বইমেলায় অর্থমন্ত্রী মুহিতের চারটি নতুন বই

বইগুলো পাওয়া যাবে বইমেলার সোহরাওয়ার্দি উদ্যান অংশের সময় প্রকাশনের স্টলে

 প্রকাশিত: ২০১৫-০২-০১ ০৬:১১:২৪

 আপডেট: ২০১৭-০৮-১৬ ১৮:৪০:০৯

নিউজ ডেস্ক:

আবুল মাল আবদুল মুহিত স্বনামখ্যাত অর্থনীতিবিদ এবং বর্তমান অর্থমন্ত্রী হলেও লেখালেখিতে আছেন আগের মতোই। রয়েছে শিল্প ও সাহিত্যের প্রতি রয়েছে বিশেষ অনুরাগ। সেই সূত্রে লেখালেখির প্রতি আছে বিশেষ ঝোঁক। 
 
অমর একুশে গ্রন্থমেলা উপলক্ষে আসছে তাঁর নতুন বই। শনিবার (৩১ জানুয়ারি) জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হলো অর্থমন্ত্রীর চার গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব। সময় প্রকাশন থেকে প্রকাশিত বইগুলোর শিরোনাম হলো ‘বাংলাদেশের অভ্যুদয়’, ‘বসবাসের উপযুক্ত বাংলাদেশ চাই’, ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ এবং ‘স্মৃতির মণিকোঠায়’। 
 
অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে চারটি পৃথকভাবে আলোচনা করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কবি নূহ-উল-আলম লেলিন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম ও অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। আর গ্রন্থগুলো সম্পর্কিত আপন অনুভূতি প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সামগ্রিকভাবে চারটি বই নিয়ে আলোচনা করেন সাবেক কূটনীতিবিদ মহিউদ্দিন আহমদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সময় প্রকাশনের প্রকাশক ফরিদ আহমেদ।
 
স্মৃতির মণিকোঠায় শীর্ষক বইয়ের আলোচনা করেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, গ্রন্থটিতে অর্থমন্ত্রী আবেগকে দমন করে ভাললাগার প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন বরেণ্য ব্যক্তিত্বের মাধ্যমে সমকালকে দেখার চেষ্টা করেছেন। তাঁর দেখা আদর্শিক মানুষদের কথা বলেছেন। উঠে এসেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী ও বিশ্বখ্যাত কবি ইয়েটসের কথা। এসব বিশিষ্টজনদের উদারনৈতিক ও গণতান্ত্রিক মনোভাবকে লেখক তুলে ধরেছেন বইটিতে। সব মিলিয়ে এটি একটি প্রামাণ্য জীবনীগ্রন্থ। আর তাঁদের কাছ থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। এর মধ্যে যে মানুষগুলো হারিয়ে গেছে তাদের পুনরুজ্জীবনই এ বইয়ের উদ্দেশ্য। এখন গণতন্ত্র নিয়ে অনেক কথা বলা হয় সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্রের চর্চা করতে হলে তাঁদের জীবন ও কর্ম অনুকরণীয় হতে পারে। এ কারণেই বইটি পাঠকদের বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
 
বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ শীর্ষক গ্রন্থটি সম্পর্কে আলোকপাত করেন অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শুধু রাজনৈতিক নেতাই নয়, তিনি দেড় হাজার বছরের বাঙালীর আদর্শিক চেতনা ধারণ করেছিলেন। এ বইয়ে তিনি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা তুলে ধরেছেন। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে নিজের ঘনিষ্ঠতার কথা রয়েছে। বঙ্গবন্ধু কিভাবে মানুষের মনের অনুভূতিকে উপলব্ধি করেছেন সে বিষয়টিও উঠে এসেছে। পাশাপাশি রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বিশ্বজনমত ও প্রবাসীদের ভূমিকার কথা। 
 
অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৫ উপলক্ষে এ প্রকাশিত বসবাসের উপযুক্ত বাংলাদেশ চাই শীর্ষক গ্রন্থটির ওপর আলোচনা করেন অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত আবুল মাল আবদুল মুহিতের ১২টি সাক্ষাতকার স্থান পেয়েছে গ্রন্থটিতে। এসবের মধ্যে তিনি দেশের নানা সঙ্কট এবং তা থেকে উত্তরণের বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। দলবহির্ভূত ছাত্র রাজনীতি এবং প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেছেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়ে আছে স্পষ্ট উচ্চারণ। অর্থমন্ত্রীর ব্যক্তিগত জীবন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাঁর সৎ চিন্তা, সাবলীল জীবনযাপন এবং আবেগের বহির্প্রকাশের বৈশিষ্ট্য দেখে মনেই হয় না তিনি একজন রাজনীতিক।
 
এবারে বইমেলা উপলক্ষে প্রকাশিত বাংলাদেশের অভ্যুদয় শীর্ষক বইয়ের আলোচনায় নূহ-উল-আলম লেলিন বলেন, এই বইয়ের ১৩টি প্রবন্ধের মাধ্যমে অর্থমন্ত্রী দেশের সমকালীন নানা বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। সঙ্কীর্ণ দলীয় অনুভূতির বাইরে থেকে লেখক এ গ্রন্থটি লিখেছেন। নানা বিষয়ে দলের আত্মসমালোচনা করেছেন। দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সুশাসনের অভাব নিয়ে নিজের অভিমত ব্যক্ত করেছেন। গ্রন্থের ৮টি অধ্যায়ে তিনি বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের কথা বলেছেন এবং বাকি ৫টি প্রবন্ধে তিনি দেশের নানা সমস্যা এবং তা কাটিয়ে ওঠার বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
 
অর্থমন্ত্রীর চারটি বইয়ের ওপর সংক্ষিপ্ত আলোচনায় মহিউদ্দিন আহমদ গ্রন্থগুলোর আংশিক তথ্য বিভ্রাট এবং আঙ্গিক উপস্থাপনায় ত্রুটি নিয়ে কথা বলেন। সেই সঙ্গে বিশ্বস্ত অসংখ্য তথ্য উপস্থাপনের জন্য মন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান।
 
নিজের বইয়ে প্রকাশনা উৎসবে অর্থমন্ত্রী গ্রন্থ প্রকাশের নানা প্রেক্ষাপট তুলে ধরার পাশাপাশি দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘চলমান সহিংস আচরণের কোন উদ্দেশ্য আছে বলে আমি মনে করি না। এগুলো শতভাগ সন্ত্রাসী কার্যক্রম। আমরা একটি সম্ভাবনাময় বাংলাদেশের দিকে যতটুকু এগিয়েছিল তা কয়েকদিনের আন্দোলনে ধ্বংস করে দিয়েছে।
 
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান লেখকের স্মৃতির মণিকোঠায় ও বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ গ্রন্থ দুটির প্রশংসা করেন।
 
 
 
 
 

আপনার মন্তব্য