‘বইমেলায় সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক বই প্রকাশ করা যাবে না’

 প্রকাশিত: ২০১৮-০১-৩০ ১৬:৪০:৩০

সিলেটটুডে ডেস্ক:

বইমেলায় ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক চেতনায় আঘাত করে এমন কোন বই প্রকাশকরা বইমেলায় আনতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।

মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে বইমেলায় ডিএমপি কর্তৃক গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন করতে গিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্থাপিত অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোল রুমের সামনে সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন ডিএমপি কমিশনার।

তিনি বলেন, ‘লেখক প্রকাশকদের অনুরোধ জানিয়েছি সাম্প্রদায়িক উসকানি দিতে পারে বা ধর্মীয় আবেগে আঘাত দিতে পারে এমন বই বাজারজাত করবেন না। আমাদের গোয়েন্দারা রয়েছে, বাংলা একাডেমির কর্তৃপক্ষ রয়েছে। বাংলা একাডেমির অধীনে একটি ডেডিকেটেড কমিটি করা রয়েছে এগুলো খবরাখবর রাখতে। যখনই আমাদের কাছে এ ধরনের কোনও খবর আসবে কমিটি এগুলো যাচাইবাছাই করে দেখবে। যদি তেমন কিছু থাকে তাহলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তথ্য প্রযুক্তি আইন রয়েছে, দণ্ডবিধি রয়েছে, বিশেষ ক্ষমতা আইন রয়েছে। অপরাধের ধরন অনুযায়ী যেখানে যে আইন প্রযোজ্য সে আইনেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রসঙ্গে ডিএমপি কমিশনার বলেন, বইমেলার ভেতরে ও বাহিরে পর্যাপ্ত সংখ্যক সাদা পোষাকে ও ইউনিফর্মে পুলিশ ডিউটিতে নিয়োজিত থাকবে। স্ট্যান্ডবাই থাকবে সোয়াট, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড। মেলার প্রাঙ্গণ ডগ স্কোয়াড ও এসবি দিয়ে সুইপিং করানো হবে। শাহবাগ, বকশি বাজার, নীলক্ষেত ও দোয়েল চত্বর ঘিরে থাকবে পুলিশে বহিঃবেষ্টনী নিরাপত্তা বলয়। বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে থাকবে আন্তঃবেষ্টনী নিরাপত্তা ব্যবস্থা। উভয় বই মেলা চত্বর সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে। কন্ট্রোল রুম থেকে মেলার ভিতরে ও চারপাশে সার্বক্ষণিক সিসিটিভি দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হবে। ইভটিজিং, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা , ছিনতাই ও পকেটমার প্রতিরোধে কাজ করবে পুলিশের বিশেষ টিম।

তিনি বলেন, নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা প্রদানে বইমেলাকে ঘিরে রয়েছে একাধিক ওয়াচ টাওয়ার। যেখান থেকে সার্বক্ষণিক একজন পুলিশ সদস্য দূরবীন দিয়ে দর্শনার্থীদের গতিবিধি লক্ষ্য রাখবে। অগ্নিনির্বাপণের জন্য থাকবে ফায়ার টেন্ডার ও প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা। সেই সাথে প্রতিটি বইয়ের স্টলে অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র রাখতে হবে। দোয়েল চত্বর থেকে টিএসসি চত্বর পর্যন্ত কোন গাড়ি চলাচল করতে দেয়া হবে না। শুধুমাত্র বাংলা একাডেমি কর্তৃক প্রদত্ত স্টিকারযুক্ত গাড়ি প্রবেশ করতে পারবে। এই এলাকায় কোন প্রকার হকার বা ভ্রাম্যমাণ দোকান প্রবেশ করতে পারবে না।

কমিশনার আরও বলেন- যাতে করে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য মেলায় প্রবেশ ও বাহিরের জন্য থাকবে আলাদা গেইট। প্রত্যেক দর্শনার্থীকে আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর দ্বারা তল্লাশির মাধ্যমে মেলায় প্রবেশ করতে হবে।

তিনি বলেন, যদি কোন লেখক ও প্রকাশকের বিশেষ নিরাপত্তার প্রয়োজন হয় তাহলে মেলায় স্থাপিত পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করলে তাদের নিরাপত্তা প্রদান করা হবে। যেকোনো নতুন বই মেলায় আসলে বাংলা একাডেমি তা যাচাই বাছাই করে দেখবেন। যাতে করে কোন বই ধর্মীয়, সামাজিক ও জাতীয় মূল্যবোধে আঘাত না করতে পারে।

নগরবাসীকে অনুরোধ জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, বইমেলায় কোন প্রকার ব্যাগ, ব্যাগ প্যাক, ভ্যানিটি ব্যাগ, ট্রলি ব্যাগ, দাহ্য পদার্থ, ধারালো অস্ত্র, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আসা যাবে না। প্রতিটি জায়গায় পুলিশের তল্লাশির মধ্যদিয়ে বইমেলায় প্রবেশ করতে দেয়া হবে। নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশের তল্লাশি কাজে সহযোগিতা করার জন্য নগরবাসীকে আহবান জানান ডিএমপি কমিশনার।

আপনার মন্তব্য