ফেরে...

আজকের সূর্যাস্তে তাই জানালাম তোমায় বিদায়
আমার আলোয় আঁধার নেমেছে নগরীর সব রাস্তায়
সব পথ মিশে গেছে কোলাহল-শূন্যতায়
গগনবিদারী আর্তনাদ ধেয়ে আসে জীবিকার পরাধীনতায়...

আপনার মন্তব্য